"পদ ছাড়তে চাই", পোপকে চিঠি ধর্ষণে অভিযুক্ত বিশপের
কেরল পুলিসের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাক পাওয়ার পরদিনই জলন্ধর ডায়োসেস-এর দায়িত্ব এক প্রবীণ যাজকের হাতে অর্পণ করেছেন অভিযুক্ত বিশপ ফ্রাঙ্কো।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্যাথলিক ধর্মের প্রধান তথা ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিসের কাছে চিঠি লিখে সাময়িকভাবে পদ ছাড়ার আবেদন জানালেন কেরলে সন্ন্যাসিনী ধর্ষণে অভিযুক্ত বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কাল। ফ্রাঙ্কো জানায়িছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং মামলা নিয়ে তিনি ব্যাস্ত থাকবেন। এ জন্য, 'ডায়োসেস অফ জলন্ধর'-এর দায়িত্ব থেকে তাঁকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হোক। পোপ-কে লেখা ১৬ সেপ্টেম্বরের চিঠিতে ফ্রাঙ্কো আরও লিখেছেন, তাঁকে সম্ভবত বেশ কয়েকাবার কেরল যেতে হবে। তাই ডায়োসেস-এর দায়িত্ব সাময়িকভাবে হস্তান্তরিত করা হোক।
কেরল পুলিসের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাক পাওয়ার পরদিনই জলন্ধর ডায়োসেস-এর দায়িত্ব এক প্রবীণ যাজকের হাতে অর্পণ করেছেন অভিযুক্ত বিশপ ফ্রাঙ্কো। ১৩ সেপ্টেম্বর জারি করা এক নির্দেশিকায় ফ্রাঙ্কো মুলাক্কাল লিখেছেন, "আমার অনুপস্থিতিতে ম্যাথু কোক্কান্দাম ডায়োসেস-এর যাবতীয় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন। যেমন, অতীতেও তিনি এই কাজ করেছেন"।
উল্লেখ্য, প্রবল জনমতের চাপে ও বিক্ষোভের মুখে পড়ে কেরল পুলিস বাধ্য হয়ে অভিযুক্ত বিশপ-কে সমন পাঠায়। সংশ্লিষ্ট গির্জারই এক সন্ন্যাসিনী অভিযোগ করেন, ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে তাঁকে যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণ করে বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কাল। নির্যাতিতা ইতিমধ্যে তাঁর অভিযোগ সংবলিত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ভ্যাটিকানে। ওই চিঠিতে তিনি বিচার চেয়েছেন এবং অভিযুক্ত বিশপের অপসারণ দাবি করেছেন। এই ঘটনায় ভ্যাটিকানের দ্রুত হস্তক্ষেপ চাওয়ার পাশাপাশি সব জেনেও কেন সংশ্লিষ্ট গির্জা কর্তৃপক্ষ 'চোখ বন্ধ করে রেখেছে' সেই প্রশ্নও তুলেছেন অভিযোগকারিণী। তাঁর আরও দাবি, রাজনৈতিক প্রতিপত্তি ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে বিশপ এই কেলেঙ্কারি ঢাকা দিতে চাইছে।
বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কালের দাবি, পুলিস তাঁর বিরুদ্ধে যে সব প্রমাণ জোগাড় করেছে, সেখানে অনেকগুলি অসঙ্গতি রয়েছে। এরপরই তিনি বলেন, "আমি বিষয়টি ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। এই মুহূর্তে তদন্তে কী উঠে আসে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি"। উল্লেখ্য, এর আগে অভিযোগকারিণীর সব দাবিকে 'ভিত্তিহীন ও বানানো' বলে খারিজ করে দিয়েছিলেন তিনি। বরং, ওই সন্ন্যাসিনীকে ক্যাথলিক ব্যবস্থা 'বিশেষ সুযোগ' দেয়নি বলেই সে এমন অভিযোগ করছে বলে দাবি করেছিলেন বিশপ ফ্রাঙ্কো। এদিকে, অভিযুক্ত বিশপের পদ থেকে সরে যাওয়াকেই 'প্রথম জয়' হিসাবে দেখছে জাতীয় মহিলা কমিশন। আপাতত হাইকোর্ট পুলিসকে তদন্তের জন্য খানিকটা সময় দিয়েছে। ফলে এখন সেদিকেই তাকিয়া রয়েছে তারা। এরপর যদি সঠিক বিচার না মেলে, তাহলে ফের এ বিষয়ে কমিশনের তরফে হস্তক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।