India–Greece–Cyprus Business Forum: তুর্কিয়ে-আজ়ারবাইজান বয়কট! গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে আরও নিবিড় বাণিজ্য সম্পর্ক তৈরি ভারতের...
IGC Business Forum: ভারতের সঙ্গে গ্রিস ও সাইপ্রাসের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে এথেন্সে প্রথম IGC বাণিজ্য ফোরাম। অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল তুর্কিয়ে আর আজ়ারবাইজান, তাই ভারত দুই দেশকেই বয়কট করছে, আর এমন পরিস্তিতিতেই গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ছে...

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারত, গ্রিস এবং সাইপ্রাসের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সহযোগিতা আরও বাড়াতে ১৫ মে, ২০২৫ এথেন্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রথম India–Greece–Cyprus (IGC) Business Forum। আর এই ফোরামের আয়োজন করে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স (ICC) ও Eurobank, এবং এটি আয়োজিত হয় গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সহযোগিতায়।
এই অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় India-Greece-Cyprus Business Investment Council, যার মূল উদ্দেশ্য তিন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ বাড়ানো।
জাতীয় আর্ট গ্যালারি – আলেক্সান্দ্রোস সাউতসোস মিউজিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ফোরামে উপস্থিত ছিলেন ভারত ও গ্রিসের ৩০ জন সফল ব্যবসায়ী। আলোচনা হয়েছে পরিকাঠামো, পর্যটন, জাহাজ শিল্প, স্টার্টআপ, প্রযুক্তি, খাদ্য ও পানীয় এবং আর্থিক পরিষেবা খাতে সম্ভাব্য ব্যবসায়িক সহযোগিতা নিয়ে।
গ্রিসের ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার তাসোস হাতজিভাসিলিউ বলেছেন, 'আজকের এই পদক্ষেপ নতুন যুগের সূচনা করলো। ভারত, গ্রিস এবং সাইপ্রাস একসঙ্গে কাজ করলে তিন দেশেরই লাভ হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিসের ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ ভারত সফর এই পথের শুরু ছিল।'
Eurobank-এর CEO ফোকিওন কারাভিয়াস জানান, 'এই বাণিজ্যিক সহযোগিতা তিনটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। গ্রিস ও সাইপ্রাস ইউরোপে ভারতের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে পারে। ২০২৫-এর মধ্যেই মুম্বাইয়ে Eurobank-এর অফিস খোলা হবে। এছাড়াও ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা UPI-কে গ্রিসে চালু করার জন্য একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।'
ফোরামে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনা হয়—একটিতে ছিল IGC কাউন্সিলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, অন্যটিতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা ও বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আলোচনা। অংশগ্রহণ করেন ICC, SEV, Enterprise Greece, Fairfax Digital, LTIMindtree, GMR Airports, Coffee Island সহ একাধিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।
গতকাল ১৬ মে, ২০২৫-এ সাইপ্রাসের লিমাসলে দ্বিতীয় IGC ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে India-Middle East-Europe Economic Corridor (IMEC)-এর অধীনে ত্রিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমনিতেও পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নিন্দা তো দূর। বরং পাকিস্তানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল তুর্কিয়ে। তারা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াতে পাঠিয়েছিল যুদ্ধজাহাজ। আর অপারেশন সিঁদুরের পর তুর্কিয়ের তৈরি ড্রোন দিয়েই ভারতে হামলা চালানোর চেষ্টা চালিয়েছে পাকিস্তান। অথচ তুর্কিয়েতে ভূমিকম্পের পর 'অপারেশন দোস্ত' শুরু করেছিল ভারত। সবার আগে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও ভারত-পাক সংঘর্ষে পাকিস্তানেরই পাশে দাঁড়িয়েছে এরদোগানের দেশ।
তুর্কিয়ের এই নিষ্ঠুর ব্যবহারেই রুষ্ট ভারতীয়রা ওই দেশকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। তবে এবার তুর্কিয়ের প্রেসিডেন্ট পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এতে একটুও বিচলিত নন। পাকিস্তানকে খোলাখুলি সমর্থনের কথাও ফের জানিয়েছেন তিনি। রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, ভবিষ্যতেও দেশের অবস্থান একই থাকবে। তুর্কিয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি এরদোগানকে 'মূল্যবান ভাই' বলেও সম্বোধন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে যখন ভয়ংকর ভূমিকম্প হয়েছিল তুর্কিয়ে ও সিরিয়ায়। সেই সময় তুর্কিয়ের জন্য ত্রাণ নিয়ে প্রথম পৌঁছায় ভারতীয় সেনা। কিন্তু সেই দেশই অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতের শত্রু পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াল।
অপারেশন সিঁদুরের সময় যে ৩০০-৪০০ ড্রোন ভারতীয় সেনা গুলি করে নামিয়েছে, সেই সবকটাই তুর্কিয়ের। ভারতের ৩৬টি জায়গায় পাওয়া গেছে সেই ড্রোন। তা দেখেই রীতিমতো অবাক হয়েছে গোটা ভারত। এরপরেই মুম্বই বিমানবন্দর পরিদর্শন করে শিবসেনা নেতারা দাবি করেছেন কর্তৃপক্ষ যেন স্থল পরিষেবা পরিচালনাকারী তুর্কিয়ের কোম্পানির একটা চুক্তি যেন বাতিল করে।
শিবসেনা নেতা মুরজি প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন যে তারা ক্ষুব্ধ কারণ তুর্কিয়ে একই সঙ্গে পাকিস্তানকে সমর্থন করার পাশাপাশি ভারতে চুক্তির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছে। তাই তুর্কিয়েকে বয়কটের ডাক দিয়েছে ভারতীয়রা। বিগত কয়েক বছরে ভারতীয়দের অন্যতম পছন্দের টুরিস্ট স্পট তুর্কিয়ে ও আজ়ারবাইজান। সেই দুই দেশই অপারেশন সিঁদুরের সময় গিয়ে দাঁড়ায় ভারতের বিরুদ্ধে। এরপরই ভারতের একের পর এক ট্রাভেল কোম্পানি তুর্কিয়ে ও আজ়ারবাইজানের ট্যুর বাতিল করতে থাকে।
ইতিমধ্যেই পর্যটন থেকে ব্যবসা, নানা ক্ষেত্রেই তুর্কিয়েকে বয়কট করেছে ভারত। গত বছর শুধুমাত্র ভারতীয়দের হাত ধরেই তুর্কিয়ের ব্যবসা হয়েছিল ৪০০০ কোটি। তবে, দিনে দিনে ক্যানসেল হচ্ছে একের পর এক ট্যুর। তুর্কিয়েকে পুরোপুরি বয়কটের ডাক দিয়েছে ভারত।
বলাই বাহুল্য যে, আজ়ারবাইজানের তরফ থেকে জারি করা হয়েছিল একটা বিবৃতি। সেখানে পাকিস্তানের উপর ভারতের আক্রমণের কড়া নিন্দা করেছে আজ়ারবাইজান সরকার। যা দেখে রাগে ফেটে পড়েন ভারতীয়রা। তুর্কিয়ে ও আজ়ারবাইজানকে বড় ব্যবসা দেয় ভারতীয় ট্যুরিস্টরা। অবিলম্বে সেই সব ট্যুর বাতিল করছে ভারতীয় সংস্থা ও ভারতের জনগণ। অনুমান করা যায়, যার ফলে এই দুই দেশের পর্যটন শিল্পে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা। এই দুই দেশের পরিবর্তে এখন ভারতীয় পর্যটকরা বেছে নিচ্ছেন আরমেনিয়াকে। ভারতীয়দের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে এই দেশ।
আর এসবের মাঝেই ভারত, গ্রিস এবং সাইপ্রাসের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সহযোগিতা আরও বাড়াতে এথেন্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রথম India–Greece–Cyprus (IGC) Business Forum। যার মূল উদ্দেশ্য তিন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ বাড়ানো।ভারতের সঙ্গে গ্রিস ও সাইপ্রাসের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে এথেন্সে প্রথম IGC বাণিজ্য ফোরাম।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)