ত্রিফলা বিতর্ক: মেয়রের পাশে নেই পারিষদরাই?

কলকাতা পুরসভার ইন্টারনাল অডিটের আগে ত্রিফলা আলোর জন্য বকেয়া বিল মেটানো নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মেয়র পারিষদরাই। শনিবার বিল মেটানো নিয়ে মেয়র পারিষদদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই মেয়র পারিষদরা জানিয়ে দেন, অডিটের আগে বিল মেটানো নিয়ে পুরসভার সিদ্ধান্তে তাঁরা আপত্তি না জানালেও বিষয়টি নিয়ে কোনও মতামতও দেবেন না তাঁরা।

Updated By: Nov 26, 2012, 10:05 AM IST

কলকাতা পুরসভার ইন্টারনাল অডিটের আগে ত্রিফলা আলোর জন্য বকেয়া বিল মেটানো নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মেয়র পারিষদরাই। শনিবার বিল মেটানো নিয়ে মেয়র পারিষদদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই মেয়র পারিষদরা জানিয়ে দেন, অডিটের আগে বিল মেটানো নিয়ে পুরসভার সিদ্ধান্তে তাঁরা আপত্তি না জানালেও বিষয়টি নিয়ে কোনও মতামতও দেবেন না তাঁরা।
ত্রিফলা আলো নিয়ে ইন্টারনাল অডিট চলাকালীন কেন বকেয়া বিল মেটানো হচ্ছে। বারবারই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররাই। বিরোধীদের মোকাবিলায় তড়িঘড়ি শনিবার মেয়র পারিষদদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আগে বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত না নিয়ে, কেন বকেয়া বিল মেটানোর কাজ শুরুর পর এ ধরনের বৈঠক ডাকা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেয়র পারিষদরাই। বকেয়া বিল মেটানোর দায় ঘাড়ে নিতে চাননি তারা। তাঁদের বক্তব্য, বিল যেরকম মেটানো শুরু হয়েছে, তা চলুক। কিন্তু এ নিয়ে তাঁরা কোনও মতামত জানাবেন না।
এদিকে আগামী তিরিশে নভেম্বর ইন্টারনাল অডিটের রিপোর্ট জমা পড়বে। ইতিমধ্যেই এই ইন্টারনাল অডিটের বেশ কিছু অংশ প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, একই ব্যক্তিকে বিভিন্ন রাস্তায় আলো লাগানোর বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। উঠে এসেছে, টেন্ডার না ডেকে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও।
পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী যখন কোনও কাজের বরাত দেওয়া হয়, তখন সেই ফাইলটি প্রথমে সই করেন সেই দফতরের ডিজি। এরপর ফাইল খুঁটিয়ে দেখে সই করেন কমিশনার। এবং সব শেষে সংশ্লিষ্ট দফতরের মেয়র পারিষদ। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয়নি বলে পুরকর্মীদের বক্তব্য। ত্রিফলা আলো সংক্রান্ত সমস্ত ফাইল প্রথমে আলো দফতরের ডিজি গৌতম পট্টনায়ক সই করেছেন, তারপরেই সেটা সরাসরি চলে গেছে, সংশ্লিষ্ট দফতরের মেয়র পারিষদ মনজর ইকবালের কাছে। পুরকর্মীদের একাংশ মনে করছেন, ডিজিকে বলা হয়েছিল ফাইলে সরাসরি সই করে পাঠাতে।
পুরকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, সেই সময় কমিশনার পদে ছিলেন অর্ণব রায়। তাঁর কাছে কোনও ফাইল পাঠানোই হয়নি। এরপরে যখন খলিল আহমেদ কমিশনারের দায়িত্ব নেন, তখনই নিয়মবহির্ভূতভাবে তাতে সই করতে আপত্তি তোলেন তিনি।
ঘটনার জন্য ডিজি গৌতম পট্টনায়ককে শোকজ করা হয়। তারপরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় অন্য দফতরে। তবে কি নিজেদের দোষ ঢাকতেই একজন অফিসারের ওপর নেমে এসেছে কোপ?  ত্রিফলা আলো দিয়ে শহর সাজানোর দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। পুরকর্তাদর প্রশ্ন, ত্রিফলা আলো নিয়ে বরাত দেওয়া থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ফাইল সই করে পাঠানো, সব কিছুই কি হয়েছিল মেয়রকে না জানিয়েই?
ত্রিফলা কেলেঙ্কারিতে ইন্টারনাল অডিটের দিকে আপাতত নজর সকলের। কিন্তু তাতেও কি সামনে আসবে সব তথ্য? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুরসভার অলিন্দ থেকেই।

.