জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সুপ্রিম কোর্টে (The Supreme Court) অপরাধীদের শাস্তিদানের (mode of execution) বিষয়ে একটি পর্যবেক্ষণ করেছে। ফাঁসি দেওয়ার বদলে দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্তকে যদি বিষ-ইঞ্জেকশন দিয়ে (lethal injection) মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া যায়, তাহলে কি ফাঁসির (Death By Hanging) মতো মধ্যযুগীয় একটি শাস্তিপ্রক্রিয়া থেকে বেরনো যায়? একটি জনস্বার্থ মামলার (public interest litigation) সূত্রে উঠে আসছে এই বিতর্ক।
Add Zee News as a Preferred Source
আরও পড়ুন: kalipuja 2025: মালা থেকে প্রেম! প্রেমিকপ্রেমিকাকে কালীর সামনে বলি দেওয়ার জন্য হাঁড়িকাঠে তোলা হল! তারপর সে এক ভয়ংকর কাণ্ড...
মৃত্যু নির্বাচন
শুধু কি ফাঁসিই? আর কোনও ভাবে শাস্তি দেওয়া যায় না? এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে আবেদনকারী বলেছেন, ফাঁসির বদলে মারক ইঞ্জেকশন বা ফায়ারিং স্কোয়াড বা ইলেকট্রিক শক বা গ্যাস চেম্বারের বিকল্প কি আনা যায় না? কেননা, প্রতিটি ক্ষেত্রেই মৃত্যু ঘটে মাত্র কয়েক মিনিটে। কিংবা, যিনি মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন, তাঁকে তো একটা বেছে নেওয়ার সুযোগও দেওয়া যেতে পারে? আদালত প্রথাগত ফাঁসির বদলে বিষাক্ত ইনজেকশন চালু করা অথবা অন্তত দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এই দুটি পদ্ধতির মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলা শুনছিল।
সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট ফাঁসির সেলে থাকা দোষীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতি হিসেবে বিষাক্ত ইনজেকশন বেছে নেওয়ার বিকল্প দেওয়ার প্রস্তাবের প্রতি সরকারের আপত্তিতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আবেদনকারীর পক্ষে উপস্থিত থাকা অ্যাডভোকেট ঋষি মালহোত্রা বলেন, কমপক্ষে দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিকে একটি বিকল্প দিন... তারা ফাঁসি চান নাকি বিষাক্ত ইনজেকশন... বিষাক্ত ইনজেকশন দ্রুত, মানবিক এবং শালীন, এর বিপরীতে ফাঁসি নিষ্ঠুর, বর্বর এবং দীর্ঘস্থায়ী।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয় যে, সামরিক ক্ষেত্রে এই ধরনের বিকল্পের সুযোগ দেওয়া হয়।
সরকারের মন্তব্য
তবে, সরকারের পাল্টা হলফনামায় বলা হয়েছে, এই ধরনের বিকল্প দেওয়া 'সম্ভব নয়'। এরপর বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ মন্তব্য করে যে, সরকার 'সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হওয়া পরিবর্তনগুলির সঙ্গে পা মেলাতে প্রস্তুত নয়'! এই সময় সরকারের পক্ষে উপস্থিত থাকা সিনিয়র অ্যাডভোকেট সোনিয়া মাথুর পাল্টা হলফনামায় সরকারের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন যে বন্দিদের একটি বিকল্প দেওয়ার বিষয়টি নীতিগত সিদ্ধান্তের অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন: Dhanteras 2025: ধনতেরসে দুই বিরল যোগ! পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না ৩ রাশিকে, মাথায় মুষলধারে টাকার বৃষ্টি...
যন্ত্রণা এবং যুক্তি
আবেদনকারী যুক্তি দেন, ফাঁসির পদ্ধতিতে 'দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণা এবং ভোগান্তি' রয়েছে। তাঁর যুক্তি ছিল, মৃত্যুদণ্ডকে বিষাক্ত ইনজেকশন, ফায়ারিং স্কোয়াড, ইলেকট্রোকিউশন বা গ্যাস চেম্বারের ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিস্থাপন করা উচিত। এর সবকটিতেই একজন ব্যক্তি মিনিটের মধ্যে মারা যেতে পারেন। সেখানে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুর পদ্ধতি সম্পূর্ণ উল্টো, এক্ষেত্রে মৃত্যু হতে ৪০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। প্রসঙ্গত, উল্লেখ করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের ৪৯টিতেই বিষাক্ত ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়!
মর্যাদাপূর্ণ পদ্ধতিতে মৃত্যু
ওই পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, 'মর্যাদাপূর্ণ পদ্ধতিতে মৃত্যুর অধিকার'-কে ২১ অনুচ্ছেদে নিশ্চিত করা একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য করা হোক। ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ডকে 'বর্বর, অমানবিক এবং নিষ্ঠুর' (এবং) 'রাষ্ট্রসংঘ কর্তৃক গৃহীত প্রস্তাবগুলির পরিপন্থী' বলে কঠোরভাবে সমালোচনা করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবাবলিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যদি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতেই হয়, তবে 'এটি এমনভাবে সম্পন্ন করতে হবে যাতে মৃত্যুর কষ্ট সবচেয়ে কম হয়। এরপর মামলাটি নভেম্বরের ১১ তারিখ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)