অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিকে বসলেন ছাত্রছাত্রীরা

শিক্ষামন্ত্রীর বেনজির নির্দেশে অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেতে চলেছেন ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার রাত একটা নাগাদ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ঘোষণা করা হয় যাঁরা অ্যাডমিট কার্ড পাননি তাঁরা নিজেদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়েই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্তে হতবাক অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে যদি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই পরীক্ষায় বসা যায় তাহলে মঙ্গলবার দূরদূরান্ত থেকে পরীক্ষার্থী ও অভিবাকদের কেন সংসদ ভবনে এসে দিনভর নাজেহাল হতে হল।

Updated By: Mar 13, 2013, 10:37 AM IST

শিক্ষামন্ত্রীর বেনজির নির্দেশে অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেতে চলেছেন ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার রাত একটা নাগাদ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ঘোষণা করা হয় যাঁরা অ্যাডমিট কার্ড পাননি তাঁরা নিজেদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়েই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্তে হতবাক অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে যদি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই পরীক্ষায় বসা যায় তাহলে মঙ্গলবার দূরদূরান্ত থেকে পরীক্ষার্থী ও অভিবাকদের কেন সংসদ ভবনে এসে দিনভর নাজেহাল হতে হল। শুধু তাই নয়, অনেকেরই আশঙ্কা হঠাত্ নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেবে।
উচ্চ মাধ্যমিকে বেনজির বিভ্রাটের পিছনে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হাত। আজ স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি। তিনি জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ে ফর্ম ফিল আপ না করা ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই। পরিস্থিতি সামলাতে শেষ পর্যন্ত অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই পরীক্ষায় বসার অনুমতিও দেওয়া হয় শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে। ফলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা না জেনেই এবারের উচ্চ মাধ্যমিক শুরু করে দিতে হল সংসদকে।
অন্যান্যবার সাধারণত ফর্ম ফিলাপের ক্ষেত্রে ছাত্র ছাত্রী বা স্কুলের ছোট খাট ভুলের জন্য অ্যাডমিট কার্ড না পেলে সেই পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ভাবে অ্যাডমিট দেওয়ার ব্যবস্থা করত সংসদ। এবছর এই সব পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি যারা ফর্ম ফিলাপ করেনি তাদেরও পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিল সংসদ। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে পরীক্ষার আগের রাতে এই ঘোষণা করল সংসদ।
মঙ্গলবার গোটাদিনই সংসদ অফিসে ছিল এই দুই ধরণের পরীক্ষার্থীর ভিড়। কেউ ভোর সাড়ে চারটে কেউবা ভোর ছটা থেকে সংসদ অফিসে ভিড় জমিয়ে ছিলেন। কিন্তু দিনের শেষে রাত একটাতেও অনেকে অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেলেন না।
যাদের মধ্যে নির্দিষ্ট সময় ফর্ম ফিলাপ করেছেন এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও কিছু কম নয়। অন্যান্যবার এই সব ছাত্ররা সাধারণত কাউন্সিলের পুনর্বিবেচনার ফলে পরীক্ষায় বসতে পারেন। কিন্তু সংসদের তাত্ক্ষণিক সিদ্ধান্তের জেরে পরীক্ষায় বসার সুযোগ এই সব ছাত্রছাত্রীদেরও হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত এক প্রকার পিঠ বাঁচাতে আর মান রক্ষা করতে নতুন নির্দেশ দেয় সংসদ। মাঝরাতে শিক্ষামন্ত্রীর তরফে বলা হয় যারা এনরোলমেন্ট ফর্ম ফিলাপ করেছেন কিন্তু অ্যাডমিট কার্ড পাননি তাঁরা পরীক্ষার হলে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখালেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন। রাত একটা নাগাদ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের।

নজিরবিহীন ভাবে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার এই অভিনব সিদ্ধান্তে হতবাক অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে যখন ফর্ম ফিল আপ করা সব পরীক্ষার্থীকে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার ক্ষমতা ছিলনা সংসদের তখন ফর্ম ফিলাপ করেনি এমন ছাত্রদের দায়িত্ব সংসদ কি ভাবে নিল। প্রশ্ন উঠছে সংসদের পরিকাঠামো নিয়েও। যারা রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নিয়ে পরীক্ষার হলে যাবেন তাদের প্রশ্নপত্র এবং খাতা দেওয়া সম্ভব হবে তো?
সংসদের দাবি, বিষযটি ইতমধ্যেই বিভিন্ন স্কুলতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তের এই সিদ্ধান্ত কয়েক হাজার স্কুলের পক্ষে মানা সম্ভব হবে তো? আর এনরোলমন্ট ফর্ম ফিলাপ করাই যদি পরীক্ষায় বসার মূল শর্ত হয় তাহলে কেন পরীক্ষার আগের দিনটা অ্যাডমিট পাওয়ার জন্য বহু ছাত্রকে নষ্ট করতে হল ?
সবমিলিয়ে অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার অভিনব নির্দেশ কি কি শুধুই ছাত্রস্বার্থে নাকি সংসদের নিজের পিঠ বাঁচাতে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কৌতুহল তৈরি হয়েছে।

.