Delhi: অকথ্য অত্যাচারের পরও থামেনি জোর করে পিল গিলিয়ে দেয়, বলে তোর পেটে বাচ্চাও রাখব না! দিল্লির ছাত্রীর ভয়ংকর জবানবন্দি...
Delhi’s South Asian University: দুর্গাপুরের আবহেই দিল্লির এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর উপর নারকীয় অত্যাচার। উত্তাল কলেজ ক্যাম্পাস। নির্যাতিতার হাড়হিম বয়ান।
সৌমিতা খাঁ
|
Updated By: Oct 15, 2025, 03:17 PM IST
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ভিতরেই ছাত্রীর সঙ্গে অসভ্যবতা, যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ। ইতোমধ্যেই ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, ১৮ বছর বয়সী এক বি.টেক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই চারজন মিলে মারধর করে, জামা ছিঁড়ে দেয় এবং জোর করে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন কলেজেরই নিরাপত্তারক্ষী। দিল্লি পুলিস মঙ্গলবার এই ঘটনার FIR দায়ের করেছে।
TRENDING NOW
ঘটনাটি কীভাবে ঘটল?
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতাকে ১৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়য। তাঁর জামাকাপড় ছেঁড়া ছিল। এর আগের দিন থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এফআইআরে নির্যাতিতা অভিযোগ করেন, ঘটনার কয়েক দিন আগে থেকে আরিয়ান ইয়াশ নামের এক ব্যক্তি তাঁকে ইমেইল ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অশ্লীল ও হুমকি পাঠাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, মেসেজগুলিতে বিকৃত ছবি পাঠানো হয়েছিল এবং ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট জায়গায় দেখা করতে বাধ্য করা হচ্ছিল। একটি মেসেজে লেখা ছিল: 'আমি তোমার কলেজের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি, B-1 ব্লকে একটি মেয়েকে দেখতে পাবে, তাকে নিয়ে গেট ৩-তে চলে এসো।'
ওই মেসেজর কথা মতই নির্যাতিতা হস্টেল থেকে বেরিয়ে যান এবং C-Block-এর দিকে যান, যেখানে অনেক লোক জড়ো ছিল। তিনি সেখান থেকে পাশের একটি ফাঁকা জায়গা- কনভোকেশন সেন্টারের দিকে যান, যেখানে রাতের সময় লোকজন থাকেন না। সেখানে এক নিরাপত্তারক্ষী এসে জিজ্ঞেস করেন, 'তুমি এখানে কেন?'
নির্যাতিতার হাড়হিম বয়ান:
নির্যাতিতা আরও অভিযোগ করেন, ওই নিরাপত্তারক্ষী এরপর এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি ও আরও দুই ছেলেকে ডেকে আনেন। 'আমি সিঁড়িতে বসেছিলাম। চারজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, 'তুমি এখান থেকে যাচ্ছো না কেন?' এরপর তারা তাঁকে মারধর করে, জামা ছিঁড়ে দেয়, এবং গর্ভপাতের ওষুধ জোর করে মুখে ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, 'কেউ একজন আমার চোখ চেপে ধরেছিল, একজন কানে বলছিল, 'তোমার বাচ্চাকে মেরে ফেলব, চিন্তা কোরো না।' এক ব্যক্তি তাঁর পা আমার উরুতে রেখে দাঁড়িয়ে ছিল, আরেকজন মাথায় আঘাত করছিল।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন একজন আমার মুখে ওষুধ ঢুকিয়ে দিচ্ছিল। আমি ওটা মুখ দিয়ে ফেলে দিই, তবে ওষুধটা পুরো বের হয়েছিল কি না, জানি না।' পরে, একজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সেখানে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। নির্যাতিতা তখন আহত ও অসহায় অবস্থায় পড়ে ছিলেন। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাঁকে খুঁজে পায় এবং হস্টেলে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক কাউন্সেলিং দেওয়া হয়।
পুলিসি তদন্ত ও অভিযুক্তদের খোঁজ:
সোমবার দুপুর ৩টা নাগাদ পুলিসের কাছে একটি পিসিআরে ইমার্জেন্সি কল আসে। এরপর পুলিস ক্যাম্পাসে পৌঁছায় এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির নতুন সংস্করণ অনুযায়ী, ধর্ষণ, অপহরণ, বিষ প্রয়োগ, শারীরিক আঘাত, বেআইনি আটকে রাখা ইত্যাদি ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
দক্ষিণ দিল্লির ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিস অঙ্কিত চৌহান জানান, 'তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ও সংবেদনশীলভাবে করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।' পুলিস নিশ্চিত করেছে, চারজন অভিযুক্তই এখনও পলাতক। নির্যাতিতার বিবৃতি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে রেকর্ড করা হয়েছে।
পুলিস আরও জানায়, মেয়েটি মানসিক চাপে ভুগছিলেন, বিশেষ করে তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকেই তিনি ডিপ্রেশনে ছিলেন।
আরও পড়ুন:Ashley Tellis: 'টপ সিক্রেট' নথি বাড়িতে! গ্রেফতার ভারতীয় মার্কিন উপদেষ্টা অ্যাশলে টেলিস...
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া ও ছাত্র আন্দোলন:
সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করেছে, যাদের ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই ঘটনার 'তীব্র নিন্দা' জানিয়ে বলেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সময়মতো পুলিসকে জানাননি এবং পুরো বিষয়টি ভুলভাবে পরিচালনা করেছেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
Soumita Khan
আশুতোষ কলেজ থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-- সাংবাদিকতা নিয়েই পড়াশোনা। আন্তর্জাল সাংবাদিকতায় পেশাগত হাতেখড়ি। লেখেন সব বিষয়েই, তবে ক্রাইমের খবরের আনাচকানাচে ঘোরাঘুরিতে বেশি আগ্রহ। অনুক্ষণ শিক্ষানবিশ...
...Read More