মৃত্যুর হাতছানিকেও হেলায় হারিয়ে, জীবনের পথে চার মাসের সন্তান

বোধনেই বাড়ি ফেরা। ফিরল প্রাণ। ফিরল মুখের হাসি। কে বলে মানুষ আর মানবিক নয়? তমলুকের এক নার্সিংহোম কিন্তু দেখিয়ে দিল, এ সমাজ এখনও হৃদয় দিয়েই ভাবে। আর ভাবে বলেই বেঁচে যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের তপন খামরাই, মিতা খামরাইরা। মৃত্যুর হাতছানিকেও হেলায় হারিয়ে, জীবনের পথে ফিরেছে খামরাই দম্পতির চার মাসের সন্তান। তবে গল্প এখানে শেষ নয়। সবে শুরু। 

Updated By: Oct 7, 2016, 08:17 PM IST
মৃত্যুর হাতছানিকেও হেলায় হারিয়ে, জীবনের পথে চার মাসের সন্তান

ব্যুরো: বোধনেই বাড়ি ফেরা। ফিরল প্রাণ। ফিরল মুখের হাসি। কে বলে মানুষ আর মানবিক নয়? তমলুকের এক নার্সিংহোম কিন্তু দেখিয়ে দিল, এ সমাজ এখনও হৃদয় দিয়েই ভাবে। আর ভাবে বলেই বেঁচে যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের তপন খামরাই, মিতা খামরাইরা। মৃত্যুর হাতছানিকেও হেলায় হারিয়ে, জীবনের পথে ফিরেছে খামরাই দম্পতির চার মাসের সন্তান। তবে গল্প এখানে শেষ নয়। সবে শুরু। 

চারদিকে আলোর রোশনাই। উত্‍সবের মাদকতা। হাজার হোক, দুর্গাপুজো বলে কথা। বছরভর অপেক্ষার ফল। দেবীর বোধনেই, প্রাণের বোধন হল চার মাসের তুষারেরও। 

নাম তুষার খামরুই। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড থানা এলাকার নীচনাড়ুয়া-কলাকারী গ্রামের বাসিন্দা তপন ও মিতা খামরুইয়ের স্বপ্নের ধন। কিন্তু জীবন ঠিকমতো শুরুর আগেই, শুরু হয়ে যায় লড়াই। গতমাসে হঠাত্‍ করেই জটিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয় চার মাসের তুষার। চিকিত্‍সার জন্য ছেলে কোলে কলকাতার উদ্দেশে রওনাও দেন তপন ও মিতা খামরুই। গন্তব্য ছিল এনআরএস হাসপাতাল।
  
কিন্তু মাঝপথে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তড়িঘড়ি ভর্তি করিয়ে দিতে হয় তমলুকের একটি নার্সিংহোমে। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় চিকিত্‍সা। মাত্র চারদিনের মধ্যে মেডিক্যাল বিলের অঙ্ক ছাড়িয়ে যায় লক্ষাধিক টাকার গণ্ডি। সামান্য একশো দিনের কাজের শ্রমিক তপন ও মিতা খামরুই। নুন আনত পান্তা ফুরোয় সংসারে। সেখানে তুষারের জটিল রোগ ঘুম কেড়ে নেয় সবার। ICU- তে ভর্তি তুষারের জন্য জলের মতো বেরিয়ে যেতে শুরু করে টাকা। এর মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় ছেলের কথাবার্তাও।

একদিকে ছেলের মৃত্যু-আশঙ্কা, অন্যদিকে বাড়তে থাকা বিলের বোঝা।দুইয়ের জোড়া ফলায় বিধ্বস্ত খামরাই দম্পতি নার্সিংহোম ছেড়ে পালিয়ে যান। তমলুক থানার পুলিসকে খবর দেয় নার্সিহোম কর্তৃপক্ষই। নির্দেশ আসে, শিশুর চিকিত্‍সা জারি রাখার। 

পুজোর মাঝেই অবশেষে এল সেই সুখবর। সুস্থ তুষার। বাড়ি যাওয়ার জন্য ফিট। এরই মধ্যে পুলিসও খুঁজে বের করে, তার বাবা-মা'কে। পুজোর সুরে, মানবিকতার ছন্দে তাল মিলিয়েই, শিশুর চিকিত্‍সার পুরো খরচ মকুব করে দিয়েছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। কাহিনীর হ্যাপি এন্ডিং। এর চেয়ে বেশি আর কি কিছু চাওয়ার ছিল...!

.