মাকে 'ডাইনি' বললেও বাবার প্রতি আত্মিক টান ছিল শিনার, বলছে ডায়েরি

কেন খুন হলেন শিনা? হত্যার পিছনে কে কে আছে? বাবা সিদ্ধার্থ দাসের সঙ্গে কতদিন যোগাযোগ ছিল? কেমন ছিল সেই সম্পর্ক?  হত্যা রহস্য সামনে আসার সপ্তাহখানেক পরেও এই প্রশ্নের উত্তর অজানাই।  শিনার ডায়েরি হাতে আসায় বেশ কিছু মিসিং লিঙ্ক উদ্ধার হতে পারে বলে মনে করছে মুম্বই পুলিস। সেই ডায়েরিতে শিনার মনের টানাপোড়েন স্পষ্ট।

Updated By: Sep 3, 2015, 08:04 PM IST
মাকে 'ডাইনি' বললেও বাবার প্রতি আত্মিক টান ছিল শিনার, বলছে ডায়েরি

ওয়েব ডেস্ক: কেন খুন হলেন শিনা? হত্যার পিছনে কে কে আছে? বাবা সিদ্ধার্থ দাসের সঙ্গে কতদিন যোগাযোগ ছিল? কেমন ছিল সেই সম্পর্ক?  হত্যা রহস্য সামনে আসার সপ্তাহখানেক পরেও এই প্রশ্নের উত্তর অজানাই।  শিনার ডায়েরি হাতে আসায় বেশ কিছু মিসিং লিঙ্ক উদ্ধার হতে পারে বলে মনে করছে মুম্বই পুলিস। সেই ডায়েরিতে শিনার মনের টানাপোড়েন স্পষ্ট।

২০০৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি শিনা লিখছেন---

"আজ আমার হ্যাপি বার্থ ডে। কিন্তু আমি একটুও হ্যাপি নয়। জীবনে আমি কিছুই পাইনি। নাথিং। মনে হচ্ছে আমার ভবিষ্যত্‍ অন্ধকার। চারদিক থেকে হতাশা আমায় গ্রাস করছে। অত্যন্ত বিরক্তিকর জীবন। আমি মাকে ঘৃণা করি। সে আমার মা নয়, সে একটা ডাইনি।"
--------------------------------
ডায়েরি বলছে মায়ের প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ পেলেও বাবা সিদ্ধার্থ দাসের প্রতি বেশ নরম শিনা। ডায়েরির পাতা জুড়ে বাবার সঙ্গে মান-অভিমানের নানা ছবি ।

শিনা লিখছেন----------
"ড্যাডি, তোমার উপর আমি খুব রেগে আছি। এটা ঠিক যে আমি তোমাকে চিঠি লেখার সময় পাই না। কিন্তু তোমার আমাকে চিঠি লেখা উচিত্‍। তুমি তো জান বাবা, ক্লাস টেনে পড়ার কত চাপ। সকাল সাড়ে সাতটায় আমি স্কুলে যাই। বিকেল ৩টে থেকে সাড়ে চারটে পর্যন্ত অঙ্কের কোচিং করতে হয়। সন্ধে ৬টা থেকে ৮টা সায়েন্সের কোচিং থাকে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে আটটা । তুমি নিশ্চয় বুঝতে পারছ আমাকে কতটা খাটতে হয়।"
--------------------------------
"ড্যাডি, আমি হাত-পায়ের নখ কেটেছি। বড় হতে দিইনি। আমি তোমার কথা শুনেছি। আমি জানি তোমারও আমাকে অনেক কিছু বলার আছে। কিন্তু দোহাই চিঠিতে কিছু লিখ না। আমি আশা করি আমার HSLC পরীক্ষার আগে তুমি একবার আসবে।  ডিসেম্বরে একবার তুমি গুয়াহাটিতে এসো না। তখন না হয় তুমি যা বলতে চাও বলো।"
----------------------------------------
সমস্যার কথাও বাবা সিদ্ধার্থ দাসের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন শিনা। শিনা লিখেছেন-

"জানো ড্যাডি, আসলে আমি একটা সমস্যার মধ্যে রয়েছি। HSLC পরীক্ষার জন্য আমাদের একটা ফর্ম ফিল আপ করতে দিয়েছে। তাতে কাস্টের একটা কলম রয়েছে।  এখানে ST, SC, OBC সহ আরও কয়েকটি অপশন রয়েছে। বলো না বাবা আমি কোন কাস্টের?"
---------------------------------------
আবার কখনও বাবার প্রতি অনুযোগ ধরা পড়েছে শিনার লেখায়। ডায়েরিতে শিনা লিখেছেন-

"ড্যাডি, অন্যের উপর নির্ভরশীল না হয়ে তুমি নিজে কিছু করতে পারো না? ওই চাকরিটা ছেড়ে তুমি ভাল চাকরি খোঁজ। তোমাকে উপদেশ দেওয়ার মতো শোনাচ্ছে না ড্যাডি! তুমি রাগ কোরো না।"

দু'দিন আগেই সিদ্ধার্থ দাস দাবি করেছিলেন, শিনা যখন ক্লাস টেনে পড়ে তখন শেষবার তার সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু শিনার এই ডায়েরিতে তার বাবাকে লেখা চিঠি বা বাবার সম্পর্কে তার যে ভাবনা, তাতে দুজনের সম্পর্ক যে কতটা গভীর ছিল তা স্পষ্ট বোঝা যায়। তাই পুলিস মনে করছে দীর্ঘদিন পর্যন্ত বাবা সিদ্ধার্থর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল শিনার। বুধবার সিদ্ধার্থকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিস। সিদ্ধার্থর জবাবে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলেও মনে করছে পুলিস।

 

.