Aindrila Sharma Passes Away : `সে চলে গেলেও থেকে যাবে তার স্পর্শ আমার হাতের ছোঁয়ায়…`
অবশেষে যার ফিরে আসার কথা ছিল সে চলে গেল, থেকে গেল তার স্পর্শ। সব প্রার্থনা মিথ্যে করে মাত্র ২৪ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। ১ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই থেকেই হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ফিরে আসার অদম্য চেষ্টা করেছেন। ঐন্দ্রিলা তাঁর জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে সবসময় পাশে পান বন্ধু, প্রেমিক, অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীকে। সর্বক্ষণ ঐন্দ্রিলার পাশে পাশে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। তবে সেই সব চেষ্টা, বিগত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রার্থনা সব আজ ব্যর্থ।
Aindrila Sharma Passes Away, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মাত্র ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু হয়েছিল যুদ্ধ। একবার নয়, দু-দুবার মারণ রোগের ছোবল থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে মৃত্যুকে হারিয়েছে সে। এবারও যুদ্ধ থামল তবে এবার আর হাসিমুখে ফিরল না প্রাণোচ্ছ্বল মেয়েটি, যাঁর মুখে সবসময় লেগে থাকত হালকা হাসি, যাঁর অদম্য জেদের সামনে হার মেনেছিল মারণরোগও। অবশেষে যার ফিরে আসার কথা ছিল সে চলে গেল, থেকে গেল তার স্পর্শ। সব প্রার্থনা মিথ্যে করে মাত্র ২৪ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। ১ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই থেকেই হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ফিরে আসার অদম্য চেষ্টা করেছেন। তবে সেই সব চেষ্টা, বিগত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রার্থনা সব আজ ব্যর্থ।
১৯৯৮-এর ৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম ঐন্দ্রিলা শর্মার। তখন ঐন্দ্রিলা একাদশ শ্রেণিতে পড়েন। জানা যায়, ২০১৫-র ৫ ফেব্রুয়ারি জন্মদিনের দিনই তাঁর শরীরে বেড়ে ওঠা মারণরোগের কথা। ঐন্দ্রিলা জেনেছিলেন তাঁর অস্থি মজ্জায় মারণ রোগ বাসা বেঁধেছে। তারপরই লড়াই শুরু হয় ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি বহরমপুরেই থাকতেন। মেয়েকে দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান বাবা-মা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ঐন্দ্রিলার হাতে বেশি সময় নেই। এরপরে একের পর এক কেমো, ইনজেকশন শুরু হয়। শরীর যেন ক্রমশ কুঁকড়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তবে ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। ২০১৬ থেকে ২০২১, টানা পাঁচ বছর বেশ ভালোই কাটছিল ঐন্দ্রিলা শর্মার। ততদিনে ঐন্দ্রিলার অভিনয় জীবনও শুরু গিয়েছে, তাই বেশ ভালোই কাটছিল। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি হঠাৎই ডান কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয়। ভেবেছিলেন হয়তে ভুলভাবে শোওয়ার দোষে ব্যথা হচ্ছে, তারপর জানা যায়, ডান ফুসফুসে ১৯ সেন্টিমিটারের একটি টিউমার রয়েছে, ফের ক্যানসার। আবারও শুরু হয় কেমো, সেই যন্ত্রণা।
আরও পড়ুন-লড়াই শেষ, প্রয়াত 'ফাইটার' ঐন্দ্রিলা
প্রসঙ্গত বহরমপুরের উচ্চবিত্ত পরিবারেই জন্ম ঐন্দ্রিলা শর্মার, মা শিখা শর্মা নার্সিং হস্টেলের ইনচার্জ, আর বাবা উত্তম শর্মা মুর্শিদাবাদের পাঁচগ্রাম হাসপাতালের চিকিৎসক। ছোট থেকে নাচ শিখেছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা, নাচে তিনি যথেষ্ট পারদর্শী। আবৃত্তিও শিখেছেন ঐন্দ্রিলা। উচ্চমাধ্যমিকের পর কলকাতা একটি নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও ভর্তি হয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। তবে শারীরিক কারণেই পড়াশোনা শেষ করে উঠতে পারেননি ঐন্দ্রিলা। তবে ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করতে অভিনেত্রী হওয়ার লড়াই শুরু করেন বহরমপুরের ঐন্দ্রিলা। টেলিভিশনের মহালয়াতেও 'দেবী দশমহাবিদ্যা' অনুষ্ঠানে 'দেবী মাতঙ্গী' হিসাবে দেখা গিয়েছিল ঐন্দ্রিলা শর্মাকে। এই তো সেদিন, দুর্গাপুজোর প্রতিদিন সেজেগুজে নানান ছবি পোস্ট করতে দেখা গিয়েছিল ঐন্দ্রিলা শর্মাকে। নানান শাড়িতে সেজে অনুরাগীদের কখনও মহাষ্টমী, কখনও মহানবমীর শুভেচ্ছা জানান ঐন্দ্রিলা শর্মা।
সালটা ২০১৭, 'ঝুমুর' ধারাবাহিকের হাত ধরেই টেলিভিশনে কাজ করা শুরু করেন তিনি। সেই ধারাবাহিকে ঐন্দ্রিলার বিপরীতে ছিলেন অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী, সেখান থেকেই তাঁদের বন্ধুত্ব, পরে সেই বন্ধুত্ব প্রেমে বদলে যায়। ঝুমুর ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পর ঐন্দ্রিলা শর্মাকে দেখা যায় 'জিয়ন কাঠি' ধারাবাহিকে। এই বাংলা ধারাবাহিকের হাত ধরেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পান ঐন্দ্রিলা। সম্প্রতি ক্লিক-এর 'ভাগার' ওয়েব সিরিজে অভিনয় করছিলেন ঐন্দ্রিলা। এই সিরিজে ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দেখা যায় সব্যসাচীকেও। ঐন্দ্রিলা তাঁর জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে সবসময় পাশে পান বন্ধু, প্রেমিক, অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীকে। সর্বক্ষণ ঐন্দ্রিলার পাশে পাশে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। এমনকী সম্প্রতি যে কদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি, সারাক্ষণ হাসপাতালে তাঁর পাশে থেকেছেন সব্যসাচী।
গত ১ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই থেকেই হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ফিরে আসার অদম্য চেষ্টা করেছেন। তবে সেই সব চেষ্টা, বিগত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রার্থনা সব আজ ব্যর্থ।