ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত শুনানি শেষ, কিছুক্ষণের মধ্যেই রায়

বিচারপতিদ্বয়ের মন্তব্য, ‘সিঙ্গেল বেঞ্চের মনোভাব আগাম আন্দাজ করা ঠিক নয়।‘ সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলা যাওয়া ঠেকাতে মরিয়া কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চের শুনানি।  সিঙ্গেল বেঞ্চেই মামলা ফেরাতে চান বিচারকরা, তবে  বিকাল সাড়ে ৪টায় চূড়ান্ত রায় দেবে ডিভিশন বেঞ্চ।

Updated By: Apr 16, 2018, 04:51 PM IST
ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত শুনানি শেষ, কিছুক্ষণের মধ্যেই রায়

নিজস্ব প্রতিবেদন: হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শেষ হল পঞ্চায়েত মামলার শুনানি। এদিন তৃণমূলের আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিঙ্গেল বেঞ্চে যাওয়ার পরামর্শ দিল বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতিদ্বয়ের মন্তব্য, ‘সিঙ্গল বেঞ্চের মনোভাব আগাম আন্দাজ করা ঠিক নয়।‘ ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা ফেরাতে চাইলেও, তা ঠেকাতে মরিয়া কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় চূড়ান্ত রায় দেবে ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে রাজ্য জুড়ে অশান্তির অভিযোগে বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়। এরপরই ভোট প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই ডিভিশন বেঞ্চে যায় তৃণমূল কংগ্রেস ও নির্বাচন কমিশন।

শুনানির শুরুতেই তৃণমূলের হয়ে সওয়াল করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন,  বিজেপি হাইকোর্টের কাছে তথ্য গোপন করে সুপ্রিম কোর্টে গেছে। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যেসব নির্দেশ দিয়েছে সেগুলি পড়ে দেখেন বিচারপতিরা। সুপ্রিম কোর্টের ৯  ও ১১ এপ্রিলের রায় খুঁটিয়ে পড়ার জন্য কল্যাণকে বলেন তাঁরা। সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি থাকলেও ডিভিশন বেঞ্চে কেন? বিচারপতিরা কল্যাণকে প্রশ্ন করেন। সংবিধানের ২৪৩(O) ধারা উল্লেখ করে কল্যাণ দাবি করেন, পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সংবিধানের ২২৬ ধারায় হাইকোর্টের অধিকার কি ২৪৩(O) ধারাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে? প্রশ্ন করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। 

সোমবার ২ বিচারপতি তৃণমূলের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলা চলছে, তবুও আপনারা কেন ডিভিশন বেঞ্চে আসলেন?’  কল্যাণ দাবি করেন, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের পঞ্চায়েত মামলা শোনার এক্তিয়ার নেই। নিজেকে বঞ্চিত মনে করেই তিনি ডিভিশন বেঞ্চে এসেছেন।এরপর বিচারপতিদ্বয় পাল্টা প্রশ্ন করেন, "সিঙ্গেল বেঞ্চে পিটিশন দাখিলে কার আপত্তি?" বিচারপতিদের এমন প্রশ্ন শুনে পঞ্চায়েত আইনের ৪৬(২) ধারা উল্লেখ করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ৯ এপ্রিলে কমিশনের বিজ্ঞপ্তি (মনোনয়ন জমার সময়সীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি যা সেদিন রাত ১০টা নাগাদ জারি করা হয়) অবৈধ। যদিও শাসকদলের আইনজীবীর এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন বিচারপতিরা।

সোমবার আদালতে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন কমিশনের প্রতিনিধি নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে নীলাঞ্জন জানান, "আমি আইনজ্ঞ নই।" এই কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন দুই বিচারপতিই। নীলঞ্জন শাণ্ডিল্য বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিজেপির পিটিশনের মান্যতা নেই।’ একথা শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্যকে প্রশ্ন করে, ‘আপনি কি একথা সিঙ্গেল বেঞ্চে জানিয়েছিলেন?’  উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে বিচারপতিরা নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্যকে বলেন, ‘কমিশনের সচিব হয়েও আপনি কেন পঞ্চায়েত আইন জানেন না?’

পঞ্চায়েত সচিবের কাছে ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, ''পঞ্চায়েতের ৫ বছরের মেয়াদ কবে শেষ হচ্ছে?'' পঞ্চায়েত সচিব সৌরভ দাস জানান, ''অগাস্ট পর্যন্ত পঞ্চায়েতের ৫ বছরের সময়সীমা।'' সূত্রের খবর, বিচারপতিরা মামলাটি সিঙ্গেল বেঞ্চে ফেরাতে চান। এখন শেষ পর্যন্ত কী রায় দেয় ডিভিশন বেঞ্চ, উত্তর সময়ের অপেক্ষা।

 

 

.