কর ব্যবস্থায় সংস্কার এনে সাফল্য রাজ্যের, আয় বাড়াতে সক্ষম হল সরকার

কর ব্যবস্থায় সংস্কার এনে  দুবছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা আয় বাড়াতে সক্ষম হল রাজ্য সরকার। আমজনতার ওপর বাড়তি করের বোঝা না চাপিয়েই অর্থ দফতরের এই সাফল্য প্রশংসা কুড়িয়েছে  আর্থিক বিশেষজ্ঞদের।

Updated By: Nov 28, 2013, 08:36 PM IST

কর ব্যবস্থায় সংস্কার এনে  দুবছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা আয় বাড়াতে সক্ষম হল রাজ্য সরকার। আমজনতার ওপর বাড়তি করের বোঝা না চাপিয়েই অর্থ দফতরের এই সাফল্য প্রশংসা কুড়িয়েছে  আর্থিক বিশেষজ্ঞদের।  

২০১১ সালে পালাবদলের পর, গত দুবছরে লক্ষ্যনীয়ভাবে বেড়েছে রাজ্যের আয়। অর্থ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে রাজ্যের নিজস্ব কর আদায় ছিল ২৪ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা।

২০১২-১৩ অর্থবর্ষে তা ৪১ শতাংশ বেড়ে হয় ৩২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা আরও ৩২ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।

বিক্রয় কর থেকে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে রাজ্যের আয় ছিল ১৫ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ২২ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।

আবগারি শুল্ক বাবদ ২০১১-১২ অর্থবর্ষে রাজ্যের আয় ছিল ২১১৭ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে আবগারি শুল্ক থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ২০২ কোটি টাকা।

বাড়তি টাকা এসেছে স্ট্যাম্প রেজিস্ট্রেশন থেকেও। ২০১১-১২ অর্থবর্ষে সংগ্রহ হয়েছিল ২৭৩১ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

বিদ্যুতের ওপর কর ও শুল্ক থেকেও আয় বেড়েছে রাজ্যের। এই খাতে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে আয় হয়েছিল ৪০৮ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষে বিদ্যুত্ বণ্টন থেকে বারোশো কোটি টাকা আয় করে রাজ্য। চলতি অর্থবর্ষে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ১৩৮০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য থেকে যে কর আদায় করে তার একটি অংশ রাজ্যকে দেয়। সেই খাতে ২০১১-১২ অর্থবর্ষে আয় হয়েছিল আঠারো হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষে আয় বেড়ে হয় ২১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে ২৫ হাজার ২৬৯ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

বেড়েছে কেন্দ্রের গ্রান্ট ইন এডেও। ২০১১-১২ এই খাতে এসেছিল ১৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষে এসেছে ১৬ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে ২১ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।
------------
কর বহির্ভুত খাতেও আয় বেড়েছে অনেকটাই। ২০১১-১২ অর্থবর্ষে আয় ছিল ১৩৪০ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ আয় বেড়ে হয়েছে ১৫৯৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ১৭৫৬ কোটি টাকা।     
-------------
সবকটি খাতে আয় বাড়ায় বেড়েছে সরকারের মোট আয়ও। ২০১১-১২ রাজ্যের মোট আয় ছিল ৫৮ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষে আয় বেড়ে হয়েছে ৭২ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে ৮৮ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

রাজ্যবাসীর ওপর বাড়তি করের বোঝা না চাপিয়েই কীভাবে বাড়ল আয়? অর্থ দফতরের কর্তারা বলছেন, এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ,
মূল্যযুক্ত কর বা ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্সের নিম্নসীমা ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করেছে রাজ্য সরকার।
 
মূল্যযুক্ত কর বা ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্সের ঊর্ধ্বসীমা ১৩.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৪.৫ শতাংশ। তামাকজাত দ্রব্য ও সিগারেটের ওপর ভ্যাট ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে
 
পণ্যপ্রবেশ কর থেকে বেড়েছে আয়। কর আদায়ের প্রায় সমস্ত খাতেই ই-গভর্নেন্স চালু হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে দুর্নীতি। কর আদায়ের পদ্ধতিতে সংস্কারের জন্য রাজ্যের প্রশংসা করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। চলতি অর্থবর্ষে ৮৮ হাজার ৪০৩ কোটি টাকার টার্গেট অনায়াসেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা।  
 

.