স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 


সচিন তেন্ডুলকরের জন্মদিন ২৪ এপ্রিল। কিন্তু মানুষের জন্মদিন পালন হয় ২৪ ঘণ্টা ধরে। তাঁকে তো এই পৃথিবী চেনে ক্রিকেট ঈশ্বর হিসেবেই। ঈশ্বরের জন্মদিন পালনও কি ২৪ ঘণ্টা ধরে হয় নাকি! ওটা অন্তত হোক ৪৮ ঘণ্টার। সেই সূত্র ধরেই-আজ সচিনকে নিয়ে একটা লেখা। এবার ৪৩ বছরে পা দেবেন সচিন তেন্ডুলকর। নির্দিষ্ট সময়ের ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই তাই জন্মদিন পালনটা শুরু করে দিলাম। প্রিয় সচিনকে নিয়ে নিজের ২৪টা ফ্যান্টাসি শেয়ার করলাম আপনাদের জন্য। দুনিয়ার সব সচিনপ্রেমীদের জন্য। এখন তো খুব 'ফ্যান' চলছে চারিদিকে। সেই হাওয়াতে গা ভাসালাম প্রিয় সচিনের জন্য। পড়ুন, ভালো লাগবে.....


১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি পেয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ভাগ্যিস করেছিলেন। স্যার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলতে হল না। আশা, সচিন তেন্ডুলকর আপনি স্যার উপাধি পাওয়ার আগেই তা প্রত্যাখান করে যাবেন। আপনি ক্রিকেট ঈশ্বর। এরপর কে আপনাকে স্যার বলল বা না বলল, তাতে কী এসে যায়!


২) সচিন তেন্ডুলকরের আত্মজীবনী কেন নেই এখনও পাঠ্যপুস্তকে! সরকারের কাছে আবেদন, অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকে রাখা হোক সচিনের জীবনী। ছাত্ররা সফল হওয়ার সেরা চাবিকাঠিটা পেয়ে যাবেন সেখান থেকেই।


৩) দেশের কয়েকটি নির্দিষ্ট মুদ্রায় মানে কয়েনে এবার থেকে রাখা হোক সচিনের ছবি। এটা হবে কিংবদন্তিকে সম্মান জানানোর দারুণ উপায়। সরকার ভেবে দেখুক।


৪) আমাদের দেশের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কাঞ্চনজঙ্ঘা। এখন তো কত মেট্টো স্টেশনের নাম বদলে দেওয়া হল। তা হলে কাঞ্চনজঙ্ঘার নাম সচিন তেন্ডুলকর শৃঙ্গ রাখলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে!


৫) আমাদের দেশের চিরকালীন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করা হোক সচিন তেন্ডুলকরকে। অন্তত ক্রিকেট খেলিয়ে দেশগুলোর জন্য তো বটেই। এই বিষয়ে তাঁর থেকে যোগ্য আর কে হবে!


৬) পাকিস্তান তো কতবার বলেছে, তাদেরকে সচিন তেন্ডুলকরকে দিয়ে দেওয়া হলে, তারা কাশ্মীরকেও ছাড়তে তৈরি। না না, সচিনকে পাকিস্তানের কাছে দিয়ে দিতে হবে না। শুধু LOC - বা নিয়ন্ত্রণ রেখার নাম রাখা হোক, সচিন রেখা। মনে হয়, দু দেশের অনেক মানুষ বেঁচে যাবেন।


৭) আইসিসি কি তাঁদের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারটা সচিন তেন্ডুলকরের নামে উত্সর্গ করতে পারে না! পুসকাস ট্রফি দেওয়া হয়। লেভ ইয়াসিন ট্রফি দেওয়া হয় ফুটবলে। তাহলে ক্রিকেটে কেন সচিন তেন্ডুলকর পুরস্কার দেওয়া হবে না!


৮) সচিন তেন্ডুলকরের জন্মদিন অর্থাত্ ২৪ এপ্রিল-কে কেন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হবে না! যখন গান্ধীজির জন্মদিনে ২ অক্টোবর সরকারি ছুটি থাকে? গান্ধীজি আমাদের জাতির জনক। সচিনও যে আমাদের ক্রিকেটের সেরা সন্তান। তবে আপত্তি কোথায়!


৯) এখন চিঠি চালাচালি কমে গিয়েছে অনেক। তবুও ডাক ব্যবস্থা তো আর দেশ থেকে উঠে যায়নি। তাহলে কেন সচিন তেন্ডুলকরের ছবি দিয়ে ডাক টিকিট প্রকাশ করা হবে না! সেই ডাকটিকিট ব্যবহার করা হোক প্রতি বছর গোটা এপ্রিল মাস। এটা ক্রিকেটের সেরা সন্তানকে ট্রিবিউট জানানোর অন্যতম সেরা উপায় তো বটেই।


১০) ক্রিকেট খেলায় তো অনেক নিয়ম আছে। তেমনই কোনও একটা নিয়মের নাম এবার থেকে রাখা হোক সচিন তেন্ডুলকরের নামে। উদাহরণ হিসেবে বলা- যেমন বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের ফয়সলা হয় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে। তেমনই কোনও একটা নিয়ম হোক সচিন তেন্ডুলকর নামে।


১১) শুধু মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়েতে নয়, সারা দেশে যতগুলো ক্রিকেট স্টেডিয়াম আছে, সবকটাতে অন্তত একটা স্ট্যান্ডের নাম করা হোক সচিন তেন্ডুলকরের নামে।


১২) দেশের সবথেকে শক্তিশালী ক্ষেপনাস্ত্রের নাম রাখা হোক সচিন তেন্ডুলকরের নামে। কারণ, বিশ্বের কাছে সচিন তেন্ডুলকরের থেকে ভয়ঙ্কর আর কিছু ভারতের অন্য কিছু আছে নাকি! বাকি দেশগুলো এমনিতেই ভয় পেয়ে যাবে।


১৩) যেমন কেরলকে বলা হয় ঈশ্বরের নিজের জায়গা তেমনই ভারত অতুল্য ভারতের পরিবর্তে অন্তত এপ্রিল মাসটা পর্যটনের জন্য বিজ্ঞাপন করুক ঈশ্বরের নিজের দেশ ভারত বলে।


১৪) এখন তো আইসিসি সব আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজায়। তাহলে এপ্রিল মাসের খেলাগুলোতে কেন ভারতের ম্যাচ থাকলেই একবার বাজানো হবে না, সচিন অ্যানথেম!


১৫) মারাদোনাপ্রেমীরা ফুটবলের রাজপুত্রের জন্য একটি অব্দ মেনে চলেন। তাহলে কেন সচিনপ্রেমীরা ক্রিকেট ঈশ্বরকে নিয়ে একটি অব্দ বা ক্যালেন্ডার তৈরি করে রাখবেন না! সেই ক্যালেন্ডার বর্ষের শুরুর দিনটা হোক সচিনের জন্মদিন ২৪ এপ্রিল থেকেই।


১৬) জলপথে গতির একক নট। তাহলে এবার থেকে উচ্চতার একক কেন করা হবে না সচিন তেন্ডুলকর! কারণ, সচিনের থেকে উচ্চতার সমার্থক শব্দ আমাদের দেশে আর কিছু হতে পারে নাকি?


১৭) আমাদের দেশে নানা ধর্মের বাস। সব ধর্মের পীঠস্থান ভারত। সচিন তেন্ডুলকর নামটাও তো আমাদের কাছে একটা ধর্ম। তাহলে কেন এ দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা নিজেদের ধর্মের নাম সচিন তেন্ডুলকর বলবেন না!


১৮) লতা মঙ্গেশকরের গলা রিসার্চ করা হবে। তাহলে কেন সচিন তেন্ডুলকরের শরীরের কোষ সংরক্ষণ করা হবে না। বিজ্ঞানীরা তো কতকিছুই পারেন। কে বলতে পারেন, হতে পারে আমরা আগামিদিনের সচিন তেন্ডুলকর সৃষ্টি করতে পারব তাহলে! তার থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে!


১৯) মুম্বইয়ের শিবাজি পার্ক। সচিন তেন্ডুলকরের বেড়ে ওঠার মাঠ। রমাকান্ত আচরেকরের কাছে ওই মাঠ থেকেই তো বোলারদের শাসন করা শিখেছিলেন ছোট্ট সচিন। তাহলে কেন ওই মাঠটাকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হবে না এখন থেকেই।


২০) মা-এর থেকে বেশি ভালোবাসার, সম্মানের, কৃতজ্ঞতার, সৃষ্টির আর কোনও শব্দ আছে নাকি! আমরা কথায় বলি রত্নগর্ভা। সচিন তেন্ডুলকরের মায়ের থেকে রত্নগর্ভা কী হয় নাকি! তাহলে সচিনের মাকে কী একটা বিশেষ উপাধি দেওয়া যায়না এই বলে - 'ক্রিকেট ঈশ্বর জননী'


২১) বাবার মৃত্যুর পর থেকেই যতদিন সচিন খেলেছেন, সেঞ্চুরি করলেই আকাশের দিকে চেয়ে থেকেছেন। হয়তো নিজের বাবাকে খুঁজে বেরিয়েছেন। এই তো আকাশের কতকিছুরই তো আমরা কত নাম দিই। যেমন শুকতারা, ধ্রুবতারা। তেমনই একটা তারার নাম রাখা হোক না সচিনের বাবার নামে। তাহলে তো আর প্রিয় সচিনকে আকাশের দিকে চেয়ে ওভাবে বাবাকে খুঁজে বেরাতে হয় না।


২২) যেমন রঞ্জি ট্রফি, দলীপ ট্রফি হয়, দেশের একটা বড় প্রতিযোগিতার নাম রাখা হোক না সচিন তেন্ডুলকরের নামে।


২৩) সচিন তেন্ডুলকরের ছেলে অর্জুন তেন্ডুলকর এখন ক্রিকেট খেলেন। তাঁকে কিনা পরীক্ষা দিয়ে দলে ঢুকতে হবে! গণতন্ত্রেও এই একটা ক্ষেত্রে দেওয়া হোক না রাজতন্ত্রের সুযোগ। রাজা, সম্রাটদের সন্তানরা তো পারিবারিক সূত্রেই সিংহাসনে বসে এসেছেন চিরকাল। আধুনিক ভারতেও কেবলমাত্র একটাক্ষেত্রে স্বীকৃতি দেওয়া হোক না রাজতন্ত্রের। মনে হয় না কেউ আপত্তি করবে বলে।


২৪) অমর শব্দটার সৃষ্টি কীভাবে হয়েছে, জানা নেই। এই পৃথিবীতে মানুষ অমর হয় না আজও। কিন্তু সচিন যে ক্রিকেট ঈশ্বর। তাহলে তিনি কখনও এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন কীভাবে! আমাদের ঈশ্বরকে একটাই অনুরোধ - ঠাকুর গো, সচিনকে অমর করে দাও.......প্লিজ।