'আমি ম্যাডাম ও তাঁর পুত্রের চক্রান্তের শিকার'

সপুত্রক সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন আসারাম বাপু। জানালেন কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর পুত্র রাহুল গান্ধীর অঙ্গুলিহেলনেই তাঁর বিরুদ্ধে কিশোরীকে যৌননির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Updated By: Aug 29, 2013, 10:16 AM IST

সপুত্রক সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে ঘুরিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন আসারাম বাপু। জানালেন কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর পুত্র রাহুল গান্ধীর অঙ্গুলিহেলনেই তাঁর বিরুদ্ধে কিশোরীকে যৌননির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভোপালে পৌঁছেই এই বর্ষীয়ান ধর্মগুরু জানালেন ''আমার কাছে খবর আছে ম্যাডাম ও তাঁর পুত্রের নির্দেশেই আমার বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।'' 
আসারাম বাপুর এই মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রাশিদ আলভি। এই মন্তব্যের জন্য অবিলম্বে আসারাম বাপুর সোনিয়া গান্ধীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ বলে জানিয়েছেন আলভি।
তদন্তের স্বার্থে আগামী কালের মধ্যে জোধপুর পুলিসের কাছে হাজিরা দেওয়ার কথা এই স্বঘোষিত বর্ষীয়ান ধর্মগুরুর। কিন্তু ব্যাস্ততার দোহাই দিয়ে আগেই আসারাম বাপু জানিয়েছিলেন তাঁর পক্ষে হাজিরা দেওয়া সম্ভব না। একটি চার্টাড বিমানে আজ ইন্দোর থেকে ভোপালে তাঁর আশ্রমে এসেছেন আসারাম বাপু। মধ্যপ্রদেশের একাধিক বিজেপি নেতা কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সরাসরি তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। 
সেদিন আশ্রমে যে কিশোরীকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন আসারাম বাপু, তার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করল যোধপুর পুলিস। গুরুকুল, শাহজাহানপুর, আমেদাবাদ, ইন্দোরে আসারাম বাপুর আশ্রমে গিয়ে বিভিন্নভাবে তদন্ত করার পর পুলিসের কাছে প্রমাণ মিলেছে যে কিশোরীকে গডম্যান যৌন হেনস্থা করেছিলেন। এরপরেই উঠছে প্রশ্ন। পুলিসের কথা ধরলে `গডম্যান` আসারাম এ বার হাজতবাস করবেন। সঙ্গে পাঁচ লক্ষ টাকাও তার খরচ হওয়ার কথা। শুধু তাই নয় লোকের বাড়িতে চাকর হিসাবেও খাটবেন আসারাম। কারণ ধর্মগুরু বারবার বলেন, কথা না রাখাটা আসলে বড় পাপ।
নিজেকে ভগবান মানুষ হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আসারাম বাপু। তাঁর বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর আসারাম চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। গডম্যান বলেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার প্রমাণ দিতে পারলে তিনি পাঁচ লক্ষ টাকা দেব। পরে বলেছিলেন তিনি আমার বিরুদ্ধে যে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবে, তাঁর চাকর হয়ে থাকব৷
তবে আসারাম বাপু এখনও দাবি করছেন, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।
প্রসঙ্গত, গত ২০ অগাস্ট এক কিশোরী দিল্লির কমলা মার্কেট পুলিস স্টেশনে আসারাম বাপুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ওই কিশোরী। কিশোরীর বয়ান অনুযায়ী রাজস্থানের যোধপুরে আসারাম বাপুর আশ্রমেই এই ধর্মগুরুর নির্যাতনের শিকার হয়েছে সে।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু আসারাম বাপু অতীতেও বহু বিতর্কে জড়িয়েছেন। গত বছর ১৬ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিতা মেয়েটিও ধর্ষকদের সমান দোষী বলে প্রবল সমালোচনার সম্মুখীন হন।
এই বছর মার্চে যখন চার দশকের মধ্যে ভয়াবহতম খরার সম্মুখীন হয় মহারাষ্ট্র, তখন ভক্তদের উপর নকল বৃষ্টির ছোঁয়া দেওয়ার জন্য কয়েক গ্যালন জল নষ্ট করেন তিনি।
২০০৮-এ আসারামের আশ্রমের কাছে সবরমতীর তীরে দীপেশ ভাগহেলা ও অভিষেক ভাগহেলা নামের দুই কিশোরের গলিত পচা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় সপুত্র আসারামকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের সন্দেহ ঘনীভূত হয়।
দিল্লি ধর্ষণকাণ্ডে আসারাম বাপু বলে ছিলেন, ধর্ষিতা মেয়েটি যদি সরস্বতী মন্ত্র জপ করে ছেলেগুলোর হাতে-পায়ে ধরে বলত ‘আমি তোমাদের বোন’, তা হলে আর ধর্ষণ হত না।

.