ইস্টবেঙ্গল কর্তা এখন সিবিআইয়ের জালে, কীভাবে উত্থান ময়দানের নীতুর?

Updated By: Aug 21, 2014, 10:15 PM IST
ইস্টবেঙ্গল কর্তা এখন সিবিআইয়ের জালে, কীভাবে উত্থান ময়দানের নীতুর?

দেবব্রত সরকার। খাতায় কলমে ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী কমিটির সদস্য। কিন্তু বকলমে তিনিই লাল-হলুদের সর্বময় কর্তা। সত্তরের দশকে পল্টু দাসের হাত ধরে ময়দানে এসেছিলেন। ধীরে ধীরে তিনিই হয়ে ওঠেন ক্লাবের শেষ কথা।

পুরোদস্তুর ময়দানের কর্মকর্তা এখন সারদাকাণ্ডে সিবিআইয়ের জালে। দেবব্রত সরকার। ময়দানে পরিচিত নীতু নামে। পল্টু দাস যখন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা ছিলেন, তখন তাঁর হাত ধরেই ময়দানে পা রাখেন দেবব্রত সরকার। সেটা ১৯৭৬-৭৭ সাল। পল্টু দাসের ছায়ায় লাইম লাইটে উঠে আসেন দেবব্রত ওরফে নীতু। ডান-বাম, দুই রাজনৈতিক শিবিরের সঙ্গেই তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। চিকিত্‍সা সরঞ্জামের পারিবারিক ব্যবসা থাকলেও, দিনের বড় সময়টা ক্লাব তাঁবুতেই পড়ে থাকতেন নীতু। ইস্টবেঙ্গলের যাবতীয় আর্থিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজে শেষ কথা তিনি। নীতুর হাত ধরেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আজ আধুনিক রূপ পেয়েছে।

ঝাঁ চকচকে তাঁবু, ক্যাফেটেরিয়া, ক্লাবের ওয়েবসাইটে রেগুলার আপডেট , লাল-হলুদ গ্যালারিতে বয়স্কদের জন্য লিফট, প্রফেশনাল লুক, সব কিছুরই নেপথ্যে রয়েছেন এই দেবব্রত সরকার। ইস্টবেঙ্গলে তিনিই প্রশাসক। তিনিই নিয়োগকর্তা। ময়দানের লোক হলেও রাজনীতির সব অলিন্দেই তাঁর অবাধ যাতায়াত। মধ্য কলকাতার কংগ্রেস নেতা থেকে শুরু করে আলিমুদ্দিনের প্রভাবশালী নেতা, সব শিবিরের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ  দেবব্রত সরকারের। বাম জমানায় নিয়ম করে আলিমুদ্দিনে যেতেন। রাজ্যে পালাবাদলের পর তৃণমূলের একাধিক দাপুটে নেতার ঘনিষ্ঠ হন তিনি।  শাসকদলের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ায় ক্লাব তাঁবুতেও প্রভাব বাড়ে নীতুর। তৃণমূল শিবিরের যেকজনের সঙ্গে দেবব্রতর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক মন্ত্রীর সঙ্গে সারদার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ।  

পুরোপুরি মাঠের মানুষ নীতু কী করে ঢুকলেন সারদার পাকচক্রে? সুদীপ্ত সেন কলকাতা ছাড়ার সময় সিবিআইকে যে চিঠি দিয়েছিলেন, তাতে দেবব্রত সরকারকে ক্লাবের ডি ফ্যাক্টো সেক্রেটারি বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ, সেবির কয়েকজন কর্তার সঙ্গে দেবব্রতর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাই সেবিকে সন্তুষ্ট করতে নীতুকেই মিডলম্যান করেছিলেন সুদীপ্ত সেন। সারদা কর্তার অভিযোগ, সেবিকে হাতে রাখতে দেবব্রত সরকারকে তিন বছরে চল্লিশ কোটি টাকা দিয়েছিলেন তিনি। ইস্টবেঙ্গল কর্তাকে প্রতি মাসে আশি লক্ষ টাকা করে দেওয়া হোত বলে দাবি সুদীপ্ত সেনের। তদন্তে দেবব্রত সরকারের মাধ্যমে ময়দানের আরও একটি ক্লাবে টাকা যাওয়ার কথা জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।  

 

.