জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এই মুহূর্তে প্রতি ৪ জন মানুষের ১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। আমাদের দেশে সংখ্যাটা তুলনামূলক ভাবে কিছু বেশি। ডিসানের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ সুজয় রঞ্জন দেব জানালেন যে একটু সচেতন হলে স্ট্রোক জড়িত সমস্যা আটকে দেওয়া যেতে পারে। প্রতি ১০ টি মৃত্যুর মধ্যে একটি হল স্ট্রোকের কারণে। পঙ্গুত্বের জন্য ঘর বন্দী হয়ে বাকি জীবন কাটানোর পেছনেও একটিই কারণ, তা হল ব্রেন স্ট্রোক।
Add Zee News as a Preferred Source

সিনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট নিউরোলজিস্ট ডাঃ মধুপর্ণা পাল জানান,'স্ট্রোক আটকানোর চেষ্টা করার পাশাপাশি রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা উচিৎ।' ১ ঘণ্টার মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্তর মস্তিষ্কের জমাট বাঁধা রক্ত ক্লট বাস্টিং ওষুধ প্রয়োগ করে গলিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক করতে পারলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।
আরও পড়ুন: Gold, Silver Rate Today: স্বস্তি উধাও, ফের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ! আবার বাড়ল সোনার দাম, বাড়ল রুপোও, আজ কলকাতায় ১ ভরি কত...
স্ট্রোকের ১ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা হলে সব থেকে ভাল ফল পাওয়া যায়, তাই এই সময়টাকে বলে 'গোল্ডেন আওয়ার'। সময় নষ্ট মানেই মস্তিষ্ক নষ্ট। যত সময় বয়ে যাবে ততই মস্তিষ্কের কোষ অকেজো হয়ে গিয়ে রোগীর পক্ষাঘাত সহ নানা সমস্যা বাড়বে। আর এই কারণেই গোল্ডেন আওয়ারের ওপর এতোটাই গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ডাঃ ক্যামেলিয়া প্যোরে বললেন, যে আচমকা অল্প সময়ের জন্যে ব্ল্যাক আউট হয়, হাত পা বা শরীরের কোনও একদিক হঠাৎ অবশ লাগে, কিংবা চোখে দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধে হয় অথবা ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, কোনও ঝুঁকি না নিয়ে নিজেরা ডাক্তারি না করে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নিয়ে যেতে হবে। ডাঃ মধুপর্ণার পরামর্শ ব্রেন স্ট্রোকের প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে আচমকা ঝিমিয়ে যাওয়া, চোখে কম দেখা,ঢোক গিলতে অসুবিধে হওয়া আর কথা জড়িয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা যেতে পারে।
দুটি ধরণের স্ট্রোক হয়, ইস্কিমিক আর হেমারেজিক। ইস্কিমিক স্ট্রোকে রক্ত চলাচল থেমে যায়। আর হেমারেজিক স্ট্রোকে দুর্বল রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্তপাত হয়। আর আছে ক্ষণস্থায়ী ইস্কেমিক আক্রমণ অথবা টিআইএ (Transient Ischemic Attack)। কোনও ছোট রক্তের ডেলা মস্তিষ্কের রক্তবাহি ধমনিতে সাময়িক ভাবে আটকে গিয়ে কিছুক্ষনের জন্যে রোগীর সামান্য কিছু সমস্যা ও ব্ল্যাক আউট হবার ঝুঁকি থাকে। আপাত দৃষ্টিতে মারাত্মক না হলেও টিআইএ-র পরে বড় অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে। তাই কোনও অবস্থাতেই সামান্য সমস্যাও ফেলে রাখা উচিৎ নয় বলে জানালেন ডিসানের সিনিয়র কন্সাল্ট্যান্ট নিউরোসার্জন ডাঃ রূপান্ত কুমার দাস ও ডাঃ পি এস মণ্ডল।

আরও পড়ুন: Moringa: সজনে পাতায় স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি, ঘরোয়া উপাদানেই সুপারফুডের জাদু!
স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবে কখনও হাঁটা চলা বা ভারসাম্য রক্ষার সমস্যা, পড়ে যাওয়া, হাত পা অবশ হয়ে যাওয়া, কথা বলতে ও বোঝাতে অসুবিধে হওয়া, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া, মাথা ঝিম ঝিম করা ও মাথা ঘোরার মত নানান উপসর্গ দেখা যায়। ছোটখাট লক্ষণ হলেও তা অবহেলা না করে নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নিলে পরবর্তী জটিলতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বিশ্ব স্ট্রোক দিবসে এই মারাত্মক অসুখটি সম্পর্কে সকলে সচেতন হন, স্ট্রোক মুক্ত থাকুন, ভাল থাকুন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)