দুপিস ব্রেড-বাটার মানেই ডায়াবেটিসের দ্বিগুণ চান্স

ব্রেকফাস্ট হোক বা টিফিন, প্রথম পছন্দ দুপিস পাউরুটি। সঙ্গে বাটার। চটজলদি খানা। ভরছে পেট। ঝক্কি কম। কিন্তু ঝুঁকি মারাত্মক। রোজ দুপিস ব্রেড-বাটার মানেই ডায়াবেটিসের দ্বিগুণ চান্স।

Updated By: Feb 27, 2017, 06:46 PM IST
দুপিস ব্রেড-বাটার মানেই ডায়াবেটিসের দ্বিগুণ চান্স

ওয়েব ডেস্ক: ব্রেকফাস্ট হোক বা টিফিন, প্রথম পছন্দ দুপিস পাউরুটি। সঙ্গে বাটার। চটজলদি খানা। ভরছে পেট। ঝক্কি কম। কিন্তু ঝুঁকি মারাত্মক। রোজ দুপিস ব্রেড-বাটার মানেই ডায়াবেটিসের দ্বিগুণ চান্স।

আমরাই দেখিয়েছি, কীভাবে ব্রেকফাস্ট বাদ দিলে বরবাদ হচ্ছে শরীর। ব্রেকফাস্ট বাদ দিলে হার্ট বরবাদ, ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, ক্যানসার, হজমে গন্ডগোল, মাইগ্রেন, চুল পড়া, এনার্জি কমে যাওয়া, বিচ্ছিরি মেজাজ। শরীরে জাঁকিয়ে বসে এই সব সমস্যা। শরীর সুস্থ রাখতে তাই ব্রেকফাস্ট মাস্ট। কিন্তু ব্রেকফাস্টে খাবেন কী? এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। ব্রেকফাস্ট মানেই তো মাখন মাখানো ২ পিস পাউরুটি। নাহ্। বিপদ এখানেই। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বিপদবার্তা।

পাউরুটিকে ধবধবে সাদা করার জন্য ব্লিচ করা হয়। পাউরুটিতে থাকে প্রচুর নুন, সোডিয়াম, রিফাইন্ড চিনি ও প্রিজারভেটিভস। পাউরুটির মিহি ভাব শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইড ও ব্রোমাইন জাতীয় বিষাক্ত যৌগ জমা করে। মাখনে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর স্যাটুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও ট্রান্স ফ্যাট। ফলে, পাউরুটি ও মাখন, দুইয়ে মিলে অশনি সঙ্কেত। টাইপ টু ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। যার ফল ওবেসিটি। মাত্র ১০ থেকে ১২ গ্রাম মাখনই ক্ষতির জন্য যথেষ্ট। এমনটাই দাবি গবেষকদের। 

তাহলে ব্রেকফাস্টে খাবেন কী?

মাখন মাখানো পাউরুটিতে কোনও পুষ্টিকর বস্তু নেই। তার বদলে ব্রাউন পাউরুটি ও সবজি দিয়ে বানানো স্যান্ডউইচ খাওয়া যেতে পারে। বাদ দিন বড়া পাও। বদলে খান সবজি সেদ্ধ ও আটার রুটি। ভাজা বা সেঁকা, পোড়া কিছু নয়। বাদ দিন ডাল দিয়ে তৈরি মেড়ু বড়া। বদলে সম্বর দিয়ে খাওয়া যেতে পারে ইডলি। তেলে জবজবে করে ভাজা পরোটা বা আলুর পরোটা নয়। তার বদলে খাওয়া যেতে পারে রাগি, জোয়ার, বজরা দিয়ে বানানো পরোটা। পরোটায় শুধু আলু নয়, তার সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে পিঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, মটরশুঁটি, গাজর। পুরি-ভাজির বদলে খাওয়া যেতে পারে চাপাটি-ভাজি।

কচুরির বদলে খাওয়া যেতে পারে ডালিয়া। উপমা স্টাইলে ডালিয়ার খিচুড়ি খেতেও ভাল, উপকারিও। চায়ে ডুবিয়ে বিস্কুট বাদ দিন। বদলে খাওয়া যেতে পারে খাকরা ও চা। বিনস ও আটা দিয়ে বানানো খাকরা বিস্কুটের বিকল্প হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। ফ্রেঞ্চ টোস্ট নয়, বরং খাওয়া যেতে পারে উপমা। সিঙাড়া নয়, ব্রেকফাস্টে খাওয়া যেতে পারে বাড়িতে বানানো ভেজ রোল। বাঁধাকপি, গাজর, পিঁয়াজ এবং আরও নানা সবজি দিয়ে বানানো যেতে পারে এই রোল। বানাতে হবে নন-স্টিক কড়াইয়ে। ব্রেকফাস্ট মাস্ট। তবে, মাখন পাউরুটি নৈব নৈব চ।

আরও পড়ুন

পাখি শুধু আনন্দই দেয় না, আপনাকে সুস্থও রাখে বলছে গবেষণা

ব্রেকফাস্টে দুপিস মাখন মাখানো পাউরুটি। চটজলদি রেসিপি। খেতেও ভাল। ব্যস্ততার মাঝে এই রেসিপিতেই আস্থা ভাস্বতীর। নিজে তো ভালবাসেই। মেয়ে আশির্যা, স্বামী অরিজিতেরও এই ব্রেকফাস্টই পছন্দ। ডায়াবেটিসের বিপদ শুনে তো মাথায় হাত। টেনশনেই খান খান ভাস্বতী।

গানের শিক্ষিকা ভাস্বতী। স্টুডেন্ট আর নিজের ৩ বছরের ছোট্ট মেয়ে আশির্যাকে নিয়েই দিনভর ব্যস্ততা। মেয়েকে খাওয়ানো, পাশাপাশি স্টুডেন্টদের জন্য সময় দেওয়া, এই নিয়েই ২৪ ঘণ্টা কেটে যায় ভাস্বতীর।

আশির্যা এ প্রজন্মের হলেও চিপসে বিশেষ রুচি নেই। ব্রেকফাস্টের মাখন-পাউরুটিই তার বেশি পছন্দ। চটজলদি রেসিপি। তাই ব্যস্ততার মাঝে মাখন-পাউরুটিতেই আস্থা ভাস্বতীর। নিজেও পছন্দ করেন। স্বামী অরিজিতের ব্রেকফাস্টের পাতেও থাকে মাখন মাখানো পাউরুটি। কিন্তু এই ব্রেড-বাটারেই যে বিপদ। ভীষণ বিপদ। হাতছানি দিচ্ছে ডায়াবেটিস। তাহলে উপায়? ভেবে কূল পাচ্ছেন না ভাস্বতী। ছোট্ট মেয়েটা যে মাখন পাউরুটি খুব ভালবাসে।

টেনশন তো বটেই। নিয়ম করেই খেতে হবে ব্রেকফাস্ট। তবে বদলাতে হবে অভ্যাস। ব্রেকফাস্টে ব্রেড বাটার নয়।

.