Bangladesh: শেখ হাসিনার জন্যই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কাঁটা! কবে স্বাভাবিক হবে সম্পর্ক?
Bangladesh: একটানা ১৬ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে থাকার সময় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে 'সুসম্পর্ক' তৈরি করেছিল হাসিনা সরকার। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে টানাপোড়েন ও তিক্ততা সৃষ্টি...

সেলিম রেজা: বদলের বাংলাদেশে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে একটানা ১৬ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে থাকার সময় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে 'সুসম্পর্ক' তৈরি করেছিল হাসিনা সরকার। হাসিনা-মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক 'নতুন উচ্চতায়' উঠেছিল।
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
কিন্তু পরিবর্তিত সময়ে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোপুরি। এখন সেই শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
বাংলাদেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। সে সময় ভারত সরকার সে দেশের রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে তাঁকে আশ্রয় দেয়। তবে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে বিভিন্ন টানাপোড়েন শুরু হয়। কারণ পালিয়ে যাওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশে গণহত্যার সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারত সরকারের কাছে চিঠি পাঠালেও এখনও তার জবাব পায়নি বাংলাদেশ সরকার। এমনকি শেখ হাসিনা ভারতে বসে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক বা উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে না পারেন সে ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানানো হলেও মোদি সরকার তা নিশ্চিত করতে পারেনি। শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক অডিও বার্তা ছড়িয়ে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: Mother killed Son: তিক্ত যুদ্ধ কোর্টে, স্বামীকে শিক্ষা দিতে ছেলের নলিতে ছুরি সরিতার...
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অতীতে বারবার বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে সোনালী অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৬ বছরে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার শীর্ষ পর্যায়ের সফর হয়েছে। সে সময় উভয় দেশের শীর্ষ নেতাই দুই দেশের সম্পর্ককে সোনালী অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেন। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে টানাপোড়েন ও তিক্ততা তৈরি হয়েছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে শীতলতাও দেখা যাচ্ছে। আর এটি মূলত তৈরি হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়ার কারণেই।
ঢাকার পক্ষ থেকে দিল্লির কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে শেখ হাসিনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অব্যাহতভাবে মিথ্যা, বানোয়াট মন্তব্য এবং বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনারকে ডেকে কড়া প্রতিবাদও জানিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরেও শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতি থেমে নেই, যা দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: Bangladesh Crisis: বদলের বাংলাদেশে বৃদ্ধি মূল্যের কারণে ওষুধ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ...
শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিলেও এখনও তিনি সেখানে কোন স্ট্যাটাসে (মর্যাদায়) আছেন, তা জানতে পারেনি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মাদ রফিকুল আলম জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, তবে এই ফেরত চাওয়ার সঙ্গে তার স্ট্যাটাসের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি সেখানে কোন স্ট্যাটাসে আছেন, তা আমাদের কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এখন আমরা অপেক্ষা করবো। এ বিষয়ে আসলে কোনো ধরা-বাঁধা নিয়ম নেই। আমরা অপেক্ষা করছি।
এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জি ২৪ ঘন্টাকে বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে, যাতে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা যায়। যতক্ষণ না ভারত সরকার তাকে ফিরিয়ে দেয়, আমরা আশা করবো যে তারা অন্তত (হাসিনার ওপর) কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে, যাতে তিনি উস্কানিমূলক ও মিথ্যা মন্তব্য না করেন, যা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)