সুদীপ্ত গুপ্ত মৃত্যুর ঘটনায় এবার পুলিসের সঙ্গে সংঘাতে বাস মালিক সংগঠন

নেতা সুদীপ্ত গুপ্ত মৃত্যুর ঘটনায় বাস মালিক ও বাসচালক-কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছে পুলিস। অভিযোগ বাসমালিক সংগঠনের। এবার পুলিসকে এই ধরণের সভা-সমাবেশে বাস না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তারা। পাশাপাশি পুলিসের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার সিদ্ধান্তও নিয়েছে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। সুদীপ্ত গুপ্ত মৃত্যু মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাসের চাকা থেকে রং। কোনওকিছুই পরিবর্তন করা যাবেনা। এই মর্মে বৃহস্পতিবার বাসের মালিক তারকমনি পান্ডেকে ৬ লক্ষ টাকার বন্ড সই করার নির্দেশ দেয় ব্যাঙ্কশাল কোর্ট।

Updated By: Apr 5, 2013, 09:56 PM IST

নেতা সুদীপ্ত গুপ্ত মৃত্যুর ঘটনায় বাস মালিক ও বাসচালক-কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছে পুলিস। অভিযোগ বাসমালিক সংগঠনের। এবার পুলিসকে এই ধরণের সভা-সমাবেশে বাস না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তারা। পাশাপাশি পুলিসের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার সিদ্ধান্তও নিয়েছে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। সুদীপ্ত গুপ্ত মৃত্যু মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাসের চাকা থেকে রং। কোনওকিছুই পরিবর্তন করা যাবেনা। এই মর্মে বৃহস্পতিবার বাসের মালিক তারকমনি পান্ডেকে ৬ লক্ষ টাকার বন্ড সই করার নির্দেশ দেয় ব্যাঙ্কশাল কোর্ট।
এর প্রতিবাদে পুলিসের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করার সিদ্ধান্ত নিল বাসমালিকদের সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। তারকমনি পান্ডের মালিকানাধীন ৫৯ নম্বর রুটের বাস WB 11B 2782 মঙ্গলবার বাসটি চালাচ্ছিলেন রাজা দাস। বাসের রুট হাওড়ার বকুলতলা থেকে ধর্মতলা। চতুর্থ ট্রিপ শেষ করে বাস যখন ধর্মতলা পৌঁছয় তখন বেলা দেড়টা। এস এফ আই এর আইন অমান্য আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া রাজনৈতিক বন্দিদের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাবার জন্য বাস খুঁজছিল পুলিস। সামনে পড়ে যাওয়ায় এই বাসটি আটক করে পুলিস। রাজা দাসের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় ড্রাইভিং লাইসেন্স। এরপর সেই বাসেই মৃত্যু হয় সুদীপ্তর। বুধবার বাসের চালকের বিরুদ্ধেই রুজু হয় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা। বাসমালিক সংগঠনের দাবি, পুলিসি দখলসত্বে থাকা বাসের মধ্যে কি ঘটেছে তার দায় বাসমালিকের নয়। দ্বিতীয়ত ১৯৯৪ এর সংশোধিত মোটর ভেহিকেল আইনের ১০৪ এবং ১৩৪ ধারা অনুয়ায়ী, বিনা নোটিশে এভাবে  কেস-এর ভয় দেখিয়ে পুলিস বাস আটক করলে তা বেআইনী। তৃতীয়ত, আইনের ১৩৬ ধারা অনুযায়ী যাত্রীবাহী বাসে বন্দী, পণ্য বা অন্য কিছু পরিবহণ করা সম্পূর্ণ বেআইনী।
 
তিনটি ক্ষেত্রেই কলকাতা পুলিস আইন ভাঙায় এবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পথে হাঁটছে জয়েন্ট কাউন্সিল। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে গঙ্গাসাগর মেলা সহ অন্যান্য কারণে পুলিসকে বাস না দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জয়েন্ট কাউন্সিল। একমাত্র লোকসভা বা বিধানসভা ভোট বা জরুরি অবস্থা ছাড়া পুলিস বাস আটক করলে তা বরদাস্ত করা হবেনা বলে জানানো হয়েছে। বাসমালিকরা জানাচ্ছেন, নির্বাচনের জন্য প্রশাসন যখন বাস নেয়, তখন ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়...
 
১) ডিজেলের সম্পূর্ণ দাম বা ডিজেল ভরে দেওয়া হয়।
২) দিন প্রতি বাসের ভাড়া ১১৯৫ টাকা।
৩) চালক ও খালাসির দৈনিক খোরাকি বাবদ ১৮০ টাকা।
 
কলকাতা পুলিস হঠাৎ করে রাস্তায় নেমে বাস আটক করলে বাস পিছু ৮৭০ টাকা করে দেয়। অনেকেক্ষেত্রেই বাসগুলি ১৩ বা ১৫ কিলোমিটার চলে। ডিজেল বাবদ খরচ হয় ৯০০ টাকা। অর্থাত মালিককে উল্টে ৩০ টাকা লোকসানের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়। তারওপর থাকে বাসের ক্ষয়ক্ষতি এবং তারকমনি পান্ডের মত পরিণতির আশঙ্কা।
লোকসানের বোঝা বাইতে না পেরে ৭০ শতাংশ বেসরকারি বাস এমনিতেই বসে গিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন খোদ রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী। বোঝার ওপর শাকের আঁটির মত পুলিসের এই খুল্লমখুল্লা বেআইনী কারবার বাস শিল্পকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দেবে বলে বাসমালিকদের আশঙ্কা।

.