স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ছেলেবেলায় দেখা পৃথিবীটা কীভাবে গত ১৫-২০ বছরে কীভাবে বদলে গেল! মানুষের জীবনের দাম হয়তো কোনওদিনই ছিল না সেই শুরুর দিন থেকেই। সেই যেদিন মানুষ গোষ্ঠী হয়ে থাকতে শুরু করল, হিংসা আসতে সময় নেয়নি। মানুষও প্রাণী আবার বাঘ, সিংহরাও প্রাণী। তবু, আমরা এত গর্বিত। এর কারণ, আমরা সবথেকে বুদ্ধিমান প্রাণী। কিন্তু সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে যে মানুষের এই বুদ্ধিটাই চলে গেল কে জানে! কেন বললাম এরকম কথা? কারণ, আজ মানুষ পৃথিবীর কত লুপ্ত হতে থাকা প্রাণীকে বাঁচাচ্ছে। সংরক্ষণ করছে। অথচ, মানুষ নিজে, নিজের জাতিকেই তো মেরে ফেলছে। এভাবে চললে কতদিন থাকবে পৃথিবীতে মানুষ?


আজ খবর কাগজ, টেলিভিশন, ওয়েবসাইট, যেখানে চোখ রাখি, সেখানেই দেখতে পাই শুধু মানুষ মারার কাহিনি। এক-একটায় একেক রকম। কিন্তু উপসংহার সেই এক। মানুষই মেরেছে মানুষকে! আজ ঘটনাচক্রে একটি ফুটেজ ভাইরাল। মানে, সবাই দেখল আর কী! কী ছিল সেই ফুটেজে? একটি বাঘ দিব্যি গাড়ির পাশ থেকে টেনে নিয়ে চলে গেল এক মহিলাকে! কী ভয়ঙ্কর! দেখেই গা-টা শিউরে উঠল। মুখ থেকে বেরিয়ে এল, পাশবিক! বলেই বুঝলাম, বাঘের সঙ্গে তো মানুষের খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক। তাই বাঘ মামা মানুষ টেনে নিয়ে যাচ্ছে, এটা প্রকৃতির যুক্তিতে একেবারে ঠিক। কিন্তু মানুষ এভাবে মানুষকে মারে কীভাবে!


ওই বাঘ-মানুষের কথা ভাবতে ভাবতেই মনে হল, রাতে অন্তত চারটে লাইন লিখব মানুষটাকে নিয়ে। যাঁকে আজ সবথেকে মিস করলাম ওই বাঘের ঘটনার সময়। কে তিনি? জিম করবেট! হ্যাঁ, আজ জিম করবেটের জন্মদিন। কী বলবেন তাঁকে? তিনি শিকারি নাকি লেখক? আপনি তাঁকে যা খুশি বলুন। আমি এটুকু বলতে পারি, মানুষটা যেমন সাবলীল ছিলেন বন্দুক চালাতে, ততটাই সাবলীল ছিলেন কলম চালাতেও! আজকের দিনে মানে ২৫ জুলাই ১৮৭৫ সালে আমাদের দেশের উত্তরপ্রদেশে জন্মে ছিলেন। তাঁর কথা তো অনেক। কীভাবে মানুষ খেকো বাঘ মেরছেন! কত মানুষকে বাঘ-সিংহ, হিংস্র জন্তু জানোয়ারের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। সত্যিকারের বন্দুকবাজ যে তিনিই। তিনি ছিলেন রূপকথার বন্দুকবাজ। কত মানুষকে ওই বন্দুক নামের অস্ত্রটা দিয়ে বাঁচিয়েছেন জানোয়ারের হাত থেকে। আজ ভাবতেই অবাক লাগে যে, আমেরিকা, জার্মানি, গোটা বিশ্বে দাপিয়ে বেরাচ্ছে বন্দুকবাজরাই! কী অসম্মান হয়ে গেল জিম করবেটের বিশেষণটা! হলই বা।


আজকের পরও কিছু মানুষ ঠিক জানবেন, জিম করবেট বলে এক সাহসী বন্দুকবাজ ছিলেন। তিনি মানুষকে বাঁচাতেন কাঁধের বন্দুক দিয়ে। রাতে বসতেন লিখতে। আর আজও বিশ্বজুড়ে রয়েছে বন্দুকবাজরা। তারা মানুষকেই মারছে! জিম করবেটের আত্মা আজ কী ভাবছে কে জানে! যাই ভাবুন জিম, একটা কথা বলার। আপনার মতো বন্দুকবাজকে সেলাম। আপনি বেঁচে থাকলে আজ ওই বাঘটার পক্ষে মহিলাকে টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হত না। আফশোস, আমরা পৃথিবীটাকে শেখাতে পারলাম না যে, বন্দুক হাতে নিয়ে মানুষের জিম করবেট হওয়া উচিত ছিল। মানুষ বন্দুক হাতে নিয়ে ওই হিংস্র জানোয়ারই হয়ে গেল!



আরও পড়ুন দাড়ি নিয়ে পৃথিবীর সেরা ১০ তথ্য