নারায়ণ সিংহ রায়: শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাদাস কলোনীর ছেলের হাতে খুন হলেন মা। মৃত মঞ্জু মহন্ত ষাটোর্ধ , মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের সদস্য তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে সুবেদ মহন্ত সেও মানসিক ভারসাম্যহীন। বড় ছেলে শ্রীকৃষ্ণ মহন্ত ওরফে পাপাই মাদকাসক্ত। মঞ্জু দেবীর এক মেয়েও রয়েছে, মেয়ে রত্না বর্মন বিবাহিত। দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ি বিক্রি নিয়ে মায়ের উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে শ্রীকৃষ্ণ ওরফের পাপাইয়ের উপর। মায়ের উপর মারধোর প্রায়ই নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রায়শই প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে পরিবারের সাময়িক সমস্যার সমাধান হত।
Add Zee News as a Preferred Source
আরও পড়ুন: ভয়ংকর বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাজি কারখানা; ঝলসে মৃত কমপক্ষে ৪, আহত বহু
শুক্রবার দুপুরে বাড়িতে ঢোকে পাপাই। মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের উপর নির্মম অত্যাচার চালায়। বাড়ির দলিল পকটস্থ করে মায়ের উপর মারধোর চালিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় গলায় দড়ি পেঁচিয়ে খুন করে সে। চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে মঞ্জু মহন্ত। অন্যদিকে রক্ত মুছতে ব্যস্ত ছেলে। প্রতিবেশীদের দেখেই দলিল নিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দিতে চাইলে সে চেষ্টা বিফল হয়। প্রতিবেশীরাই ধরে ফেলে তাকে। খবর দেওয়া হয় শিলিগুড়ি থানায়। পুলিস এসে শ্রীকৃষ্ণ মহন্তকে আটক করে । অন্যদিকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় । মৃত মঞ্জু মহন্তর মেয়ে রত্না বর্মন বলেন, "আজ সকালেই বাড়িতে এসে আমি মা ও ভাইকে দেখে গিয়েছি। ও-ই সময় আরেক ভাই এসে বাড়ি বিক্রির কথা জানালে আমি বাঁধা দিই। মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও ভাই কোথায় থাকবে বাড়ি বিক্রি হলে। আমি আপত্তি জানিয়ে চলে যাই। তারপরই এই খবর পেয়ে ছুটে আসি।"
আরও পড়ুন: হাওড়া প্ল্যাটফর্মে কেলেঙ্কারি কাণ্ড! মাথায় ব্যান্ডেজ, শেডের উপর চড়ে বসলেন যুবক...
অন্যদিকে প্রতিবেশী নয়ন দে বলেন , "চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখি মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে মঞ্জু দি। ছেলে নেশা করে বেড়ায়, আমরাই দেখে রাখতাম। পাপাই রক্ত মুছছিল তখনই আমার সন্দেহ হয়। সে দলিল পকেটে করে পালানোর চেষ্টা করলে আমিই তাকে ধরে ফেলি। তারপর পুলিশের হাতে তুলে দিই।" প্রতিবেশী মনিকা দাস বলেন , "আমরা এসে দেখি চারদিকে শুধু রক্ত। তার মাঝে উনি পড়ে রয়েছেন। গলায় রসি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। বাড়ি বিক্রি করা নিয়েই সমস্যা।" ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভয়া বোস বলেন , "খবর পেয়ে ছুটে আসি। মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। তার আরেক ছেলে রয়েছে সেও মানসিক ভারসাম্যহীন। আরেক ছেলেই সকালে বাড়িতে এসে এভাবে খুন করে। সম্পত্তির কারনেই ছেলেটি তার মাকে খুন করেছে এবং খুব বিভৎসতার সাথে এই খুন। পুলিস এসে অভিযুক্তকে আটক করেছে। উল্লেখ্য,গত পরশু শিলিগুড়ির পরিধাননগর থানার অন্তর্গত ১ নম্বর ওয়ার্ডে ছেলের হাতে মা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয় ছেলে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)