আরব দুনিয়ায় মহরম যখন শোকপালন, মরক্কোয় উদযাপিত হয় আনন্দোত্‍সব অসুরা

ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাসে দশম দিনে পালিত হয় মহরম। আরব ও গোটা মধ্য প্রাচ্য এইদিন কারবালার উদ্দেশে এ দিন হা হুতাশ করলেও মরক্কোয় মহরম পালিত হয় একেবারে অন্যভাবে। ইদ অল আদাহ-র শেষে পালিত মহরম মরক্কোয় জমজম দিন বা অসুরা নামে পরিচিত।

Updated By: Nov 4, 2014, 12:50 PM IST
আরব দুনিয়ায় মহরম যখন শোকপালন, মরক্কোয় উদযাপিত হয় আনন্দোত্‍সব অসুরা
photo courtesy: www.barriebrewerphotography.com

ওয়েব ডেস্ক: ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাসে দশম দিনে পালিত হয় মহরম। আরব ও গোটা মধ্য প্রাচ্য এইদিন কারবালার উদ্দেশে এ দিন হা হুতাশ করলেও মরক্কোয় মহরম পালিত হয় একেবারে অন্যভাবে। ইদ অল আদাহ-র শেষে পালিত মহরম মরক্কোয় জমজম দিন বা অসুরা নামে পরিচিত।

শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের কাছে মহরম ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও মরক্কোর অসুরা আরব দুনিয়ার থেকে একেবারেই আলাদা। মরক্কোয় সব বয়সের মানুষই পালন করেন অসুরা। তবে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের অসুরা পালনের নিয়ম আলাদা। তবে সকলেই অসুরা উপভোগ করেন। প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে অসুরা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেও শিশুদের কাছে তা শুধুই আনন্দোত্‍সব।

গত দুই, তিন দশক ধরে মরক্কোর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে অসুরা উদযাপন। আগে শুধু মরক্কোর দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলেই উদযাপিত হত অসুরা। এই অঞ্চলের প্রতিটি আদিবাসী গোষ্ঠী অসুরার আগের দিন গরু বা মোষ বলি দেয়। এরপর সারারাত জেগে চলে খেলা। ভোর পর্যন্ত স্থানীয় আহওয়াচ বা আহিদাস খেলায় মেতে ওঠে তারা। প্রতিটি আদিবাসী গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীকে নিমন্ত্রণ জানায়। শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করা, সকলেই সারাদিন ধরে একে অপরের গায়ে জল ছিটিয়ে উদযাপন করে অসুরা। প্রত্যেককে নিজের বালতিতে কাছেপিঠের নদী বা সরোবর থেকে জল ভরে আনতে হয়। যতক্ষণ না সব আদিবাসী গোষ্ঠী জল ছেটানোর খেলায় অংশ নিচ্ছে ততক্ষণ চলত খেলা।

তবে এখন অসুরা উদযাপনে এসেছে অনেক পরিবর্তন। অসুরা শীতকালে হওয়ায় ঠান্ডা জল ঢাললে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন মানুষ। নষ্ট হয়ে যেতে পারে মোবাইল ফোনও। তাই জলের বদলে এখন ঢালা হয় অন্যান্য তরল পদার্থ বা তরল পানীয়। শহরাঞ্চলে মা, বাবারা ছোট ছেলেমেয়েদের মরক্কোর বাদ্যযন্ত্র তারিজাস কিনে দেন। ভোর থেকে শুরু হয় শিশুদের তারিজাস প্যারেড। একে বলা হয়, "হেক বাবা আকর।" প্রতিটা ঘরের দরজায় গিয়ে শিশুরা ড্রাই ফ্রুট, কেক অথবা খুচরো পয়সা চায়। যখন কিছু পয়সা হয় তখ সেই পয়সায় ডিম কিনে বন্ধুদের সঙ্গে ডিম ছোড়াছুড়ি করে। এখন শুরু হয়েছে বাজি পোড়ানোর চলও।

প্রাপ্তবয়স্করা এইদিন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে নেমন্তন্ন করেন। ফাকিহা, অর্থাত্‍ প্লেট ভর্তি শুকনো ফল, খেজুর ও মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় তাদের। মরহমের মাসের নবম ও দশম দিন অনেক সুন্নি উপবাস রাখেন। গরীব ও অনাথ শিশুদের জন্য এ দিন দানধ্যানও করে থাকেন মরক্কোর মানুষ। অসুরা উদযাপন শুরু করেছিল মরক্কোর ইহুদিরা।

 

.