উত্তরপ্রদেশে সপা-র এই হারের নেপথ্যে কী?

উত্তরপ্রদেশ থেকে একরকম সাফ হয়ে গেল সমাজবাদী পার্টি। নিজের পায়ে কুড়ুল নয়, কার্যত কুড়ুলেই পা মেরেছে সপা। সপার ঘরোয়া কোন্দলে বিরক্ত উত্তরপ্রদেশ। আর তাই বুঝিয়ে দিল এই ফল। মুলায়মকে তাচ্ছিল্যের খেসারত অখিলেশ দিলেন, কুর্সি খুইয়ে। হারের পর দলের অন্দরেই আওয়াজ উঠল, অখিলেশ হঠাও-মুলায়ম লাও।

Updated By: Mar 11, 2017, 06:29 PM IST
উত্তরপ্রদেশে সপা-র এই হারের নেপথ্যে কী?

ওয়েব ডেস্ক : উত্তরপ্রদেশ থেকে একরকম সাফ হয়ে গেল সমাজবাদী পার্টি। নিজের পায়ে কুড়ুল নয়, কার্যত কুড়ুলেই পা মেরেছে সপা। সপার ঘরোয়া কোন্দলে বিরক্ত উত্তরপ্রদেশ। আর তাই বুঝিয়ে দিল এই ফল। মুলায়মকে তাচ্ছিল্যের খেসারত অখিলেশ দিলেন, কুর্সি খুইয়ে। হারের পর দলের অন্দরেই আওয়াজ উঠল, অখিলেশ হঠাও-মুলায়ম লাও।

গেরুয়া সুনামির ধাক্কা। তার ওপর রথের চাকায় পিষে গেল, অখিলেশ যাদবের ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন।.......কিন্তু কেন?

শুধুই কি মোদী ম্যাজিক আর অমিত শাহর রণকৌশল? নাকি অন্য কিছু? কারণ খুঁজতে একটু পিছিয়ে যেতেই হবে। ঘরের আগুনই পোড়াল দলের মুখ। অন্তর্কলহেই ডুবল এসপি? নাকি বাপ-বেটা লড়াইয়ে, মাসুল দিল দল! দলের সভায় প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের হাত থেকে কাকা শিবপালের মাইক কেড়ে নেওয়াই হোক বা, নেতাজির টিপুকে বকাঝকা, অখিলেশের চোখের জল। গোবলয়ের হৃদয়পুরে এসপির নাটক মিডিয়া হাইপ তুলেছে কিন্তু সপার বাস্তবের মাটি খাক হয়ে গিয়েছে।  

টিকিট দেওয়া নিয়ে মুলায়ম-শিবপাল গোষ্ঠী বনাম অখিলেশ-রামগোপাল জোটের লড়াই ভোটের আগেই চরমে পৌছয়। দড়ি টানাটানির খেলায় অবাধ্য অখিলেশকে একসময় দল থেকেই তাড়িয়ে দেন মুলায়ম সিং যাদব। দেশজোড়া বিতর্ক। বাম-বেটার লড়াই তখন মুখে মুখে। সন্ধি করাতে আসরে নামেন তাবড় বিরোধী নেতা। বাপকে মহা প্যাঁচে ফেলে বেটার পাশে দাঁড়ান ২০০-র বেশি বিধায়ক।

আরও পড়ুন- গেরুয়া ঝড়ে মুখ থুবড়ে পড়ল সাইকেল, উত্তরপ্রদেশে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতার পথে বিজেপি

অখিলেশকে দল থেকে বের করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের ভোল বদলে ছেলেকে দলে ফেরান নেতাজি। বাবাকে আর কোনও সুযোগ না দিয়ে এরপরই আসে অখিলেশের মোক্ষম চাল। কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে দল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন অখিলেশ। বাবাকে বানপ্রস্থে পাঠানোর পথ প্রশস্ত করার সঙ্গেই, মুলায়ম ঘনিষ্ঠদেরও বহিষ্কার করে দেন সপার সদ্য নির্বাচিত সভাপতি।

অখিলেশ ঘনিষ্ঠদের বহিষ্কার করে পাল্টা আসরে নেমে পড়েন মুলায়ম। বিপক্ষকে আক্রমণের স্ট্র্যাটেজি কষার সময় কই? দলের মধ্যে 'তু তু ম্যা ম্যা।' দলীয় প্রতীক সাইকেল নিয়ে এরপর দড়ি টানাটানি শুরু হয় অখিলেশ-মুলায়মের। দরবার হয় দিল্লির নির্বাচন কমিশনে।

কিন্তু, বাবা চাননি। ছেলের জেদেই সাইকেলে হাত পড়ে কংগ্রেসের। জোট হয় কংগ্রেস-সপার। পোড় খাওয়া মুলায়মের কথা কানেই তোলেননি অখিলেশ। ভোটের রেজাল্ট আউটে সেটাই বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াল। মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।  

আর তাই এবার ফের সুর চড়ছে দলের অন্দরেই, 'মুলায়মকো বাপস লাও। অখিলেশ হঠাও।' তবে দেরি হয়ে গেল নাকি? উত্তরপ্রদেশ দেখল, যাদবযুদ্ধের পরিণতি।

.