Black Box Mystery of Flight AI171: মারণ দুর্ঘটনার পরেই ৩৪ বোয়িংকে আনা হল অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে! কী ভয়ংকর ত্রুটি ধরা পড়ল?
Black Box Data Being Decoded: অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ডিজিসিএ এবং মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, ব্ল্যাক্স বক্সটি উদ্ধার হয়েছে। ডিকোডিংয়ের কাজ চলছে। অনেকগুলি এজেন্সি একযোগে কাজ করছে।
)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অভিশপ্ত ওই বিমান (Air India Flight AI171, Boeing 787-8 Dreamliner) দুর্ঘটনায় মাত্র একজনই বেঁচে ফিরেছেন। ২৪১ জনেরই মৃত্যু ঘটেছে। কীভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, তার তদন্ত হচ্ছে। সিভিল অ্যাভিয়েশন মন্ত্রী তথা অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রাম মোহন নাইডুর (Civil Aviation Minister Ram Mohan Naidu) নেতৃত্বে দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ডিজিসিএ এবং মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। রাম মোহন নাইডু বলেছেন, ব্ল্যাক্স বক্সটি (black box) উদ্ধার হয়েছে। সেটির ডিকোডিংয়ের কাজ চলছে। অনেকগুলি এজেন্সি একযোগে কাজ করছে।
সবচেয়ে বড় উড়ান বিপর্যয়!
TRENDING NOW
বলা হচ্ছে, ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উড়ান বিপর্যয়! উড়ান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উড়ান বিপর্যয় এটি! ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক। দুর্ঘটনার কারণ, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মানা হয়েছিল কি না, কোথাও কোনও ত্রুটি ছিল কি না-- সবই খতিয়ে দেখবে কমিটি। ঘটনাস্থলে ও আশপাশের এলাকায় এখনও তল্লাশি চালাচ্ছে এনডিআরএফ-এর দল।
অন্তর্ঘাত?
আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া ড্রিমলাইনার AI 171 ফ্লাইট টেক অফের পরই ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না উড়ান বিশেষজ্ঞরা। ন্যাশনাল এরোস্পেস ল্যাবরেটরিজের প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেকটর সলিগ্রাম জে. মুরলীধর বলেছেন, এমনও হয়ে থাকতে পারে, হয়তো ওই বিমানের জ্বালানিকে 'দূষিত' করে দেওয়া হয়েছে! একটি সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, হতে পারে দুর্ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে! যদি বিমানের জ্বালানি দূষিত করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটা অন্তর্ঘাত! মানে, যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে যদি জল বা অন্য কোনও পদার্থ মিশিয়ে দেওয়া হয়, তবে পরিমাণ একই থাকলেও তা যথাযথ দহনে বাধা দেবে। তিনি যোগ করেন, এর ফলে প্রাথমিকভাবে হয়তো বিমান ওড়া শুরু করবে, কিন্তু, যে-চূড়ান্ত ধাক্কা বা থ্রাস্টের প্রয়োজন পড়ে, সেটা ওই বিমানটি দূষিত জ্বালানি থেকে পাবে না। প্রয়োজনীয় 'থ্রাস্ট' না পেয়ে প্রয়োজনীয় গতি তুলতেও অক্ষম হবে বিমানটি। তখন বিমানটি উড়তে না পেরে নীচে নেমে আসবে। সলিগ্রাম জে. মুরলীধরের স্পষ্ট কথা, "অপারেশন সিঁদুরের পর আমাদের সবাইকেই অন্তর্ঘাতের বিষয়ে খুব সচেতন থাকতে হবে।"
ব্ল্যাক বক্স
এদিকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার হয়েছে। সেই ব্ল্যাক বক্স থেকে কী তথ্য মেলে, সেটাই এখন দেখার। ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল আরও ২৯টি দেহ খুঁজে পেয়েছে। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারে ছিলেন ২৪২ জন যাত্রী। তার মধ্যে ২৪১ জনই প্রাণ হারিয়েছেন। তবে মৃতের সংখ্যা অন্য হিসেবে আরও বাড়ছে। কেননা, বিমান দুর্ঘটনার জেরে পরোক্ষ ভাবেও অনেকে মারা গিয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা ডাক্তার, তাঁদের পরিবার, মেডিক্যাল ছাত্র ও আশপাশের বাসিন্দারাও প্রাণ হারিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এত প্রাণহানির জবাব একমাত্র দিতে পারে ওই ব্ল্যাক বক্সই!
৩৪টি বোয়িং পরীক্ষা
জানা গিয়েছে অসামরিক বিমান মন্ত্রক বিষয়টি ভয়ানক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো তথা এএআইবি-কে দ্রুত সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে এনেছে। গতকাল তারাই বিকেল ৫টা নাগাদ ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে। রাম মোহন নাইডু বলেছেন, বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের সমস্ত বিমানেরই পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যবেক্ষণ জরুরি। ডিজিসিএ এই বিমানগুলি পরীক্ষার জরুরি নির্দেশ দিয়েছে। ইন্ডিয়ান এয়ারক্র্যাফ্টে এরকম ৩৪টি বিমান আছে। এর মধ্যে ৮টিকে ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখা হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলিও জরুরি ভিত্তিতে করা হবে।
ড্রিমলাইনারের ভেঙে পড়া
বৃহস্পতিবার আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে প্লেন ওঠার কিছু সময়ের মধ্যেই ভেঙে পড়ে এই বিমান। দুপুর ১.১৭ মিনিটে বিমানটি টেক অফ করে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (SVPIA) থেকে। বিমানে যাত্রী ছিলেন ২৪২ জন। লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এই ফ্লাইটটি। মোট ২৪২ জন নিয়ে উড়েছিল সেটি। এতে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, ৭ জন পোর্তুগিজ, একজন কানাডাবাসী। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে জানা গিয়েছিল, একটি 'মেডে' কল (Mayday call) তারা অভিশপ্ত বিমান থেকে রিসিভ করেছিল। কিন্তু কিছু পরেই সমস্তরকম কমিউনিকেশন বন্ধ হয়ে যায়। টেক-অফের পর পরই 'May Day' বলে চিত্কার করে উঠেছিলেন পাইলট! যদিও যোগাযোগের চেষ্টায় আর সাড়া মেলেনি! একটু পরেই হাড়হিম দুর্ঘটনার খবর আসে। ওই দুর্ঘটনা-মুহূর্তের ভিডিয়োও দেখা গিয়েছে। ফ্লাইট এআই১৭১টি ভেঙে পড়ার সময়টিকে ধরে রাখা হয়েছে তাতে। তাতে দেখা গিয়েছে শুধু কালো ধোঁয়া! ক্র্যাশের মুহূর্তে দেখা যায় গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে, আকাশ ছেয়ে গিয়েছে সেই বিপুল পরিমাণ কালো ধোঁয়ায়। নীচে বিশাল ধ্বংসস্তূপে আগুনের লেলিহান শিখার উন্মাদ নৃত্য। চারিদিকে পোড়া জিনিসপত্র, ছাই, ধোঁয়া। এবং মৃতদেহের পর মৃতদেহ। সব মিলিয়ে এক বিভীষিকার ছবি!
অনুমান কী কী ছিল?
কী ঘটেছিল বিমানটির সঙ্গে? প্রথমে বলা হয়েছিল পাঁচিলের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটেছিল। বিমানটি ওড়ার প্রায় সঙ্গে-সঙ্গেই বিমানবন্দর-সংলগ্ন কোনও এক পাঁচিলের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছিল। তবে, পরে পরিষ্কার জানা যায়, বিমানটি মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়ে। জানা গিয়েছিল, ইঞ্জিন-ইস্যুও তৈরি হয়েছিল। ইঞ্জিন নাকি কাঁপছিল। সেই মতো সংশ্লিষ্ট উইন্ডোতে জরুরি বার্তাও গিয়েছিল। পাখির ধাক্কা? টেক-অফের মুহূর্তেই নাকি রানওয়ে সন্নিহিত অঞ্চলে দু'বার পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগে বিমানটির।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)