Anirban Bhattacharya, সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার শ্রেয়া মিত্র, সাহানা রায় চৌধুরী ও অবন্তী ভট্টাচার্য। তাঁদের অভিযোগ, বিনা পারিশ্রমিকেই তাঁদের দিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করিয়ে নিয়েছেন অভিনেতা, ন্যূনতম সম্মানও পাননি তাঁরা। এমনকী তাঁদের আইনি লড়াইয়ের হুমকিও দিয়েছেন অনির্বানের বর্তমান ম্যানেজার। তবে শুধু অভিনেতা নন, তিনি যে প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, সেই সংস্থার বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এই তিন ডিজিটাল প্রফেশনালের। তাঁদের দাবি, ইতিমধ্যেই হ্যাক করা হয়েছে অনির্বাণের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট। এমনকী প্রাণসংশয়েরও ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। ঠিক কী ঘটেছে তা জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে জানালেন শ্রেয়া।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Apu Biswas: সম্প্রীতির বার্তা! কলকাতার দুই পুজোর মুখ বাংলাদেশের অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস


শ্রেয়া বলেন, “অনির্বাণদার আমি গুণমুগ্ধ ভক্ত। ২০১৭ সালে আমি তখন পিএসএস-এ চাকরি করি। তখন প্রফেশনাল হিসাবে আমি ওর ফ্যানপেজটা যে দেখতো তাঁকে জিগ্গেস করি, ‘এগুলো কী আপনার লেখা?’ তখন উনি আমায় বলেন এটা ওঁর ফ্যানপেজ, ওঁর কনসেন্টে, মতামতেই চলে। সেই সময় উনি আমায় বলেন যে, ‘তুমি তো প্রফেশনাল, তুমি যদি এটা কন্ট্রোল করো, আমি তোমার সঙ্গে ওঁর যোগাযোগ করিয়ে দেব’। তখন ও আমার সঙ্গে দেখা করে বলে যে, তুমি যদি চালাতে পারো তো চালাও। তখন অনির্বাণদা এক নামী প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তিতে ছিল কিন্তু সেই সময় ওই সংস্থা ওঁর ডিজিটাল পেজ নিয়ে ওতো মাথা ঘামায়নি। আমায় রিকোয়েস্ট করত, পোস্ট করে দাও, আমি করে দিতাম। অনেক কাজ করেছি একসঙ্গে। হয়তো বাড়ি গিয়ে লাঞ্চ করছি, ডিনার করছি, একে অপরকে বন্ধু বলছি কিন্তু অনির্বাণদা কোনওদিন আমাকে কোথাও স্বীকৃতি দেয়নি। তবে অনির্বানদা একদম জেন্টলম্যান, কোনওদিন কোনও অসভ্যতা করেনি, অন্য কোনও আক্ষেপ নেই এই বিষয়ে। সেসময় আমি ফটোশ্যুট করাচ্ছি, নাটকের প্রোমোশন করাচ্ছে, ভিডিয়ো এডিট করিয়ে নিচ্ছে, এরজন্য কোনও পারিশ্রমিক দেয়নি, আমিও চাইনি। ২০১৮ থেকে পুজো উদ্বোধন, এছাড়া এরকম কোনও কাজ হলে ও বলত, ‘তুমি ৮০ হাজারের কাজ তুলে দিয়েছো, ১০ হাজার বা ১৫ হাজার রেখে দাও’। আমার এই ব্যাপারে কোনও অভিযোগ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে যা কাজ হত আমায় দিত। কিন্তু কোনও মেইল করবে না, আমাকে ৫ শতাংশই দাও, কিন্তু মেইল তো করো। আমি এখনও টাকা পয়সা চাইছি না কিন্তু মানুষ হিসাবে আমাকে সম্মানটা তো দিতে হবে। সেটা তো বেসিক অধিকার। তুমি সেটাও দিচ্ছ না। সোহিনীদি আমায় সবসময় এই সম্মানটা দিয়েছে”।


আরও পড়ুন: TRP: শুরু হয়েছে একগুচ্ছ নতুন ধারাবাহিক, টিআরপি তালিকায় সেরা কে?


“এরপর শুরু করল ওই নামী প্রযোজনা সংস্থার অত্যাচার। আমার কম্পিউটার, ইলেকট্রিসিটি, শিক্ষাদীক্ষা, ট্রেনিং দিয়ে কাজ করে চলেছি। কোনওদিন ওই সংস্থা ডেকে মিটিং করেনি, প্রিমিয়ারে ডাকেনি, অনির্বাণদা কোথাও পরিচয় অবধি দেয়নি যে আমি ওঁর ম্যানেজার। এরপর ২০২০ সাল থেকে ওর নতুন ট্যালেন্ট ম্যানেজার নিযুক্ত হয়। পোস্ট প্যানডেমিক একটা কাজ হল, ‘ও বলল ভালো কাজ হয়েছে, প্রায় আড়াই মাস পর ক্যামেরার সামনে এলাম’। এরপর বলল, ‘একটা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুলে দাও’। তখন ফেসবুকে ৫ লক্ষ ছিল, এখন ১০ লক্ষ। আমার সঙ্গে কোনও চুক্তি নেই, কোনও অ্যাডমিন রাইটসও চায়নি। সোহিনীদির পেজ, আরও অনেক সিনেমার পেজ দেখি, সবার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাঁরা কাল থেকে বারণ করলে আমি সব রাইটস দিয়ে চলে যাব। কিন্তু এখানে সেরকম কোনও বিষয় নেই। আমায় একদিন বলল, ‘তুমি পেজটাকে দারুণ জায়গায় নিয়ে গেছো, ইনভেস্টররাও ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছে। তোমার তো মিনিমাম প্রাপ্য থাকে’। একের পর এক পেজে প্রমোশন হলো কিন্তু তার কোনও মেইল নেই, কোনও বক্তব্য নেই। দিনের পর দিন কোনও সম্মান নেই। আমাকে শুধু চাপ দিত যে এটা করতেই হবে। আমার বাবা অসুস্থ তখন ওই প্রযোজনা সংস্থা থেকে চারজন ফোর্স করছে পোস্ট করা জন্য। ওদের কথা না মানা ছাড়া তখন আমার আর কোনও উপায় ছিল।”


আরও পড়ুন: Jacqueline Fernandez: ‘উপহার নিয়ে নোরা ফতেহি সাক্ষী আর আমি দোষী?’, ED-কে প্রশ্ন জ্যাকলিনের


“এরপর মূল ঝামেলা শুরু হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে একটি বুটিকের শ্যুট থেকে। সেটা পেজে পোস্ট করার পরই ওই প্রযোজনা সংস্থা থেকে ফোন আসে কেন আমি এটা পোস্ট করেছি? তখন আমি জানাই যে এটা শুধু ডিজিটাল ক্যাম্পেন। তখন আমায় ওরা জানায় যে, আমি এটা করতে পারব না। সেইসময় অনির্বাণদা আমায় বলে, ‘আমি কথা বলছি, ওরা আমায় কী চুক্তি সাইন করেছে আমিই জানি না’। যদিও আমি এই কথাগুলো বিশ্বাস করি না, কারণ এটা হতে পারে না। এরপর ২০২১ সালে অনির্বাণদা আমায় বোঝায়, একসঙ্গে মিলে মিশে কাজ করতে বলে। কিন্তু এরপর আস্তে আস্তে বছর শেষে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমি জানাই যে সম্মান তো দেবে না, আমায় একটা পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। তখন কোনও কথা না বলেই অনির্বাণদা আমায় কিছু টাকা ট্রান্সফার করে দেয়। আমি বলি এইভাবে দিও না, সঠিক প্রক্রিয়ায় পাঠালে ভালো হয়। এরপরই আমার সঙ্গে কথা বলে বন্ধ করে দেয় অনির্বাণদা। ওর বর্তমান ম্যানেজার আর প্রযোজনা সংস্থা এমন ব্যবহার করছিল যে মনে হয় আমি ওদের হয়ে কাজ করি। যাঁর পেজ সে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। আমি অনেক যোগাযোগ করার চেষ্টা করি, এরপর অনির্বাণদা আমায় ব্লক করে দেয়। ১ অগস্ট আমায় অনির্বাণদার ট্যালেন্ট ম্যানেজার হুমকি দেয়, যদি আমি পোস্ট না করি তাহলে আমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে। এটা শুনে আমি সত্যি প্রচন্ড ভয় পেয়ে যাই, কারণ আমরা তিনজন মহিলা এটা চালাই, আমাদের কোনও বড় যোগাযোগ নেই। সবাই আমায় বলল পেজ ডিলিট করে দিতে, কিন্তু আমি পারিনি কারণ এটা আমার সন্তানের মতো। আমি মেইল করি অনির্বাণদাকে যে, ‘তুমি যে অসম্মানটা আমায় দিয়েছো এর থেকে খারাপ কিছু হতে পারে না। আমি পেজ ডিলিট করিনি কিন্তু স্থগিত রাখলাম’ কিন্তু কোনও রিপ্লাই পাইনি। এর মাঝেই দেখি যে, ইনস্টাগ্রাম হ্যাক হয়ে গেল, আজ সকালে দেখলাম ওই প্রযোজনা সংস্থার নতুন ছবির পোস্টও হয়েছে সেখান থেকে। আমরা এখনও চাইছি সামনাসামনি আলোচনা করে বা ফোনে ব্যাপারটা সেটল করতে, বহুবার তা জানিয়েছি। ” এই প্রসঙ্গে বারংবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য।  


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)