"যাঁরা দূরে পড়ে আছেন আমায় চিঠি দিন, দেখি কোন নেতার কত কারসাজি?" চরম বার্তা মমতার

"যাঁরা ভুল বুঝে দূরে সরে আছেন, তাঁদেরকে ডেকে আনুন। যাঁরা তৃণমূলের দুর্দিনে পাশে ছিলেন, কিন্তু অসম্মমানের সঙ্গে এখন বাইরে পড়ে আছেন, তাঁদেরকে ডেকে আনুন।"

Updated By: Nov 16, 2018, 04:00 PM IST
"যাঁরা দূরে পড়ে আছেন আমায় চিঠি দিন, দেখি কোন নেতার কত কারসাজি?" চরম বার্তা মমতার

নিজস্ব প্রতিবেদন : "দিদি গিয়ে সব করে দেবে, আর আমি শুধু ভোটে দাঁড়াব। আগামীদিনে এমনটা চলবে না।" নেতজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গোষ্ঠীকোন্দল
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে শাসকদলে। এদিন কোর কমিটির বৈঠক থেকে সেই প্রসঙ্গে দলীয় কর্মীদের চাঁছাছোলা ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, "আমি করব আর কেউ করব না, সেটা হবে না।" প্রসঙ্গত, আদি ও নব্য তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল বহু সময়ই শাসকদলের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গেও বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "যাঁরা ভুল বুঝে দূরে সরে আছেন, তাঁদেরকে ডেকে আনুন। যাঁরা তৃণমূলের দুর্দিনে পাশে ছিলেন, কিন্তু অসম্মমানের সঙ্গে এখন বাইরে পড়ে আছেন, তাঁদেরকে ডেকে আনুন।" আশ্বাস দেন, "যাঁরা যাঁরা দূরে পড়ে রয়েছেন, তাঁরা আমাকে একটা করে চিঠি দিন। আমি নিজে গিয়ে দেখে নেব, কোন নেতার কত বড় কারসাজি।"

বিজেপি-আরএসএস
এদিন মুখ্যমন্ত্রী তোপ দাগেন, দলে এমন অনেকে আছেন, যাঁরা নিজেদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছেন না। হুঁশিয়ারি দেন, "সবাই বসে থাকবে, আর দিদি গিয়ে সব করে দেবে, আমি শুধু ভোটে দাঁড়াব। আগামীদিনে এমনটা চলবে না।" এলাকায় এলাকায় ঘুরে জনসংযোগ বাড়ানোর উপর জোর দিতে বলেন কর্মীদের। বিজেপি-আরএসএস-এর 'চক্রান্ত' বানচাল করার জন্য এলাকার নেতা-কর্মীদের আরও সক্রিয় হতে নির্দেশ দেন দলনেত্রী। বলেন, "খাটতে হবে। সব সমস্যায় আমাকে কেন ছুটতে হবে?" জানান, সীমান্তবর্তী জেলাগুলি বিশেষ করে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় যেসকল তৃণমূল নেতা-কর্মীরা থানায় গিয়ে খবর দেবেন, তাঁদের নাম নথিভুক্ত থাকবে। দল তাঁদেরকে পুরস্কৃত করবে।

আরও পড়ুন, থুতুতে 'রঙিন' কলকাতা, পরিচ্ছন্নতা ফেরানোর পথ খুঁজতে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী

ব্রিগেড মিটিং
বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক থেকে ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সভার কর্মসূচি নিয়েও কর্মীদের দিক নির্দেশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড নিয়ে ব্লকে ব্লকে কর্মীদের মিটিং করতে নির্দেশ দেন দলনেত্রী। বুথে বুথে দেওয়াল লিখনের কথাও বলেন তিনি। প্রসঙ্গত, বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে কেন্দ্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ব্রিগেড সভার ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে এদিন ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, "আদর্শপন্থী বামপন্থীদের সঙ্গে আমাদের কোনও বিভেদ নেই।" পাশাপাশি,  দলের মধ্য়ে কোনও 'গদ্দার, বেইমান'-কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে (মুকুল রায় প্রসঙ্গে নাম না করে) এদিন ফের সতর্ক করেন তিনি।

রাবণযাত্রা বনাম পবিত্রযাত্রা
বিজেপি রথযাত্রাকেও একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী। কটাক্ষ করেন, বিজেপির রথযাত্রা আসলে 'রাবণ যাত্রা' হবে। 'ফাইভ স্টার' রথযাত্রা করবে বিজেপি। রথযাত্রা হয়ে যাওয়ার পর হরির লুঠ হবে। বিজেপির রথযাত্রার পাল্টা 'পবিত্র যাত্রা' করবে তৃণমূল। সংকীর্তন করে পথ পরিষ্কার করবে তৃণমূলের ছেলেরা।

বিধায়কদের বেতন কাটা
এদিন বিধানসভায় বিধায়কদের অনুপস্থিতি নিয়েও কড়া ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, যে যে বিধায়ক বিধানসভায় আসবেন না। তাঁদের বেতন কাটা পড়বে। আরও পড়ুন,লক্ষ্য লোকসভা, মতুয়া সঙ্ঘে ভাঙন রুখতে ঐক্যের ডাক মমতার

.