নিজস্ব প্রতিবেদন: সংবিধানের ৩৫-এ অনুচ্ছেদ মামলার শুনানি পিছোতে চাইছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন? এমনই ইঙ্গিত মিলল রবিবার সে রাজ্যের সদ্য নিযুক্ত মুখপাত্র রোহিত কনসলের মন্তব্যে। তিনি এ দিন বলেন, “আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। এই মামলার শুনানি পিছনোর আর্জি জানানো হবে সুপ্রিম কোর্টে।” হঠাত্ এমন অবস্থান বদল কেন? সূত্রে খবর, রাজ্য প্রশাসনের যুক্তি, ৩৫-এ-র মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিতে সে রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের বক্তব্যও শোনা হোক। এই মুহূর্তে কোনও সরকার না থাকায় গত বছর জুন থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে রাজ্যপালের শাসন চলছে। পাশাপাশি পুলওয়ামা ঘটনার পর স্বভাবতই অশান্ত কাশ্মীর। ‘বিতর্কিত’ ৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কোনও রায় এলে এই মুহূর্তে কাশ্মীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। সূত্রে খবর, ভোটের পরই ফের শুনানির আবেদনের আর্জি জানাবে রাজ্য প্রশাসন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- রামমন্দিরে পুজো দেওয়া আমার মৌলিক অধিকার, সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি সাংসদ


সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। অ্যাডভোকেট জেনারেল ডিসি রায়না জানান, আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই ৩৫এ নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে। এ দিকে ৩৫এ অনুচ্ছেদ খারিজ করা নিয়ে কেন্দ্রের অনড় অবস্থানের বিরুদ্ধে উত্তাল হচ্ছে উপত্যকা। বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলির সঙ্গে এনডিএ-র একদা শরিক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-ও বিরোধিতায় সামিল হয়েছে। রবিবার উপত্যাকায় বনধ ডাকে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। উপত্যকাবাসীদের কাছে সরকারের মুখপাত্র কনসল আবেদন করেছন, ৩৫এ অনুচ্ছেদ বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। গুজব থেকে বিরত থাকতে কাশ্মীরের মানুষের কাছে আবেদন জানান কনসল।


আরও পড়ুন- শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে চাকরি ছাড়ার নির্দেশ কংগ্রেসের মন্ত্রীর


উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবিধানে ৩৫এ অনুচ্ছেদটি বৈধ কি-না এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয় বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে। উপত্যাকার পরিস্থিতির তদারকির দায়িত্বে থাকা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল গত বছর ডিসেম্বরে এক বক্তৃতায় বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরকে পৃথক সংবিধান প্রদান করে দেশের সার্বিক সার্বভৌমত্ব লঘু করা হচ্ছে।” দোভালের মন্তব্য, স্বাধীনতার পর যে সব অঙ্গরাজ্যের পৃথক সংবিধান ছিল তা একসূত্রে বাঁধা হয়েছে। শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়া। যা বিভ্রান্তিমূলক।


কেন্দ্রও চাইছে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করতে। ওই ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ ক্ষমতা, অধিকার ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সংবিধানের ৩৫এ ধারাটি যুক্ত করা হয়। ওই ধারা অনুযায়ী, স্থায়ী বাসিন্দা এবং তাঁদের অধিকার কী হবে তার সিদ্ধান্ত নেবে সে রাজ্যের বিধানসভা। সম্পত্তির অধিকার, সরকারি চাকরি এবং ভোটাধিকার ওই স্থায়ী বাসিন্দাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। এমনকি ওই রাজ্যে বাসিন্দা কোনও মহিলা বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সে এবং তার উত্তরাধিকারী সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। এই অনুচ্ছেদটিও বিলোপ করার পক্ষে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার।