লোবায় গ্রামবাসীদের খবর জানতেন মুখ্যমন্ত্রীও

দুবরাজপুরের লোবা গ্রামে জমি আন্দোলনকারীদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে, সেকথা বহুদিন আগে থেকেই জানতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ এই তথ্য সামনে এসেছে একটি চিঠির মাধ্যমে। লোবা গ্রামের জমির মালিকরা ২৭ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে ওই চিঠি লেখেন। গত দুদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন, লোবায় কোনও জমি আন্দোলন চলছে না। বহিরাগতরা অশান্তি করছে। চিঠিতে পরিস্কার দীর্ঘদিন ধরে লোবার বাসিন্দারাই জমির নায্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন। যা মুখ্যমন্ত্রীকেও তাঁরা জানিয়েছিলেন চিঠির মাধ্যমে।

Updated By: Nov 8, 2012, 06:57 PM IST

দুবরাজপুরের লোবা গ্রামে জমি আন্দোলনকারীদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে, সেকথা বহুদিন আগে থেকেই জানতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ এই তথ্য সামনে এসেছে একটি চিঠির মাধ্যমে। লোবা গ্রামের জমির মালিকরা ২৭ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে ওই চিঠি লেখেন। গত দুদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন, লোবায় কোনও জমি আন্দোলন চলছে না। বহিরাগতরা অশান্তি করছে। চিঠিতে পরিস্কার দীর্ঘদিন ধরে লোবার বাসিন্দারাই জমির নায্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন। যা মুখ্যমন্ত্রীকেও তাঁরা জানিয়েছিলেন চিঠির মাধ্যমে।  
২৭ সপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি চিঠি পাঠান। কী ছিল সেই চিঠিতে?
লোবা গ্রামের বাসিন্দারা লিখেছিলেন,
মহাশয়া,
আমরা বীরভূম জেলার লোবা গ্রামের বাসিন্দা। আমাদের এলাকায় কয়লার ভাণ্ডার আছে। ডিভিসি ওই কয়লা উত্তোলনের কাজ একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেয়। এমটা কোম্পানি এখানে জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা না করে দালাল মারফত জমি কিনতে শুরু করে। কয়লা উত্তোলনের মেশিনও গ্রামে ঢোকে। জমি-মিলকদের পুনর্বাসন না দিয়ে কীভাবে কয়লা উত্তোলনের কাজ সম্ভব? আমরা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর কাছেও আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু বেঙ্গল-এমটা প্রশাসনের কিছু কর্তাব্যক্তিদের প্রভাবিত করে এখানে ত্রাস তৈরি করছে। এই অবস্থায় আমরা আপনার কাছে প্রার্থনা করছি এদের ত্রাসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন। দিদি, আমরা আপনার স্নেহধন্য ভাইয়েরা আপনার কাছে সাহায্য চাইছি।
ধন্যবাদ সহ,
ফেলারাম মণ্ডল ও জয়দীপ মজুমদার

চিঠির বয়ানে পরিস্কার দীর্ঘদিন ধরে লোবার গ্রামবাসীরা জমির নায্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। অথচ বুধবার মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলেন, দুবরাজপুরের লোবায় কোনও জমি আন্দোলন চলছে না।
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, "লোবায় অশান্তি সৃষ্টি বহিরাহতদের কাজ। পরিকল্পিত।"
অথচ সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরাই জমি আন্দোলন করছেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে গ্রামবাসীরা পরিস্কার জানিয়েছেন, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও গোটা ঘটনা জানতেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের, ওই চিঠিতে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করে লিখেছেন যে রাজ্য সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মদতে বেসরকারি ওই কোম্পানিটি গ্রামবাসীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এই সমস্ত অভিযোগের কথা গোচরে থাকা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা, মুখ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী সবাই গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বুধবারই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, লোবার ঘটনার পিছনে সিপিআইএম ও কংগ্রেস হাত রয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বয়ান বদলে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, লোবার ঘটনা ঘটিয়েছে উগ্র বামপন্থীরা। অর্থাত্‍ এবার তাঁর অভিযোগের আঙুল মাওবাদীদের দিকে।

.