পুরভোটের বাংলায় চতুর্দিকে শুধুই ঘাসফুল ফুটল

পঞ্চায়েতের পর পুরভোট। এবারও ঘাসফুলেই আস্থা রাখল রাজ্য। কলকাতা সহ রাজ্যের ৯২টি পুরসভার ভোটে দাপট  বজায় রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। আগেরবারের চেয়েও বেশি আসন দখল করে একটানা দ্বিতীয়বার কলকাতা পুরসভা দখলে রাখতে চলেছে শাসকদল।

Updated By: Apr 28, 2015, 06:16 PM IST
পুরভোটের বাংলায় চতুর্দিকে শুধুই ঘাসফুল ফুটল
Photo courtesy: AITC offecial website

ব্যুরো: পঞ্চায়েতের পর পুরভোট। এবারও ঘাসফুলেই আস্থা রাখল রাজ্য। কলকাতা সহ রাজ্যের ৯২টি পুরসভার ভোটে দাপট  বজায় রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। আগেরবারের চেয়েও বেশি আসন দখল করে একটানা দ্বিতীয়বার কলকাতা পুরসভা দখলে রাখতে চলেছে শাসকদল।

সারদা, রোজভ্যালি ছিল।  ছিল মুকুল কাঁটাও। কিন্তু, ভোটযন্ত্রে তার কোনও প্রভাবই পড়ল না। রাজ্যের শহুরে মানুষ মূলত আস্থা রাখলেন ঘাসফুলেই।

আগের বারের চেয়েও আসন বাড়িয়ে এবার কলকাতা পুরসভা দখলে রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। বিদায়ী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মুখের হাসি চওড়া করে আরও কোণঠাসা বিরোধী শিবির। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১৪টি পেয়েছে তৃণমূল। বামেদের থামতে হয়েছে ১৫-য়। শেষলগ্নে রূপা গাঙ্গুলিকে প্রচারে নামিয়ে পালে হাওয়া টানার চেষ্টা করলেও, তিলোত্তমার ভোটারদের মন কাড়তে পারেনি বিজেপি। পদ্মশিবিরের ঝুলিতে গেছে ৭টি ওয়ার্ড। বেহাল দশা কংগ্রেসেরও। পাঁচটি ওয়ার্ড নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। অন্যান্যরা জয়ী হয়েছেন ৩টি আসনে।

কলকাতা পুরসভা

মোট ওয়ার্ড     তৃণমূল        বাম    কং   বিজেপি     অন্যান্য
১৪৪           ১১৪         ১৫    ৫      ৭                 ৩

বিরোধীদের কোণঠাসা দশায় স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেত্রী।

কলকাতার মতোই রাজ্যের বাকি অংশেও জোড়াফুলের রমরমা। বাকি একানব্বইটির মধ্যে উনসত্তরটি পুরসভা  নিজেদের দখলে রেখেছে শাসক দল। বামেদের দখলে গেছে ৬টি পুরসভা। কংগ্রেস পেয়েছে পাঁচটি। ত্রিশঙ্কু রয়েছে ১১টির ভাগ্য।

রাজ্যের বাকি পুরসভা
মোট আসন    তৃণমূল     বাম    কং   বিজেপি    ত্রিশঙ্কু
  ৯১           ৬৯       ৬          ৫       ০      ১১        

উত্তর-দক্ষিণে জোড়াফুল

ঘাসফুলের একচেটিয়া দাপটের মাঝে বামেদের কিছুটা  মুখরক্ষা করেছে উত্তরবঙ্গ। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকে সারথী করে এবার শিলিগুড়ির প্রেস্টিজ ফাইটে নেমেছিল বামেরা। লক্ষ্যে পূরণে সফল তারা। শিলিগুড়িতে পুরবোর্ড গঠন করতে চলেছে বামেরা। কোচবিহারের দিনহাটা পুরসভাও দখল এসেছে তাদের।  এর বাইরে উত্তরবঙ্গের বাকি অংশ জুড়ে সবুজের রমরমা। কংগ্রেসের পালের বাতাস কেড়ে ইংরেজবাজার পুরসভা এসেছে তৃণমূলের দখলে। ওল্ড মালদাতেও বোর্ড গঠনের পথে তৃণমূল। গঙ্গারামপুর,  তুফানগঞ্জ, মাল, জলপাইগুড়ি পুরসভারও দখল নিয়েছে শাসক দল।  মুর্শিদাবাদ ও কান্দি পুরসভার দখল নিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু, মুর্শিদাবাদ পেরিয়ে যত দক্ষিণবঙ্গের দিকে এগোনো গেছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সবুজের দাপট। নদিয়া থেকে সাগর শুধুই ঘাসফুলের রমরমা। কাঁথি, আরামবাগ, নৈহাটিতে বিরোধীশূন্য পুরবোর্ড গঠন করতে  চলেছে তৃণমূল।বিরোধীদের প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের  রাশ হাতে রেখেছে শাসকদল। কাঁচড়াপাড়া, হালিশহর,ভাটপাড়া, ব্যারাকপুর, টিটাগড়, কামারহাটি  সব পুরসভাতেই বিরোধীদের কপালে জুটেছে হাতে গোটা কয়েকটি আসন। সবুজ আবির উড়েছে  নদিয়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়াতেও। দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে শুধু তাহেরপুর, জঙ্গিপুর, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, দাঁইহাটে  নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পেরেছে বামেরা। সবমিলিয়ে দুবছর আগে গ্রামবাংলার রায়েই ফের একবার শিলমোহর দিলেন শহুরে ভোটাররাও।  

 

.