শিরোনাম নেই

বারাসতের কামদানি মোড় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। মাটি ভিজে। ভেজা পাতায় জংলা গন্ধ। কনে দেখা আলোয় বাড়ি ফিরছিল অনামী অঙ্গনা। ভেড়ির গায়ে বড় পাঁচিল লুকিয়ে আছে ওরা। আর একটু...। তারপরেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছিঁড়ে, খুঁড়ে খাবে শরীরটাকে।

Updated By: Jun 12, 2013, 02:05 PM IST

যদিও সন্ধ্যা আসিছে মন্দ, মন্থরে, সব সঙ্গীত, গেছে ইঙ্গিতে থামিয়া। তবু বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর...

বারাসতের কামদানি মোড় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। মাটি ভিজে। ভেজা পাতায় জংলা গন্ধ। কনে দেখা আলোয় বাড়ি ফিরছিল অনামী অঙ্গনা। ভেড়ির গায়ে বড় পাঁচিল লুকিয়ে আছে ওরা। আর একটু...। তারপরেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছিঁড়ে, খুঁড়ে খাবে শরীরটাকে। যৌবন শরীরের উত্সব হবে আজ। ফিরছে অঙ্গনা। বাড়িতে ছোট ভাই, রাজমিস্ত্রীর জোগাড় দেওয়া বাবা। দিনে দেড়শো থেকে দুশো টাকা। অভাবের কাজল পরা চোখে এক আটপৌরে মা। ঘরের কেউ উঁচু কেলাসে পড়েনি। আমার ওই একরত্তি মেয়ে পেরেছে, ও পারবে দেখ, অনেক বড় হবে ও। পড়শিদের গলা ফুলিয়ে বলত অনামীর মা।

পাঁচিল প্রান্তে অঙ্গনা। কয়েকটা পুরুষ্ট হাত জাপটে ধরল। মুখ চোখ, টানতে টানতে ধানক্ষেত, ভেড়ি পেরিয়ে নিয়ে গেল ওকে। শিকার ধরার উল্লাস ওদের চোখে । বোবা কান্নায় দুলে উঠল ধানের ক্ষেত। কেঁপে উঠল ভেড়ির জল। সব দেখল ওরা।

রাত এখন অনেক। নির্জন ভেড়িতে শুধুই ঝিঁঝিঁর কনসার্ট। কেউ নেই এখানে। অঙ্গনার অর্ধনগ্ন শরীরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে পাক খেয়ে পড়ছে ভেড়ির হাওয়া। যত লোলুপভাবে ভোগ করা যায় নারী শরীর। সেভাবেই ক্ষিদে মিটিয়েছে ওরা। যন্ত্রণার চিহ্ণ সারা শরীর জুড়ে। মুখ তুলো গুঁজে দিয়েছে। তারপর গলা টিপে, শ্বাসরোধ করে। হায় ছায়াবৃতা।

সেই মুহূর্তে যখন দমবন্ধ হয়ে আসছে। নেমে আসছে মৃত্যু। তখন অপেক্ষা করছে আরও এক কঠিন মৃত্যু। কিছু জন্তু ছিঁড়ে ফেলল পা আর নয়। চোখ বুজলে তুমি। কেন এতটা যন্ত্রণা নিয়ে মরতে হল তোমাকে? কারণ তুমি নারী। তোমার শরীর নারীর। নারীর যৌবন ঔদ্ধত্য পুরুষ সহ্য করতে পারে না। হায় অভাগী! যৌবন ঔদ্ধত্য পুরুষ সহ্য করতে পারে না। হে অঙ্গনা।

সেই মুহূর্তে যখন দমবন্ধ হয়ে আসছে। নেমে আসছে মৃত্যু। তখন অপেক্ষা করছে আরও এক কঠিন মৃত্যু।

আর কী বোকা ওই মেয়ে? ভরসা রেখেছিল দীনবন্ধুতে। কলেজ ব্যাগ থেকে পরে উদ্ধার হয়েছে এক টুকরো কাগজ। যেখানে লেখা ''ভগবান সহায়''।

Tags:
.