চাহিদা কম, যোগান বেশি, এই দুইয়ের ভারসাম্য না থাকায় কমছে অপরিশোধিত তেলের দাম

Updated By: Jan 21, 2016, 10:19 PM IST
চাহিদা কম, যোগান বেশি, এই দুইয়ের ভারসাম্য না থাকায় কমছে অপরিশোধিত তেলের দাম

ওয়েব ডেস্ক: চাহিদা কম। অথচ যোগান বেশি। এই দুইয়ের ভারসাম্য না থাকায় কমছে অপরিশোধিত তেলের দাম। এর মধ্যেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উত্পাদন। উত্পাদন না কমলে, বিশ্ববাজারে আরও কমবে তেলের দাম। মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তিন বছর আগেও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি একশো কুড়ি ডলার। সেই দাম প্রায় চার ভাগ কমে গিয়েছে। এখন অপরিশোধিত তেলের দাম আঠাশ ডলার। বারো বছরে যা সবচেয়ে কম। চাহিদা-জোগানের যা হাল, তাতে বিশ্ববাজারে দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বজুড়ে চাপা আর্থিক মন্দার কারণে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা ক্রমশ কমছে। কিন্তু উত্পাদক দেশগুলির মধ্যে বাজার দখলের লড়াই অব্যাহত। তেলের বাড়তি উত্পাদন প্রতিদিন গড়ে কুড়ি লক্ষ ব্যারেল। তাই বাড়ছে জোগান।  

এর আগে বিশ্ববাজারে যখন অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে, তখনই উত্পাদন কমিয়ে দিয়েছে ওপেক বা তেল রপ্তানিকারক তেরো রাষ্ট্রের জোট। এবারও তেমনটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেঁকে বসেছে জোটের শক্তিধর সদস্য সৌদি আরব। তেলের উত্পাদন কমাতে নারাজ তাঁরা। রাশিয়ার অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভর করে তেলের বাণিজ্যের ওপর। সে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবরে পড়েছে। এখন তেলের বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া পুতিন সরকার । তাই তেলের উত্পাদন কমাতে রাজি নন তাঁরাও

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে আমেরিকা।  তার ফলে ইরানের তেল উত্পাদন এবং রফতানি এক ধাক্কায় কয়েক গুণ বাড়তে চলেছে। সে দেশের তৈল মন্ত্রী জানিয়েছেন, পাঁচ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল দৈনিক উত্পাদন করবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, এতদিনের জমানো প্রায় সাড়ে তিন কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে তারা। আর তাতেই ত্রাহি ত্রাহি রব গোটা বিশ্বজুড়ে।

ইরাকে তেলের খনি দখল করার পর প্রাকৃতিক সম্পদ বেচে ফান্ড সংগ্রহে ঝাঁপিয়ে পড়ে আইসিস। সে কারণে আইসিসের দখলে থাকা খনিগুলির উত্পাদন বাড়ে। অন্যদিকে লিবিয়ার ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো ভূমিকা নেয় এই জঙ্গি সংগঠন। একের পর এক খনি ধ্বংস করতে থাকে তারা। এর ফলে একটি ভীতি শুরু হয়ে গিয়েছে তেল শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির কাছে। তেলের সব থেকে চাহিদা বেশি আমেরিকাতেই। সে আমেরিকার অর্থনীতি এখনও পুরোপুরি চাঙ্গা নয়। অবস্থা খারাপ ইওরোপের দেশগুলিতে। তার ওপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা চিনের আর্থিক সঙ্কট। তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম খরিদ্দার চিনের শেয়ারবাজার টালমাটাল। অদূর ভবিষ্যতেও তেলের চাহিদা বাড়ার লক্ষণ নেই। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে আরও কমবে তেলের দাম।

.