শিয়া-সুন্নি বিরোধ চরমে, গৃহযুদ্ধের থমথমে পরিবেশে আন্তঙ্কের প্রহর গুনছেন ইরাকের সাধারণ মানুষ

দোকানপাট বন্ধ। তামাম হোটেল-ক্যাফে-রেস্তোরাঁর ঝাঁপ ফেলা। সিনেমার হল,শপিং মল,খেলাধুলার স্টেডিয়াম কিছুই খোলা নেই। বাগদাদ জুড়ে শুধুই আতঙ্ক। কোথায়,কখন বিস্ফোরণ ঘটবে কারও জানা নেই।ঘরের বাইরে পা রাখছেন না ইরাকিরা। যুদ্ধের ১০ বছর পর ইরাকের রাজধানী ফিরে গিয়েছে যুদ্ধকালীন পরিবেশেই।

Updated By: Nov 8, 2013, 06:05 PM IST

দোকানপাট বন্ধ। তামাম হোটেল-ক্যাফে-রেস্তোরাঁর ঝাঁপ ফেলা। সিনেমার হল,শপিং মল,খেলাধুলার স্টেডিয়াম কিছুই খোলা নেই। বাগদাদ জুড়ে শুধুই আতঙ্ক। কোথায়,কখন বিস্ফোরণ ঘটবে কারও জানা নেই।ঘরের বাইরে পা রাখছেন না ইরাকিরা। যুদ্ধের ১০ বছর পর ইরাকের রাজধানী ফিরে গিয়েছে যুদ্ধকালীন পরিবেশেই।
সন্ত্রাস বা অবিরাম হিংসা ইরাকে নতুন নয়। ২০০৩ সালে সাদ্দাম হুসেনের জমানার অবসানের পর থেকেই রক্তাক্ত হচ্ছে বাগদাদ। কিন্তু এবারের আতঙ্ক অন্যরকমের । নির্বাচিত সরকার থাকা সত্ত্বেও ইরাকে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের তিক্ততা চরমে। সুন্নি জঙ্গিরা একের পর এক রেস্তোরাঁয় বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। শিয়া কট্টরপন্থীরা বেছে বেছে হামলা চালাচ্ছে বাজার এলাকায়।
আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ খুবই দুর্বল। কোথায়,কীভাবে উগ্রপন্থীরা আক্রমণের পরিকল্পনা করছে,কিছুই জানা যায় না। তা ছাড়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যে পরিকাঠামো বা প্রযুক্তি থাকা উচিত,পুলিসের কাছে তা নেই।
বাগদাদের অল আমিল অঞ্চল। অক্টোবর মাসে এখানকারই একটি জনপ্রিয় ক্যাফেতে মানববোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৮জন। কান্না আর মৃত্যুর গন্ধ এখনও রয়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। নাশকতার ভয়ে বন্ধ বাদবাকি দোকানপাটও।  বিধ্বস্ত ওই রেস্তোরাঁর উল্টোদিকে থাকেন আহমেদ। বিস্ফোরণের কয়েক মিনিট আগেই ক্যাফে থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। আহমেদ বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু মারা গিয়েছেন তাঁর নিকটাত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধবেরা। প্রতিদিন যাঁদের সঙ্গে ক্যাফেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্পগুজব করতেন বাগদাদের এই বাসিন্দা ।
বিদেশি সেনা ইরাক থেকে হাত গুটাতেই ফিরে এসেছে আল কায়দা। এখন তারা আরও মরীয়া । সন্ত্রাসের ভয়ে বাড়ির বাইরে পা রাখতে দুবার ভাবতে হচ্ছে। বাগদাদের হোটেল-রেস্তোরাঁ-শপিং মল-সিনেমা হল,ক্রেতার অভাবে বেশিরভাগই বন্ধ। জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় দোকানে তালা ঝুলিয়েছেন বহু ব্যবসায়ী।
ক্যাফেতে বোমা ফাটছে,খেলার মাঠে হামলা হচ্ছে,শোকসভায় বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। ইরাকিরা যাবেন কোথায় ? বাইরের কাজ শেষ হলেই সকলে বাড়িতে ঢুকে পড়ছেন। বাগদাদে সুস্থ,স্বাভাবিক জীবন কাটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
গত এক বছরে ইরাকে প্রতিমাসে গড়ে এক হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে হিংসায়। যা গত পাঁচ বছরে সর্বাধিক। অধিকাংশ দিনই বাগদাদের ঘুম ভাঙে বিস্ফোরণের শব্দ,অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন আর পুলিসের হেলিকপ্টারের গর্জনে। মার্কিন সেনা অভিযানে সাদ্দাম হুসেনের রাজ্যপাট শেষ হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতির অবসান হয়নি ইরাকে।

.