বাল্টিমোর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল নিউ ইয়র্ক থেকে বস্টন, বিক্ষোভে সামিল ফিলাডেলফিয়াও

বাল্টিমোর কাণ্ডের প্রতিবাদে বস্টন ও নিউ ইয়র্কের রাস্তায় নামলেন শয়ে শয়ে মানুষ। বাল্টিমোরে হেফাজতে থাকাকালীন পুলিসের অকথ্য অত্যাচারের জেরে মৃত্যুর হয় ফ্রেডি গ্রে নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির।  এই মুহূর্তে সেই সেই পুলিসি নির্যাতনের প্রতিবাদে সরব গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফিলাডেলফিয়াতেও অ্যাক্টিভিস্টরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।  

Updated By: Apr 30, 2015, 04:56 PM IST
বাল্টিমোর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল নিউ ইয়র্ক থেকে বস্টন, বিক্ষোভে সামিল ফিলাডেলফিয়াও
Photo courtesy: Reuters

ওয়েব ডেস্ক: বাল্টিমোর কাণ্ডের প্রতিবাদে বস্টন ও নিউ ইয়র্কের রাস্তায় নামলেন শয়ে শয়ে মানুষ। বাল্টিমোরে হেফাজতে থাকাকালীন পুলিসের অকথ্য অত্যাচারের জেরে মৃত্যুর হয় ফ্রেডি গ্রে নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির।  এই মুহূর্তে সেই সেই পুলিসি নির্যাতনের প্রতিবাদে সরব গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফিলাডেলফিয়াতেও অ্যাক্টিভিস্টরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।  

বুধবার রাতে বিক্ষোভে সামিল হওয়ার 'অপরাধে' অন্তত ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে নিউ ইয়র্ক পুলিস। রাস্তায় মিছিল করলেই আটক করা হবে। রীতিমত লাউড স্পিকারে হেঁকে হেঁকে এই কথা ঘোষণা করা হয় পুলিসের তরফ থেকে।

ম্যানহাটানের ইউনিয়ন স্কোয়ার থেকে গতকাল প্রথম মিছিলটি শুরু করেন   বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের গলায় তখন স্লোগান ''নো জাস্টিস, নো পিস'', ''হ্যান্ডস আপ, ডোন্ট শ্যুট''। স্লোগানের ভাষাতেই বয়ানেই স্পষ্ট, এই প্রতিবাদে আরও একবার উঠে এসেছে গত বছর মিসৌরিতে শ্বেতাঙ্গ পুলিসের গুলিতে খুন হওয়া কৃষ্ণাঙ্গ কিশোর মাইকেল ব্রাউনের প্রসঙ্গও।  

এক দল বিক্ষোভকারীরা মূল রাস্তায় নেমে যান চলাচলে বাধা দেন। পুলিসও সক্রিয়ভাবে আটক করা শুরু করে।

বস্টনে পুলিস হেডকোয়ার্টারের বাইরেই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সামিল হন সাধারণ মানুষ।

''আমি ও আমার পরিবার বাল্টিমোরের পাশে আছি, আমরা ফার্গুসনের পাশে আছি। চরম বাড়াবাড়ি হচ্ছে। সবকিছু হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।'' মন্তব্য নিকেয়া রামসে-এ। ২০১২ সালে বস্টন পুলিসের সঙ্গে এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিলেন নিকেয়ার ভাই বারেল।

মানবাধিকার সংগঠন আরবান লিগ অফ ইস্টার্ন মাসাচুসেটস-এর সিইও ডারেল উইলিয়াম জানিয়েছেন ''শান্তি পূর্ণ জমায়েত ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট অনুযায়ী মানুষের অধিকার। আমরা সারা পৃথিবী জানাতে চাই কাল মানুষদের জীবন মূল্যবান (#BlackLivesMatter), আমরা জানাতে চাই সমস্ত জীবন মূল্যবান (#AllLivesMatter)''।

এখনই মুক্ত করা হোল বাল্টিমোরের ৩০০ জন প্রতিবাদীকে। শহর থেকে অবিলম্বে তুলে নেওয়া হোক কারফিউ, এমারজেন্সি। দাবি জানিয়েছে, বহু মানবাধিকার সংগঠন।

গত ডিসেম্বরে ফিলডেলফিয়ায় পুলিসের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন ব্র্যান্ডন টেট ব্রাউন। ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির দাবি ছিল সাক্ষ্য প্রমাণ অনুযায়ী ব্রাউনের গাড়িতে গুলি ভর্তি পিস্তল ছিল। তাই তার উপর বাধ্য হয়ে গুলি চালায় পুলিস। কিন্তু নতুন এক মামলা দায়ের করে অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত পুলিস অফিসার ব্রাউনকে মেরে তাঁর গাড়িতে নিজেই পিস্তল রেখে দিয়েছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিসি নির্যাতনের অভিযোগ নতুন নয়। তবে মাউকেল ব্রাউনের মৃত্যুর পর এর সঙ্গে পুলিস এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি বর্ণবৈষম্যের অভিযোগও ওঠে। এরপর একের পর এক ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে থাকে। বাড়তে থাকে মানুষের ক্ষোভ।

''তুমি যদি কাউকে মেরে ফেল, সেটা খুন। কিন্তু পুলিস যখন খুন করে, তার কোনও সাজাই হয় না। একের পর এক এই ধরণের ঘটনা দেশের যুব সম্প্রদায়কে বিক্ষুব্ধ করে তুলছে।'' মন্তব্য এক প্রতিবাদকারীর।

এই মাসে বাল্টিমোরের ফুটপাথ থেকে গ্রে নামের এক পুলিসকে গ্রেফতার করে পুলিস। যেখান থেকে গ্যারিকে গ্রেফতার করা হয় সেখানে ড্রাগের চরম রমরমা। পুলিসের দাবি তাদের দেখে পালাবার চেষ্টা করেছিল গ্রে। মোবাইলে তোলা একটি ভিডিওতে অবশ্য দেখা যায়, গ্রেকে রাস্তায় হেঁচরাতে হেঁচরাতে জোর করে টেনে পুলিস ভ্যানে তোলা হয়।

পুলিস স্টেশনে বারবার চিকিৎসার অনুরোধ করেন গ্যারি। গ্রেফতার হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যান তিনি।

পুলিস জানিয়েছে মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়ে মারা গেছেন গ্রে। যদিও গ্রের পারিবারিক আইনজীবী জানিয়েছেন গ্রের ঘাড়ের কাছে মেরুদণ্ডের অংশ টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল।

 

 

 

.