ভ্যালি ডে-তে প্রেমে `উঠুন`!

আজ কে ভাই প্রেম দিবস। উহুঁ, উহুঁ, বিজ্ঞের মত নাক উঁচু করার কিস্যু নেই। প্রেমের নামে একটা দিনকে যদি উৎসর্গই করা হল, তাতে ছাই আপনার আঁতলামো এতটা আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে কেন? আরে বাবা প্রেমের একটা বিশেষ দিন থাকা মানে তো বছরের অন্য দিন গুলোতে ভালবাসাকে দূরছাই করা নয়, বরং তার অমোঘ আকর্ষণ কে আরও একবার মনের পশমে চিরদিনের জন্য আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখা। তবে, অনেক হয়েছে জ্ঞান বিতরণ, এই মাগ্যিগণ্ডার বাজারে বিনা পকেট হালকা করে এত কিছু পাওয়া যায় না মশাই। তবে হ্যাঁ, যেহেতু মনে প্রাণে বাঙালি তাই ফিরিতে পরামর্শ দেওয়ার লোভটাও সামলে রাখি কী করে বলুন? তাই ভালবাসা মাখা মিঠে কড়া রোদের দিনে প্রেমের জন্যই না হয় কিছু টিপস দেওয়াই গেল। (এক ঢিলে দুই পাখি মারা আর কী! কিপটে বদনাম ঘোচানো আর প্রাজ্ঞতা প্রমাণের এ অসাধারণ সুযোগ কোন হতাভাগা মিস করে বলুন!)

Updated By: Feb 14, 2014, 01:43 PM IST

আজ কে ভাই প্রেম দিবস। উহুঁ, উহুঁ, বিজ্ঞের মত নাক উঁচু করার কিস্যু নেই। প্রেমের নামে একটা দিনকে যদি উৎসর্গই করা হল, তাতে ছাই আপনার আঁতলামো এতটা আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে কেন? আরে বাবা প্রেমের একটা বিশেষ দিন থাকা মানে তো বছরের অন্য দিন গুলোতে ভালবাসাকে দূরছাই করা নয়, বরং তার অমোঘ আকর্ষণ কে আরও একবার মনের পশমে চিরদিনের জন্য আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখা। তবে, অনেক হয়েছে জ্ঞান বিতরণ, এই মাগ্যিগণ্ডার বাজারে বিনা পকেট হালকা করে এত কিছু পাওয়া যায় না মশাই। তবে হ্যাঁ, যেহেতু মনে প্রাণে বাঙালি তাই ফিরিতে পরামর্শ দেওয়ার লোভটাও সামলে রাখি কী করে বলুন? তাই ভালবাসা মাখা মিঠে কড়া রোদের দিনে প্রেমের জন্যই না হয় কিছু টিপস দেওয়াই গেল। (এক ঢিলে দুই পাখি মারা আর কী! কিপটে বদনাম ঘোচানো আর প্রাজ্ঞতা প্রমাণের এ অসাধারণ সুযোগ কোন হতাভাগা মিস করে বলুন!)

তবে আমার পরামর্শ কী করিয়া প্রেম করিবেন, তা নয়, আরে গুরু, প্রেম করছেন অনেক দিন হল, আজকের দিনে বহুদিন ধরে জোর করে টেনে নিয়ে ক্লিশে হওয়া প্রেমটা ভেঙে দেখুন, আপনার দিল, দরিয়ায় পরিণত হবেই। আর সেই দরিয়াতে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য আরও কত নতুন পুত্র,কন্যে অপেক্ষা করে আছে তারও খোঁজ পেয়ে যাবেন সেই তালে।

১) আপনার প্রেমিকা হেব্বি ন্যাকা বা আপনার প্রেমিকটি অতি পাকা। আপনার সব ব্যাপারেই নাক গলাতে ওস্তাদ। আপনি কী করবেন, কোথায় যাবেন, কী রঙের জামা পরবেন, কী খাবেন, কতক্ষণ ঘুমোবেন...উফ তার ভোঁতা নাকের ভার্চুয়াল উঁচুপনায় আপনার প্রাণ যাকে বলে একেবারে হেল। কিন্তু ওই, সেই ইস্কুলের সময় থেকে প্রেম, ভালবাসার কুঁচিটুকুও অবশিষ্ট না থাকলেও সেরেফ ভয় আর অভ্যাসের বসে রোগা রোগা কাঁধে বিরাট বোঝা টেনে নিয়ে যাওয়া। এবার ছাইপাশ ভয় ভেঙে বেড়িয়ে আসুন। মনে রাখবেন জীবনটা কিন্তু আপোস করে চলে না। পরিবর্তন দরকার, দিদি, জীবনে পরিবর্তন দরকার। সব পরিবর্তন খারাপ হয় না কিন্তু! সাহসী হন। জানবেন প্রেমের দিনে পচে যাওয়া প্রেম ভেঙে বেরিয়ে আসার মানে কিন্তু আর একটা প্রেমের (অথবা একাধিক) জন্য দরজা খুলে যাওয়া। এবং না বলা প্র্যাকটিসে আনুন। এবারটা কাটিয়ে দিতে পারলে পরেরগুলোর ক্ষেত্রে ভরপুর কাজে লাগবে।

২) প্রেমিকের ফোন রাত ২টো অবধি ব্যস্ত থাকে। চুদুরবুদুরের সীমাটি বিপজ্জনক ভাবেই কিঞ্চিৎ বেশি। একটু বেশিই "নারীবাদী` আরকি। কিন্তু কিছু বলতে গেলেই বলেন বড় আপনি নাকি বড্ড সেকেলে, মাইন্ডের ওপেননেস নিয়েও গম্ভীর মুখে প্রচুর প্রশ্নবোধক চিহ্ন নিত্যদিন আপনার সামনে জড়ো করে। ব্যাকডেটেড তকমার ভয়ে আপনিও মুখ খোলেন না। কিন্তু বয়ফ্রেন্ডের অভ্যাসগুলিও আর মেনে নিতে পারছেন না। পরিষ্কার কাটিয়ে দিন। নিজেকে বলুন আপনার "অতি আধুনিক` প্রেমিকের দরকার নেই। বরং নিজে আধুনিক হন। বয়ফ্রেন্ডের নাকের ডগায় অন্য পুরুষের (অথবা মহিলা) সঙ্গে ডেটিং-এ যান। নিজেকে ও আপনার "প্রাক্তন` বয়ফ্রেন্ডকে বুঝিয়ে দিন আধুনিকতার অর্থ সঙ্গিনীর মনকে দুমড়ে মুচড়ে নিজের কেত প্রতিষ্ঠা নয়। একই জায়গায় নিজেকে অকারণ বেঁধে রাখার পরিবর্তে একাধিক ট্রাই করুন। দেখুন কে আসলে আপনার মনের মত। কে আপনাকে বুঝছে। কে আপনার ইমোশনের যোগ্য মর্যাদা দিচ্ছে। তারপর ভেবে চিন্তে বহু অপশনের মধ্যে আপনার ঠিকঠাক মনের মানুষকে খুঁজে নিন। আর এই শুভ কাজের শুরুর জন্য `ভ্যালি`-ডে -এর থেকে আদর্শ দিন আর কবে হতে পারে বলুন?

৩) প্রেমিকটা কি অতি পজেসিভ? চলতে ফিরতে আপনি কোন মেয়ের সঙ্গে কটা কথা বললেন, কার দিকে কত সেকেন্ড তাকালেন, ফোনের বিপরীতে বন্ধুটি মহিলা না পুরুষ তার পাই টু পাই হিসেব নিকেশ দিতে হয় নিত্যদিন? ঝেড়ে ফেলুন, মশাই, এমন প্রেমিকাকে ঝেড়ে ফেলুন, স্রেফ। আরে বন্ধুদেরও যে জেন্ডার দিয়ে হিসেব করে তার সঙ্গে প্রেম হতে পারে না। আর একটা প্রেম করেছেন বলে অন্য মেয়েদের দিকে তাকাবেন না, এমনটা হয় নাকি? আপনি কি মশাই রিসাইক্লিং বোতল নাকি? ঘুরেফিরে একই দিকে ধাবিত হবেন? এসব ফালতু দাবিকে আর জীবনের অকারণ অঙ্গ করবেন না। প্রেমটা চাপে চিপটে গিয়ে জমতে পারে না। ভালবাসার এই পবিত্র দিনে আপনার অধুনা প্রেমিকাটিকে টাটা বাইবাই করুন। পরিষ্কার বলুন তোকে আমার পোষাচ্ছে না, নিজের পথ দেখ। আর আপনিও স্বাধীনভাবে মুক্তমনে গুছিয়ে মেয়ে দেখুন। এটা আপনার democratic right। কারোর জন্যই প্লিজ, একে বিসর্জন দেবেন না।

৪) ধূর, জীবনে একটি মাত্র প্রেমেই আটকে গেলেন? করলেনটা কী? গুডি গুডি ইমেজ আর "আমি তুমি অন্ত প্রাণ` এই চরম মিথ্যে কথাটি ছাড়া এতে প্রমাণ হয় না আর কিচ্ছুটি। প্রাণ নতুন কিছুর জন্য হাঁকুপাঁকু করলেও ওই যে ইমেজ তাতেই আটকে গেলেন আপনি। সব ভেঙে চুরে বেড়িয়ে আসুন। গলা খুলে বলুন আর পোষাচ্ছে না। খুচরো করুন, খুচরো। খুচরো প্রেমে নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। প্রেম দিবসের সকালটা যদি একজনের নামে নিবেদিত করেন, বিকেলটা তবে অন্যজনের জন্য ফাঁকা রাখুন। সন্ধেতে বেড়িয়ে পড়ুন আরেক জনের হাত ধরে। খরচটা যদি বেশি পড়বে তিন সিফটে নিজেকে ভাগ করতে, কিন্তু এতে মনের যে প্রশান্তি আপনি পাবেন, আহা, তার তুলনা সে যে খালি নিজেই। আর রাতেও যদি প্রেমের ঘোর চোখে লেগে থাকে, ভয় না পেয়ে এগিয়ে যান। যৌথ সম্মতিক্রমে সব কিছুই বিলকুল ঠিক। তাতে যে যা খুশি বলুক বা ভাবুক। আপনার জাস্ট বয়েই গেল। খালি বুলা দি ও তাঁর অমৃতবচন জাস্ট মাথায় রাখবেন। তাহলেই সব মুশকিল এক্কেবারে আসান।

পুনশ্চঃ কোনও কিছু ভাঙার থেকে কোনও কিছু গড়া অনেক কঠিন। আপনার বুদ্ধির উপর অগাধ আস্থা রেখে উপরে উক্ত প্রেমময় ছ্যাবলামোটা করলাম। আমার কাজটুকু এখানে শুধুই দাতার। গ্রহণ বা বর্জনের দায়িত্ব আপনার এক্কেবারে। কাজে আসলে, মেনে নিলে মনে রাখবেন এ আসলে পরামর্শদাতার প্রাজ্ঞতা। আর ফেল করলে জানবেন আপনার ক্যালি নেই। ব্যাস। এবারের মত এখানেই ইতি।

.