পৃ.উ-৯: হুমায়ুন কবির'কে চিঠি: আমি বিশিষ্ট বাঙালিদের মধ্যে পড়ি না; আমার বিশ্বাস জীবিত মহত্তর বাঙালিদের প্রশ্রয় পাওয়ার মতনও কেউ নই আমি। কিন্তু আমি সেই মানুষ, যে প্রচুর প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রতিটি দ্রব্যকে সোনা বানিয়ে তুলতে চায় অথবা মহত্ কিছু-যা শেষ বিচারে কোনও একটা জিনিসের-মতন-জিনিস-কিন্তু ভাগ্য এমনই যে, তার খাদ্য জুটছে না। কিন্তু, আশা করি, ভবিষ্যতে খাঁটি মূল্যের যথার্থ ও উপযুক্ত বিচার হবে; আমার ভয় হয়, সেই ভালো দিন দেখতে আমি বেঁচে থাকব না।
আপনার কথা-মতো আমি জ্যোতিবাবু'র অথবা বি.সি.রায়'এর সঙ্গে এখনও দেখা করার চেষ্টা করিনি; আমার মনে হয়, আমার মতন লোকের পক্ষে তাঁরা দূরের মানুষ। আমি যেন অনুভব করি, আপনিই আমাদের মতন লোকের জন্য এক-মাত্র মানুষ; আপনার উপর আমার গভীর আস্থা আছে। আমি সর্বদা বিশ্বাস করি যে, আপনার নিজের পরিপূর্ণ শাসনের ভিতরে আছে এমন কোনও একটা আমার পক্ষে উপযুক্ত জায়গায় আপনি আমাকে বসিয়ে দিতে পারেন; আমাকে একটা উপযুক্ত কাজ দিয়ে দেবার মতন সুযোগ আপনার সমূহ রয়েছে। আমার আর্থিক অবস্থাটা এখন এতটাই শোচনীয় যে, যে কোনও এক জন সকর্মক অপর মানুষ যে-কাজ করতে পারে, কেন্দ্রীয় সরকার'এর অধীনে সে-কাজ আমারও করতে পারা উচিত্। আমি মনে করি, জিনিসটা এক জন মানুষকে সেই সম্মানটা দিয়ে দিতে পারে, যা প্রতিটি মানুষ নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলে অর্জন করে; তার বেশি আর কিছু আমি চাই না। আমার দেশ আমার অস্তিত্বের স্তর-মাত্রাটা মনে রেখে সেই যথাযোগ্য সুযোগটা আমাকে দিক যাতে আমি আমার ন্যূনতম জীবনযাপন নিয়ে থেকে যেতে পারি।
প্রাইভেট কলেজের অধ্যাপকের কাজ ক্ষুদ্র কাজ: অধিকন্তু, অন্যান্য নানা কারণেও ওই কাজ আমি আর করতে চাই না। আমার খুবই পছন্দ তেমন কোনও একটা মানানসই কাজ, যাতে অনেকটা গবেষণা করতে হয়, লিখতে হয়, এবং ভাবনাচিন্তা করতে হয়।
( 20 )