Anurag Basu: চিকিৎসকরা বললেন আর দু`সপ্তাহ বাঁচব, কেমো চলাকালীনই গ্যাংস্টারের শুট করেন অনুরাগ
সেই কঠিন লড়াইটা জিতে ফিরেছিলেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেবিষয়েই মুখ খুললেন পরিচালক অনুরাগ বসু।
নিজস্ব প্রতিবেদন : সালটা ২০০৪। আচমকাই পরিচালক অনুরাগ বসু জানতে পারেন তিনি ব্লাড ক্যানসার আক্রান্ত। চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন তাঁর হাতে মাত্র দু'সপ্তাহ সময়। এদিকে তাঁর স্ত্রী তখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পুরো বিষয়টি স্ত্রীর কাছে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন অনুরাগ। যদিও সেকথা চাপা থাকেনি। এখবরে পরিচালকের পরিবার সহ ইন্ডাস্ট্রির সকলেই ভয় পেয়ে যান। তবে সেই কঠিন লড়াইটা জিতে ফিরেছিলেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেবিষয়েই মুখ খুললেন পরিচালক অনুরাগ বসু।
অনুরাগ বসুর কথায়, ''ডাক্তাররা বলেছিলেন, মাত্র দু'সপ্তাহ বাঁচব, তানি (স্ত্রী) তখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওকে কীভাবে কথাটা বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা বলেছিলেন। শরীর আর দিচ্ছিল না, তবে তার পরেও আমি ছবির সেটে ফিরি, কাজ চালিয়ে যাই। সন্ধেবেলা প্রযোজক মুকেশ ভাট বলেন, ছবির শ্যুটিং বন্ধ করতে। আমি ভাবতেও পারিনি উনি এটা বলতে পারেন। পরে হাসপাতালে বাবা-মায়ের মুখ দেখে বুঝতে পারি, কিছু একটা ভুল হচ্ছে।''
আরও পড়ুন-অল্পবয়সী ছেলের সঙ্গে প্রেম, 'ইন্দ্রাণী'-র বেশে টিভিতে ফিরছেন অঙ্কিতা
পরিচালক জানান, অভিনেতা সুনীল দত্তের উদ্যোগে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসাতেই একটু একটু করে সুস্থ হতে থাকেন তিনি। অনুরাগ বসু জানিয়েছেন, তাঁকে ওই অবস্থায় হাসপাতালে দেখে মহেশ ভাটের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। তাঁর কথায়, ''ভাট স্যার যখন আমার কপালে হাত রাখলেন, তখন তাঁর হাত কাঁপছে।'' অনুপম খের, ইমরান হাশমী, সকলেই তাঁকে হাসপাতালে দেখতে আসে বলে জানিয়েছেন তিনি। অনুরাগের কথায়, ''আমার মুখ ফুলে গিয়েছিল, নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। তার উপর আমার চারপাশের লোকজন উদ্বিগ্ন ছিলেন, যে চিকিৎসা ঠিক মতো কাজ করছে না।'' তবে ধীরে ধীরে চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সুস্থ হয়ে ওঠেন পরিচালক। সেসময় আত্মীয়, বন্ধু, ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী, সকলেই তাঁর পাশে ছিলেন। তাঁর জন্য রক্ত জোগাড় করা থেকে আর্থিক সহায়তা, সবই পেয়েছিলেন তিনি।
চিকিৎসার মাঝে কেমোথেরাপির খরচ জোগাতে অনুরাগ বসু নিজেই ছবির সেটে ফিরে আসেন। 'গ্যাংস্টার' ছবিটি তিনি ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীনই বানিয়েছিলেন। পরিচালকের কথায়, এই সাহসটা আমি আমার বাবা, এবং আমার পরিবারের কাছ থেকে পেয়েছি। জীবনের সবথেকে কঠিন লড়াই জিতে ফিরে এসে পরবর্তীকালে 'লাইফ ইন অ্য়া মেট্রো', 'কাইটস', 'বরফি', 'জগ্গা জাসুস'-এর মতো ছবি বানিয়েছেন। এমনকি ওটিটি-র দুনিয়ায় পা রেখে 'লুডো'র মতো ওয়েব সিরিজও বানিয়ে ফেলেছেন অনুরাগ।