মে দিবসের আবহে নদীয়ার পরিযায়ী তাঁত শ্রমিকদের ঘরে উদ্যোগী জেলা প্রশাসন
শিল্পের উপযুক্ত মূল্য পেতে পাশাপাশি সংসারের তাগিদে কোচবিহারের প্রচুর তাঁতশিল্পী এসেছিলেন শান্তিপুরে। রোজগারের জন্য কেউ এসেছেন দু তিন বছর আগে অনেকে আবার তারও আগে। এরা সকলেই তাঁত শ্রমিক। নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়া,শান্তিপুর এলাকার ৯০ শতাংশ মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কোচবিহার থেকে এই সমস্ত শ্রমিকেরা কাজ করতেন এখানকার তাঁত ঘরে। বছরে দু-বার ছুটি মিলত।
সেসবই এখন অতীত। বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতিতে মহাজনদের ছোট্ট ছোট্ট কারখানায় নিজেদের গৃহবন্দি করেছিলেন। লকডাউন কবে উঠবে তার নিশ্চয়তা নেই। প্রতি মুহূর্তে মনে পড়ে পরিবারের কথা। গণপরিবহন ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ বন্ধ, কর্মহীন এই তাঁত শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার তাগিদের কথা জানিয়েছিলেন প্রশাসনকে। এইসব শ্রমিকদের যাতে বাড়ি পাঠানো ব্যবস্থা করা যায় তার জন্যই আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা।
বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং সদস্যদের আবেদন অনুরোধ জমা হতে থাকে শান্তিপুরের ব্লক বিডিও সুমন দেবনাথের কাছে । সংখ্যাও বাড়তে থাকে দিনে দিনে। অবশেষে ৮৮৫ জন তাঁত শ্রমিকের বাড়ি ফেরার আবেদন জমা পড়ে । অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ছটি বাসে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই তাঁত শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার পালা।
বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের নিয়ে রওনা দেয় বাসগুলো। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু, বিডিও সুমন দেবনাথ । জেলার স্বাস্থ্য দপ্তরের এক প্রতিনিধিদল থার্মাল স্কিনং এর মাধ্যমে সবার পরীক্ষা করে । এরপর বেলঘড়িয়া পঞ্চায়েত 2 অফিসের সামনে এক এক করে সবাই বাসে উঠে পড়েন ।
প্রথমদিন দেড়শো জনকে বাড়ি পাঠানো হয়। ১লা মে বাদে প্রতিদিনই ছাড়বে এই বাস। ফুলিয়া ও শান্তিপুরের বহু মহাজন একদিকে যেমন আনন্দিত, অন্যদিকে তাদের বিশ্বকর্মারা ছেড়ে যাওয়ার ফলে দুঃখ হচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধাবেলায় বাস ছাড়বে ।