কেষ্টপুরে প্রেমিক যুগলের মৃত্যুকাণ্ডে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে

কেষ্টপুরে প্রেমিক যুগলের মৃত্যুকাণ্ডে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। কী কারণে তরুণ-তরুণীর আত্মহত্যা করলেন? এখন সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। দুই পরিবারের তরফে সম্পর্ক মেনে না নেওয়া, নাকি দুজনের সম্পর্কের টানাপোড়েন? উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। গোটা ঘটনায় পুলিসের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।  

Updated By: Nov 23, 2015, 09:29 AM IST

ওয়েব ডেস্ক: কেষ্টপুরে প্রেমিক যুগলের মৃত্যুকাণ্ডে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। কী কারণে তরুণ-তরুণীর আত্মহত্যা করলেন? এখন সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। দুই পরিবারের তরফে সম্পর্ক মেনে না নেওয়া, নাকি দুজনের সম্পর্কের টানাপোড়েন? উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। গোটা ঘটনায় পুলিসের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।  

১৬ নভেম্বর--

নিখোঁজ হন শিবপুরের শ্রুতিকা তিওয়ারি। শ্রী শিক্ষায়তন স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে হন্যে হয়ে খুঁজে ফেরেন তাঁর পরিবার। খুঁজে পান না। এরপরই শিবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে তিওয়ারি পরিবার। তখন সঙ্গে ছিলেন রামমোহন দত্ত।
থানা থেকে ফেরার পর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়েন রামমোহন।

১৭ নভেম্বর--

ভোরবেলায় রামমোহন দত্তকে আহত অবস্থায় বিদ্যাসাগর সেতু থেকে উদ্ধার করে পুলিস। দুর্ঘটনায় জখম হন তিনি। সারাদিন হাওড়া হাসপাতালে কাটিয়ে, রাতে বাড়ি ফেরেন তিনি।

ওই দিনই বাড়ি থেকে পঁচানব্বই হাজার টাকা নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান রামমোহন।

২২ নভেম্বর--

বাগুআটির ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় রামমোহন-শ্রুতিকার পচন ধরা দেহ।

প্রাথমিকভাবে পুলিস মনে করে, দুই পরিবার সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় আত্মঘাতী হন শ্রুতিকা-রামমোহন। কিন্তু তদন্ত শুরু করতেই এক রাশ প্রশ্ন উঠে আসছে।

বাগুইআটির ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয় ৮ নভেম্বর।

সেখান থেকে বাসন-পত্র, এমনকি ইন্ডাকশন ওভেনও উদ্ধার হয়। দেখে মনে হবে সংসার করার পরিকল্পনা ছিল এই দুজনের।

সংসার করারই যখন পরিকল্পনা, তখন কেন আত্মঘাতী হলেন শ্রুতিকা-রামমোহন?   

পরিকল্পনাই যখন ছিল সংসার করার, তখন কেন ১৬ নভেম্বর শ্রুতিকার মিসিং ডায়েরি করতে শিবপুর থানায় হাজির হন রামমোহন? মেয়ের পরিবারের তরফে অভিযোগ হওয়া সত্বেও কেন গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করল না পুলিস?  

কেন রামমোহনের ওপরও নজরদারি চালানো হল না? রামমোহনের পরিবারের বয়ান অনুযায়ী, এই সম্পর্কের কথা তাঁরা জানতেন। সম্পর্ক নিয়ে তাঁরা নারাজও ছিলেন না, কিংবা অনুমতিও দেননি।

শ্রুতিকার নিখোঁজ ডায়েরি করতে যদি রামমোহন তাঁর পরিবারের সঙ্গে থানায় যান, তাহলে রামমোহন সম্পর্কেও অবহিত ছিল শ্রুতিকার পরিবার।

তবে কি মেয়ের পরিবারই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই সম্পর্কে? আর সে জন্যই পালিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এই দুজন?

সুইসাইড নোট অনুযায়ী দুজনই আত্মঘাতী হয় ১৮ নভেম্বর। যদি আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তাহলে কেন ফ্ল্যাট ভাড়া করলেন?

কেন একটি জার্মান শেপার্ডের বাচ্চা (কুকুর বাচ্চা) কিনে এনেছিলেন? তাহলে কি সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই এই আত্মহত্যা?

তাহলে কি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত হঠাত্‍ করেই নেয় দুজন? বাড়ি থেকে ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে নিখোঁজ হন রামমোহন। তাঁদের দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয় ৭০ হাজার টাকা। বাকি টাকা কোথায় গেল? প্রশ্ন অনেক। আর এর উত্তর খুঁজে বের করতেই রীতিমতো কালঘাম ছুটে যাচ্ছে দুই কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের।

 

.