জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চাকরির টোপ! আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রধান মুখ সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat) ও বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia)! সোমবার অর্থাৎ ৫ জুন দুপুরের দিকে এমনই খুবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে যায়। তবে সেই খবর ভাইরাল হতেই পালটা দিলেন সাক্ষী। টুইট করে জানিয়ে দিলেন যে, আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনও প্রশ্নই নেই। তাঁর আরও দাবি, সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (Wrestling Federation Of India) সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan Singh) বিরুদ্ধে চলা এই আন্দোলন থেকে কেউই পিছিয়ে যাচ্ছেন না। গত এপ্রিল থেকে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে সেই এপ্রিল মাস থেকে যন্তর মন্তরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন দেশের শীর্ষ কুস্তিগীররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরির টোপ পেয়ে, আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রধান মুখ সাক্ষী-ভিনেশ! এই খবর ভাইরাল হতেই পালটা দিলেন সাক্ষী মালিক। সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে  দু'জনেই রেলের চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কিছু প্রচারমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে সাক্ষী টুইটারে লিখেছেন, 'এই খবর ভুল। ন্যায়ের লড়াইয়ে কখনও পিছু হঠিনি, ভবিষ্যতেও হঠব না। সত্যাগ্রহের পাশাপাশি রেলেও নিজের দায়িত্ব পালন করছি। যতদিন না সুবিচার পাচ্ছি, আমাদের আন্দোলন চলবে।'


দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে তাঁর বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন প্রথমসারির কুস্তিগীররা। সেখানে সাক্ষী-বজরং পুনিয়া ও ভিনেশের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও সরকারিভাবে এই বৈঠক নিয়ে মুখ খোলেননি কোনও পক্ষই। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছিল, দীর্ঘ আলোচনা হলেও এখনও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (Wrestling Federation Of India) সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের পাঁচদিনের মধ্যে গ্রেফতারের করার দাবি জানিয়েছিলেন কুস্তিগীররা। 



আরও পড়ুন: Wrestlers Protest And Amit Shah: অমিত শাহের সঙ্গে কুস্তিগীরদের বৈঠকই সার! মিলল না সমাধান সূত্র


আরও পড়ুন: Lionel Messi And Al Hilal: রোনাল্ডোর পর মেসিও সৌদি আরবে, প্যারিসে আল হিলাল-কর্তারা, চুক্তির ঘোষণা খুব দ্রুত!



তবে ব্রিজভূষণ জেলে যাওয়ার আগেই আন্দোলন থেকে পিছিয়ে গেলেন সাক্ষী-ভিনেশ। সঙ্গে বজরং পুনিয়াও। ইতমধ্যেই যোগ দিয়েছেন নিজের নর্দান রেলওয়ের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন সাক্ষী। রিপোর্ট বলছে, গত ৩১ মে-ই নাকি কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি। তাঁর পাশাপাশি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন বজরং পুনিয়াও। কিন্তু চাকরিতে যোগ দেওয়ার অর্থ আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানো যে নয়, তেমনটাই টুইট করে স্পষ্ট করে দিলেন সাক্ষী।


শনিবার অর্থাৎ ৩ জুন রাত ১১টার সময় অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয় প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের। বজরং, সাক্ষী-সহ চার জন কুস্তিগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়েছিলেন। শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের বক্তব্য মন দিয়ে শুনেছেন। তদন্তের গতি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাক্ষীরা। কুস্তিগীরদের আশ্বস্ত করে শাহ বলেছেন, "আইন আইনের পথে চলবে।" এর আগে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর আশ্বাস দিয়ে বজরং, সাক্ষীদের বলেছিলেন, "সব অভিযোগের তদন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে।"


কুস্তিগীরদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হচ্ছে সোমবার অর্থাৎ ৫ জুন। এর আগে শনিবার রাত এগারোটা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে। সূত্রের খবর, নিজেদের দাবি ও সমস্যা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন পাঁচ কুস্তিগীর। তাঁদের মূল দাবি, অভিযুক্ত ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। সমস্ত কথাই শুনেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এখনও কোনও সমাধান পাওয়া যায়নি। 


এদিকে কুস্তিগীররা অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় কথোপকথনের কথা জানিয়েছেন। বজরং পুনিয়া বলেছেন, "আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছি। এর বেশি মন্তব্য করতে পারব না।" বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ পদক বিজয়ী ভিনেশ ফোগাটের সঙ্গে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অগ্রভাগে রয়েছেন। 


বিজেপি সাংসদের গ্রেফতারের দাবিতে এপ্রিল মাস থেকে যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেছেন কুস্তিগীররা। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিনও প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল তাঁদের। কিন্তু প্রতিবাদ কর্মসূচির আগেই রাস্তায় ফেলে কুস্তিগীরদের মারধর করে গ্রেফতার করা হয়। দিল্লি পুলিসের এহেন আচরণের প্রতিবাদে নিজেদের সমস্ত পদক গঙ্গার জলে বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নেন সাক্ষী-বজরংরা। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষক নেতা নরেশ টিকায়েতের পরামর্শে পদক ফেলার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখেন কুস্তিগীররা।     


তবে এতে সমস্যা মিটে যাওয়ার নাম-গন্ধ নেই। অন্যদিকে সাক্ষী-ভিনেশরাও কিন্তু থেমে থাকার পাত্রী নন। কুস্তিগীররা ইতমধ্যেই দিল্লি পুলিসের কাছে দায়ের করা দু’টি এফআইআরে মোট ১০টি নিগ্রহের ঘটনার উল্লেখ করেছেন। সেখানে নির্দিষ্ট করে বলা আছে কোথায়, কখন, কাকে নিগ্রহ করেছেন ব্রিজভূষণ। 


শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নন, এমনকি বেশ কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলা কুস্তিগীরও ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন। সেই অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের দাবি ছিল, তাঁদের সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার জন্য বারবার বিরক্ত করেছিলেন ব্রিজভূষণ। গত ২৮ এপ্রিল দিল্লি পুলিসের কাছে মোট দুটি এফআইআর দায়ের করেছিলেন দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীররা। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ৩৫৪, ৩৫৪এ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এরমধ্যে একটি এফআইআর-এ বলা হয়েছে ছ’জন প্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগীরের কথা। দ্বিতীয়টিতে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগীরের বাবা অভিযোগ করেছেন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। তবে এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত কর্তা। এখন অমিত শাহ কোনও ব্যবস্থা করেন কিনা সেটাই দেখার। 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)