অটো দৌরাত্ম্য রুখতে তৈরি হচ্ছে কমিটি, কিন্তু সমস্যা মিটছে কী? কী বলছে কমিটির রিপোর্ট?

অটোর দৌরাত্ম্যে লাগাম পরাতে একের পর এক কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। অথচ ঠান্ডা ঘরেই পড়ে থেকেছে সেই সব কমিটির রিপোর্ট। আর বারবারই সামনে এসেছে বেপরোয়া অটো-চালকদের হাতে একের পর এক যাত্রী নিগ্রহের ঘটনা। কখনও ছোট্ট স্কুলছাত্রীকে প্রায় চাকায় পিষে চলে যাওয়া, কখনওবা খুচরো নিয়ে বচসায় মহিলা যাত্রীর নাকে ঘুষি। কখনও বেকবাগানে মহিলার মাথায় রডের আঘাত। আর এবার বেপরোয়া অটোয় ধাক্কায় প্রৌঢ়ের মৃত্যু। একের পর এক ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা শহর।

Updated By: Jan 22, 2014, 10:46 PM IST

অটোর দৌরাত্ম্যে লাগাম পরাতে একের পর এক কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। অথচ ঠান্ডা ঘরেই পড়ে থেকেছে সেই সব কমিটির রিপোর্ট। আর বারবারই সামনে এসেছে বেপরোয়া অটো-চালকদের হাতে একের পর এক যাত্রী নিগ্রহের ঘটনা। কখনও ছোট্ট স্কুলছাত্রীকে প্রায় চাকায় পিষে চলে যাওয়া, কখনওবা খুচরো নিয়ে বচসায় মহিলা যাত্রীর নাকে ঘুষি। কখনও বেকবাগানে মহিলার মাথায় রডের আঘাত। আর এবার বেপরোয়া অটোয় ধাক্কায় প্রৌঢ়ের মৃত্যু। একের পর এক ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা শহর।

প্রশ্ন উঠছে বেপরোয়া অটোয় রাশ টানতে সরকার তবে কী করছে? দেখা যাচ্ছে প্রতিবারই অটো দৌরাত্ম্যের খবর হলেই তড়ঘড়ি একটা কমিটি তৈরির নির্দেশ দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

২০১২ সালে এমনই একটি ১৫ সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছিল পরিবহণ দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে। সেই কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছিল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্টে বলা হয়, কলকাতা শহরে ঘুরে বেড়ানো ৬২ হাজার অটোর মধ্যে শতকরা ৪০ শতাংশই বেআইনি।

এমনকী ২০১১ সালের মার্চে সময়সীমা পেরোনর পরও অন্তত সাড়ে ৩ হাজার অটো এলপিজি চালিত হয়নি।

বেআইনি অটোয় লাগাম পরাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও দিয়েছিল ওই কমিটি।
# প্রস্তাব ছিল, কলকাতার অটো রুটকে নির্দিষ্ট রঙের ছটি জোনে ভাগ করে দেওয়া হোক।
# এক রুটের অটো অন্য রুটে চালানো নিষিদ্ধ করা হোক।
# সুপারিশ ছিল প্রতিটি অটোয় হাই সিকিউরিটি নাম্বার প্লেট লাগানরও। যেখানে উল্লেখ থাকবে অটোর নির্দিষ্ট রুট পারমিটও।

পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা ২০১২ সালের এই রিপোর্টকে সময়োপযোগী বলে দাবি করলেও, রিপোর্টের সুপারিশ নিয়ে কোনও পদক্ষেপই নেয়নি সরকার। তার ওপর ফের আরও একটি দুই সদস্যের কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই সেই কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার সাতদিনের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে।

অটোকে নিয়মে বাঁধার ক্ষেত্রে সরকারি এই উদাসীনতা নিয়েই উঠে আসছে রাজনৈতিক যোগাযোগের অভিযোগ। আইনঅনুযায়ী মিটার লাগিয়ে অটো চালানোর কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে কলকাতার অটো। রুট ও ভাড়া নিয়ন্ত্রণেরও কাজটিও করে অটো ইউনিয়নগুলি। এই ইউনিয়নের প্রভাবেই আইন ভেঙেও সাধারণত কোনও মামলার মুখে পড়তে হয় না অটো চালকদের। তৈরি হয় যাত্রী হেনস্থা করেও পার পেয়ে যাওয়ার বেপরোয়া মনোভাব। আর এসবের আড়ালেই ধুলো জমতে থাকে একের পর এক কমিটির রিপোর্টে। আর তার ফলে রোজই কোথাও কোথাও না হেনস্থা হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

.