মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে রাহুলের ঘনঘন মন্দির যাত্রা নিয়ে উঠল প্রশ্ন

কংগ্রেসের 'নরম হিন্দুত্বে'র কৌশল নিয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের।

Updated By: Jul 12, 2018, 09:24 PM IST
মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে রাহুলের ঘনঘন মন্দির যাত্রা নিয়ে উঠল প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদন: মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে 'নরম হিন্দুত্ব' নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল কংগ্রেসকে। বুধবার দিল্লিতে মুসলিম প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাহুল গান্ধী। ওই বৈঠকে কংগ্রেসের 'পরিবর্তিত' অবস্থান নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। সাম্প্রতিক নির্বাচনে ঘনঘন রাহুলের মন্দিরযাত্রা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা।  

রাহুল গান্ধীর সামনে মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের অভিযোগ, গত লোকসভা ভোটে বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে হিন্দুদের ভোট। সেই ভোট টানার লক্ষ্যেই 'নরম হিন্দুত্বে'র পন্থা নিয়েছে কংগ্রেস। এতে আশঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দেশের মুসলিমরা। জানা যাচ্ছে, এরপরই রাহুল গান্ধী তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, দলের আদর্শের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করবেন না তিনি। কারও প্রতি অন্যায় হতে দেবে না কংগ্রেস। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, বিজেপির চিন্তাব ভাবনার প্রক্রিয়াতেই রয়েছে বিভাজন। অন্যদিকে কংগ্রেস সবাইকে নিয়ে চলতে চায়। 

মুসলিম প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের আলোচ্য বিষয় খোলসা করেনি কংগ্রেস। জানানো হয়েছিল, বৈঠকটি আনুষ্ঠানিক নয়। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন যোজনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য সায়েদা হামিদ, ঐতিহাসিক সৈয়দ ইরফান হাবিব, জেএনইউ-র অধ্যাপক জোয়া হাসান, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি জেকে ফাইজান, শিক্ষাবিদ ইলিয়াস মালিক, অবসরপ্রাপ্ত আমলা এএফ ফারুকি, প্রাক্তন মন্ত্রী সলমন খুরশিদ প্রমুখ।      

সূত্রের খবর, প্রায় দু'ঘণ্টার বৈঠকে রাহুলকে মন্দির দর্শন নিয়ে প্রশ্ন করে এক মুসলিম দম্পতি। রাহুল জবাব দেন, গির্জা ও মসজিদেও গিয়েছেন তিনি। তবে সংবাদমাধ্যম মন্দিরকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। মসজিদ ও গির্জায় যাওয়ার খবর 'চেপে দিয়েছে' সংবাদমাধ্যম। 

উল্লেখ্য, গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার থেকেই মন্দিরে মন্দিরে রাহুল গান্ধীর 'দেব'দর্শন উঠে এসেছিল সংবাদ শিরোনামে। নিজেকে শিবভক্ত বলেও দাবি করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সোমনাথ মন্দিরে রাহুলের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে বির্তকের পর সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা দাবি করেন, রাহুল গান্ধী পৈতেধারী হিন্দু। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর একে অ্যান্টনি বলেছিলেন, মুসলিম তোষণের ফলেই কংগ্রেস নিজের ধর্মনিরপেক্ষতা হারিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, হিন্দুদের আস্থা অর্জনে মন্দিরে মন্দিরে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন রাহুল গান্ধী। গুজরাটের পর কর্ণাটকেও তার অন্যথা হয়নি। এমনকি কৈলাস মানসরোবর যাত্রার কথাও বলেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। ফলে মনে করা হচ্ছে, মুসলিম প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে কার্যত উভয়সঙ্কটে পড়েছেন রাহুল গান্ধী। একদিকে হিন্দু ভোট, অন্যদিকে কংগ্রেসের চিরাচরিত সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক- কীভাবে এই দুই দিকের ভারসাম্য রক্ষা করেন সনিয়া তনয়, সেটাই এখন দেখার। 

আরও পড়ুন- জেলায় জেলায় শরিয়ত আদালতের পক্ষে সওয়াল প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির

.