টুইটারে যুদ্ধ: #মোদীইনসাল্টসইন্ডিয়া Vs #মোদীইন্ডিয়াসপ্রাইড

যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল ১৮ মে। সন্ধে ৬টা নাগাদ। সূত্রপাত আপাত দৃষ্টিতে সাধারণ টুইটের মাধ্যমে। সেই এক টুইটেই যে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে এভাবে রে রে করে অস্ত্র শানাবে তা কে আর জানত!

Updated By: May 20, 2015, 06:19 PM IST
টুইটারে যুদ্ধ: #মোদীইনসাল্টসইন্ডিয়া Vs #মোদীইন্ডিয়াসপ্রাইড

ওয়েব ডেস্ক: যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল ১৮ মে। সন্ধে ৬টা নাগাদ। সূত্রপাত আপাত দৃষ্টিতে সাধারণ টুইটের মাধ্যমে। সেই এক টুইটেই যে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে এভাবে রে রে করে অস্ত্র শানাবে তা কে আর জানত!

হ্যাশট্যাগ #মোদীইনসাল্টসইন্ডিয়া-র অধীনে দু'দিন আগে সন্ধে বেলা যে টুইটটি জন্ম হয়, ওই দিন মধ্যরাতের মধ্যে সেই টুইটটির রিটুইটের সংখ্যা ৮ হাজার ছাপিয়ে যায়।

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালিটিক টুল, টকওয়াকার রীতিমত ডেটা পেশ করে দেখিয়েছে মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে ওই '#'-এর ব্লুম হয় টুইটারে। যে ব্লুম মাইক্রোব্লগিং সাইটের সীমানা টপকে ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকেও।

চিন সফরে সাংহাইতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেন তিনি এ দেশের শাসনভার দখলের আগে ভারতে জন্মাবার জন্য সবাই নাকি দুঃখিত ছিলেন। ''ভারতে জন্মাবার জন্য এ দেশের নাগরিকরা আগে লজ্জিত হতেন। এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। গত বছর সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয়রা নিজেদের দেশ নিয়ে গর্ব বোধ করেন।''

দিন দুই আগে সিওলেও নিজের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

মোদীর মন্তব্যের বিরোধীতা করে টেক স্যাভি জেন ওয়াই ভারতীয়রা প্রাথমিকভাবে বেছে নেন সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফর্মকেই।

#মোদীইনসাল্টসইন্ডিয়া ১৮ তারিখ অন্তর্জালের দুনিয়া দাপিয়ে বেড়ালেও, ১৯ তারিখ সকাল থেকেই পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। মোদী পন্থীরা কোমর বেঁধে টুইটারের ময়দানে নেমে পড়েন। তৈরি হয় নয়া এক হ্যাশট্যাগ। #মোদীইন্ডিয়াসপ্রাইড। দুই হ্যাশট্যাগের যুদ্ধে সরগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া।  

দু'টি '#' প্রায় সমানে সমানে পাল্লা দেয় একে অপরের সঙ্গে। ট্রেন্ডের নিরিখে একবার এ' এগিয়ে গেলে, কিছু ক্ষণের মধ্যে অন্যটি তাকে পিছনে ফেলে দেয়।

দিন দুয়েকের এই '#' যুদ্ধ এখন কিছুটা স্তিমিত। তবে এই অনলাইন ব্যাটেল প্রমাণ করে দিল বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি কীভাবে নিজেদের স্ট্রাটেজিকে প্রতিষ্ঠিত করতে হাত ধরছে অন্তর্জালের।

এই মুহূর্তে দেশে কোনও বড়সর নির্বাচন নেই। নেই রাস্তায় নেমে মাইক হেঁকে প্রচারের সম্ভাবনা। সংসদে ল্যান্ড বিল নিয়ে তর্কাতর্কি চললেও সম্মুখ সমরের সুযোগ কম। কিন্তু, তাই বলে কি কোনও পক্ষ চুপ করে থাকবে? নিশ্চই নয়। তথাকথিত শিক্ষিত নয়া জেনেরশনকে কাছে টানতে সোশ্যাল মিডিয়ার বিকল্প যে এই মুহূর্তে নেই সে বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত ডান, বাম সব পক্ষই। ইন্টারনেট ব্যবহারের নিরিখে ভারত এখন পৃথিবীতে তৃতীয়। তাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের থেকে মুখ ফেরানো মানে দেশের একটা বৃহৎ সেকশনের থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখা, সেটা বুঝেছেন সকলেই।  লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী আর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেজরিওয়ালের ডিজিটাল প্রচার যে ঠিক কতটা ফলপ্রসূ হয়েছিল বর্তমানই তার প্রমাণ।

সোশ্যাল মিডিয়াকে ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলি ঠিক কতটা সিরিয়াসলি নিচ্ছে তার প্রমাণ যদি কেউ আরও ভাল করে চান তাহলে গত মঙ্গলবারে টুইটারে থ্রিলা-য় একবার নজর দিয়ে আসুন। উত্তর আপনার অপেক্ষাতেই বসে আছে...

 

.