'এক সন্তান নীতি'-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে চিন

"এক আশা, এক আনন্দ, এক দায়িত্ব" এই ট্যাগ লাইন তিন দশক ধরে বোপন করে চলেছে চিন সরকার। পরিবার পরিকল্পনায় চিনের মানুষ দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার ইচ্ছাপূরণকে তিলে তিলে শেষ করেছে। এখন অনেকেই তাদের জীবনযাত্রায় 'ওয়ান চাইল্ড পলিসি' সঠিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে করেন।

Updated By: May 5, 2015, 04:26 PM IST
 'এক সন্তান নীতি'-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে চিন

ওয়েব ডেস্ক: "এক আশা, এক আনন্দ, এক দায়িত্ব" এই ট্যাগ লাইন তিন দশক ধরে বোপন করে চলেছে চিন সরকার। পরিবার পরিকল্পনায় চিনের মানুষ দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার ইচ্ছাপূরণকে তিলে তিলে শেষ করেছে। এখন অনেকেই তাদের জীবনযাত্রায় 'ওয়ান চাইল্ড পলিসি' সঠিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে করেন।

কিন্তু ২০১৩ চিন সরকার 'এক সন্তান নীতি' লঘু করলেও, এই জীবনযাত্রার অভ্যেস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি সাধারণ মানুষ। কঙ লু , পেশায় চাকুরিজীবী, এই প্রসঙ্গে জানান, "আমার স্বামীকে দ্বিতীয় সন্তান পরিকল্পনার কথা জানালে, সে একবারেই খারিজ করে দেয়। সে জানায়, দ্বিতীয় সন্তানের পরিকল্পনা বর্তমান পরিস্থিতিতে উপযুক্ত নয়।' কঙ লুর মতো অনেকেই মনে করছেন, দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা তাদের একেবারেই নেই।

এছাড়াও চিনের অনেক দম্পতী মনে করেন, দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার জন্য সমাজে উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। তিন বছরের নিচে শিশুদের জন্য উপযুক্ত কিন্ডারগার্টেন নেই। ভালো আয়া পাওয়া যায় না। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করলে তাদের সন্তানের দেখভাল ভালো হবে না। এইসব কারণ ছাড়াও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তিন দশক ধরে 'এক সন্তান নীতি' চালু হওয়ার কারণে শহরের চাকুরিজীবী মানুষ দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার উত্সাহ হারাচ্ছেন।

১৯৮০ তে চিন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য 'এক সন্তান নীতি' চালু করে। এই নীতির বিরুদ্ধে বিশ্ব জুড়ে নিন্দায় সরব হয়ে উঠলেও এক বছরের মধ্যে দারুণ সুফল পায় চিন। ১৯৪৯ তে জন্মের হার যেখানে এক হাজারে ২২৭ ছিল, ১৯৮১ নেমে আসে ৫৩ জনে।

কিন্তু চিন সরকাররের ব্যক্তি স্বাধীনতায় 'নাক গলানো নীতি'র সাইড এফেক্ট বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বেশী শ্রম নষ্টের হার চিনে। ২০১৪ চিনের এক জন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৩০ লক্ষ লোকের অভাব দেখা যাচ্ছে । জন্ম নিয়ন্ত্রণের হার অত্যাধিক কমে যাওয়ায় বাড়ছে বয়সের ব্যবধান। ২০৩০ মধ্যে চিনের জন সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পাবে বয়সের ব্যবধান। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের অর্থনীতির উন্নতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই 'এক সন্তান নীতি'। ভবিষ্যতে চিনে সামাজিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই মুহূর্তে বেজিং, সাংহাইয়ে 'এক সন্তান নীতি' লঘু করেছে চিন সরকার। গ্রামের দিকে কোনও পরিবারে প্রথম সন্তান মেয়ে হলে, দ্বিতীয় সন্তানের আবেদন করতে পারবে এমন ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সেভাবে কোনও সুফল মিলছে না।

.