প্রসেনজিত্ সর্দার: কামড় দিয়েছিল সাপ। সেই সাপকে জীবন্ত অবস্থায় ধরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে হাজির গৃহবধূ। আর এমন ঘটনায় সাপ দেখতে হাসপাতালে উপচে পড়ে ভীড়। বর্তমানে ওই বধু ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে বারুইপুর থানার অন্তর্গত রাঙাবেলেঘাটা গ্রামের বধূ কৃষ্ণা নস্কর। নিজের পেয়ারাবাগানে কাজ করছিলেন। সেই সময় তাঁর হাতে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ কামড় দেয়। কোনও রকম ভয় না করে সাপটিকে ধরে ফেলেন। পরিবারের লোকজনদের ঘটনার কথা জানান। চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি তাকে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। জীবন্ত সাপ নিয়ে ওই গৃহবধূ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এলে হইচই পড়ে যায়। সাপ দেখার জন্য সাধারণ মানুষ ভীড় জমায়। তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু করেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায় ও ডাঃ মধুরীমা মণ্ডল।
অন্যদিকে, নরেন্দ্রপুর থানার রাধানগর এলাকার বাসিন্দা রামপ্রসাদ মণ্ডল মাঠে গোরু আনতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর পায়ে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ কামড় দেয়। চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি তিনি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে হাজির হন। বর্তমানে সাপের কামড়ে আক্রান্ত দুজনেই সুস্থ রয়েছেন।
আরও পড়ুন- আগামী ৩ দিন টানা ঝড়বৃষ্টিতে ভাসবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা, ভারী বর্ষণ উত্তরবঙ্গেও
আরও পড়ুন-অমানবিক! ক্যানসারে মৃত বোনের দেহ নিল না দাদা-বৌদি, ৬ ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে রইল মৃতদেহ
ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, ‘চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে দুজন ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা চলছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ এভিএস দেওয়া হয়েছে। তবে বধূর ক্ষেত্রে একটা বিরল ঘটনা জানা গিয়েছে। কৃষ্ণা দেবীকে গত ১০ বছর আগে চন্দ্রবোড়া সাপ কামড় দিয়েছিল। বর্তমানে চন্দ্রবোড়া সাপের প্রজনন অত্যধিক হারে বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া চন্দ্রবোড়া সাপ সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। কামড়ের ঘটনা আরো ঘটবে। সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন। তাছাড়া সাপ কামড় দিলে ধরে কিংবা মেরে আনার প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে বিপদ বাড়তে পারে।মনে রাখতে হবে সাপে কামড় দেওয়ার সাথে সাথে সময় নষ্ট না করে সরাসরি নিকটবর্তী সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানো জরুরি। সেক্ষেত্রে বিপদের ঝুঁকি থাকে না।’
সম্প্রতি ক্যানিংয়ে এক ব্যবসায় লোহার দোকানে বিশাল আকারের কেউটে সাপ ঢুকে পড়ে হঠাৎই। ক্রেতা ও দোকানদার মধ্যে দোকানের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দোকানদার শুভঙ্কর পাল তড়িঘড়ি সাপটিকে আটক করে। পরে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেয়। একদিকে যখন সাপের কামড় বাড়ছে আর অন্যদিকে সাপকে না মেরে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে সাপের যে বৃদ্ধি দিন দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা বাড়ছে সেটা তার প্রমাণ।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)