মেঘের থেকে আকাশ ছোঁয়া
মেঘ করে সব চুরি
চাঁদ পোহানো
রাত জাগা আড়ষ্ট নাই 
ভাবছি যত উজাড় করে
দিচ্ছি আমার সব
আসলে সব 
তোমার কাছেই চাই...


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


সত্যিই সব দিয়ে সব চুরি করে নিল মেঘ। সমাজ সব ঠিক করে দেবে না, সমাজে সব ঠিক করে দেব মানুষই...প্রেমের জয়, হারতে থাকা সব কিছু থেকে একলহমায় সব জয়। মেঘ আসল, বৃষ্টিও হল, ধুয়ে গেল সব ধুলো, সমাজের বিস্ফারিত অগ্নিগোলকেও ঝড়ল শ্রাবণধারা। এক বৃহন্নলার হাত ধরলেন তথাকথিত 'পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পুরুষ'। ঘটা করে ঢাক ঢোল পিটিয়ে পরিণয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলেন 'বৃহন্নলা' মেঘ আর ভুবনেশ্বরের বাসুদেব। হিমেল শীতের মলিন পরশে ভারতের গায়ে লাগল উষ্ণতার ছোঁয়া। ভুবনেশ্বর সাক্ষী থাকল এক ভূবনজয়ী ঘটনার। মেঘ আর বাসুদেবের বিয়ের মধ্যে দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল সেই আদিম ধ্রুব সত্য, "সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই"। 


 



"আমি খুব খুশি। আমি বাসুদেবের কাছে কৃতজ্ঞ, এক বৃহন্নলার সঙ্গে সংসার করার মত কঠিন সাহসী পদক্ষেপ ও নিয়েছে। মানুষ মনে করে একজন বৃহন্নলা কখনও বিয়ে করতে পারে না। একজন বৃহন্নলা কখনও মা হতে পারে না। আমি সব প্রথা ভেঙে দিলাম", কপালে সিঁদুর তুলেই সমাজের মুখে এভাবেই চুনকাম করলেন বৃহন্নলা মেঘ। সামাজের আরও অধিকারের মতই বিয়েও যে তাঁর অধিকার, তা এককথায় অর্জন করে নিলেন মেঘ। 


 


মেঘকে বিয়ে করার প্রস্তাব আসে বাসুদেবের পরিবারের কাছ থেকেই। প্রথমে কিছুটা অবাস্তব ধরে নিয়েই বিশেষ গুরুত্ব দেননি মেঘ। তবে প্রেমের কাছে নতি স্বীকার। "আমি অমিতাভ বচ্চনকেও দেখেছি ভালবাসার কাছে মাথা নত করতে", কবির কবিতার মতনই হৃদয় উজাড় করে দিতে বাধ্য হলেন মেঘ। "এত প্রেম আমি কোথা পাব নাথ...", তাই পরস্পরের প্রেমে বিলীন দুই আত্মা এক শরীর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তারপর একে অপরকে দেখা, জানা, বোঝা, সম্পর্ক পরিণতি পেল পরিণয়ে। 


 


ভারতের সর্বোচ্চ আদালত একবছর আগেই ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল। একজন বৃহন্নলা আর পাঁচটা আম আদমির মতই সমস্ত নাগরিক অধিকার ভোগ করতে পারবেন। ভোট দেওয়ার মত নাগরিক অধিকার, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং শিক্ষার অধিকার, সব কিছু পাবেন একজন ট্রান্সজেন্ডার। মেঘ আর বাসুদেবের বিয়ে যে কেবল সমাজের বাঁধ ভেঙেছেন শুধু তাই নয়, তাঁদের বিয়ে একটা উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবেই থাকল।