Bangla Bonam Bangali: সাথে নয়, সঙ্গে লিখুন, শ্রীজাতর সহজপাঠ | দেখুন `বাংলা বনাম বাঙালি`...
`বাংলা বনাম বাঙালি` নিয়ে হাজির শ্রীজাত। কবির প্রথম দিনের আড্ডায় হাজির ছিলেন অপর্ণা সেন ও কল্যাণ রায়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো : বাংলা ভাষার সঙ্গে বাঙালির কি ইদানীং কোনও চোরা লড়াই চলছে? নাকি বাঙালি না বুঝেই বাংলা ভাষার সঙ্গে একটা দ্বৈরথে নেমে পড়েছে? নইলে এত সাধারণ সহজ ভুলভ্রান্তি বারে বারে হচ্ছে কেন? এরকমই কিছু প্রশ্ন জমেছে কবি শ্রীজাত-র মনে। সেই প্রশ্নের উত্তরে খুঁজতেই নতুন শো 'বাংলা বনাম বাঙালি' নিয়ে হাজির শ্রীজাত। কবির প্রথম দিনের আড্ডায় হাজির ছিলেন বিশিষ্ট পরিচালক অপর্ণা সেন ও লেখক, অনুবাদক, অধ্যাপক কল্যাণ রায়।
অপর্ণা সেন ও কল্যাণ রায়ের সঙ্গে 'বাংলা বনাম বাঙালি'র প্রথম দিনের আড্ডায় উঠে এল একগুচ্ছ শব্দ। যে শব্দগুলি বাংলা না হয়েও কীভাবে যেন বাংলার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। আর এ প্রসঙ্গেই অপর্ণা সেন বলেন, ''আমি তো একটা লিস্ট করে নিয়ে এসেছি।'' অপর্ণা বলেন, চারপাশে 'তাদেরকে', 'ওদেরকে', 'আমাদেরকে' এই শব্দগুলো তো চলছেই (বাংলা ভাষায় কে-এর ব্যবহার হয় না)। এছাড়া ওঁর বলতে হয়ত অনেকেরই খুব অসুবিধা হয়, তাই হয়ত ওনার, ওনাকে এই শব্দগুলি সবাই ব্যবহার করেন। অপর্ণা সেনের কথায়, আজকাল অনেকেই বলেন, 'আমার সাথে যাবি?' বা 'আমরা একসাথে যাই চলো', 'সঙ্গে'-র ব্যবহার প্রায় উঠেই গেছে। প্রসঙ্গক্রমে কল্যাণ রায় জানান, সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের একটা উক্তিতে স্পষ্ট রয়েছে, কবিতাতে সাথে এবং কথ্য ভাষায় সঙ্গে ব্যবহৃত হয়।
আলোচনা প্রসঙ্গেই নিজের মতামত তুলে ধরেন অপর্ণা। তাঁর কথায়, ভাষা একটা বহতী নদীর মতো। ভাষা ব্যবহারের সঙ্গে সেটা বদলাতে বদলাতেই য়ায়। সেটাই স্বাভাবিক। অনেককিছু সে সামিল করে, আবার অনেক কিছু সে বর্জন করে। কিছুটা খারাপ লাগা থেকে শ্রীজাত জানান, আজকাল খবরের কাগজে, বিজ্ঞাপনে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে যখন ভাষার প্রতি অবজ্ঞা চোখে পড়ে, সেগুলি তাঁকে ভীষণই পীড়া দেয়। আলোচনা কিছুটা এগোতে অপর্ণা সেন আরও কিছু শব্দ তুলে ধরেন, যেগুলি আসলে ভুল শব্দ। তিনি বলেন, আজকাল অনেকে 'সৌজন্য়', 'প্রয়োজন' না বলে 'সৌজন্য়তা', 'প্রয়োজনীয়তা' ব্য়বহার করেন। ঠিক সেসময়ই কিছুটা রসিকতা করে শ্রীজত বলে বসেন, 'বাঙালির অবশ্য তা দেওয়ার স্বভাব। তবে সৌজন্য, সাফল্যের পিছনে তা না দেওয়াই ভালো।'
'বাংলা বনাম বাঙালি'-র আলোচনায় উঠে এল, আরও বেশকিছু শব্দ। যেগুলি হিন্দি থেকে সরাসরি বাংলা করে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই শব্দগুলি আদৌ নেই। এর মধ্যে উঠে এসেছে 'হঠাৎ করে', 'কেন কি' শব্দগুলি। অপর্ণা সেন জানান, দিল্লি বড় হয়ে ওঠা তাঁর এক বোনঝিও এধরনের বেশকিছু বাক্য বলেন, যা হিন্দি থেকে সরাসরি বাংলা করার মতো। হেসে ফেলে কল্যাণ রায় জানান, তাঁর এক বন্ধু ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বলটা ঘুরে গেছে না বলে মুড়ে গেছে বলে বসেছিলেন। এদিনের আলোচনার শেষে 'কি' আর 'কী'-র পার্থক্য শেখান অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তথা কবি শ্রীজাত।