`নেপোটিজম` নাকি `কাউন্টার নেপোটিজম` অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে কোনটা সত্যি?
তবে কি এই ৭ বছর অভিনয় থেকে দূরে থাকার জন্য এখন কোনও আক্ষেপ কুরে কুরে খায় অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়কে?
নিজস্ব প্রতিবেদন : সালটা ২০১০, মুক্তি পেয়েছিল, অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের 'কামব্যাক ফিল্ম' 'একটি তারার খোঁজে'। ২৫ জুন ছবিটির ১০ বছর পূর্তিতে টুইট করেছেন অর্পিতা । ছবিটি যে বক্স অফিসে সুপার হিট, তেমনটা নয়। তবু 'একটি তারার খোঁজে' ছবিটিকে নিজের টুইটে 'হৃদয়ের কাছের' বলে উল্লেখ করেছেন অভিনেত্রী। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে বিয়ে করার পর অর্পিতা যখন অভিনয় জগৎ থেকে সরে যান, তখন তিনি খ্যাতির মধ্যগগনে। হাতে অন্তত ৫-৬ ছবি রয়েছে । এই অবস্থাতেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে কি এই ৭ বছর অভিনয় থেকে দূরে থাকার জন্য এখন কোনও আক্ষেপ কুরে কুরে খায় অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়কে? এই টুইট কি তারই বহিঃপ্রকাশ ?
না, একথা অবশ্য অর্পিতা বলেননি। তবে প্রশ্নটা থাকছেই...
অর্পিতা টুইটে লিখেছেন, ''বিয়ের পর দীর্ঘ ৭ বছরের বিরতি। সেসময় তাঁর হাতে প্রায় ৬টি ছবি ছিল।'' আরও একটি টুইটে অর্পিতা লিখেছেন, ''নিজের দায়িত্ব পালনের পর, সন্তানকে বড় করে তোলার পর আমি আবারও উৎসাহ নিয়ে ফিরে আসি। সেই অর্থে 'একটি তারার খোঁজে' আমার কাছে কামব্যাক ফিল্ম, আমার হৃদয়ের খুব কাছের একটা ছবি।''
পারিবারিক কারণে দীর্ঘ বিরতির পর কাজে ফেরার সময় অর্পিতা কি তাঁর স্বামী প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে পাশে পেয়েছিলেন? স্বজনপোষণ বিতর্কে যখন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উঠেছে, তখন এই প্রশ্নটা ওঠাও স্বাভাবিক। প্রসেনজিতের থেকে তাঁর স্ত্রী হিসাবে সবথেকে বেশি সুবিধা পাওয়ার কথা তো অর্পিতারই। সেটা কি আদৌ তিনি পেয়েছিলেন? 'স্বজনপোষণ' প্রসঙ্গে এই প্রশ্নটা স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে বৈকি।
যদিও তথ্য বলছে, বড়পর্দায় কামব্যক করার পর অর্পিতাকে একাধিক ছবিতে দেখা গেলেও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রায় কোনও ছবিতেই দেখা যায়নি। ২০১০-এ পর্দায় ফেরার পর ২০১৪ সালে রাজা চন্দের একটি মাত্র ছবিতে (ফোর্স) তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। এখন প্রশ্ন, অর্পিতার ক্ষেত্রে তবে কি ব্যক্তিগত সমীকরণ কোনওভাবে কাজে লাগেনি? যেখানে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় একের পর এক ছবিতে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন, সেখানে তাঁর বিপরীতে কেন নায়িকার ভূমিকায় দেখা যায়নি অর্পিতাকে?
অর্পিতা অবশ্য ঋতুপর্ণ ঘোষের 'সত্যান্বেষী', সৃজিত মুখোপাধ্য়ায়ের 'চতুস্কোণ', অঞ্জন দত্তের 'দত্ত ভার্সাস দত্ত' সহ বেশকিছু ভালো ছবিতে কাজ করেছেন। আবার সাম্প্রতিক কালে, 'পূর্ব পশ্চিম দক্ষিণ (উত্তর আসবেই)' 'বরুণবাবুর বন্ধু', 'অব্যক্ত',র মতো অন্যধারার ছবিতে বেশ প্রশংসিত হয়েছে অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই অভিনয় জগতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর নাম জোড়েনি। বিয়ের আগে একসঙ্গে অসংখ্য ছবি করলেও বিয়ের পর প্রসেনজিৎ-অর্পিতা জুটিকে কেন আর পাওয়া গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। শুধু তাই নয়, প্রসেনজিতের কাছের পরিচালকদের সঙ্গেও সেভাবে কাজ করতে দেখা যায়নি অর্পিতাকে। বরং বেশ কিছু নতুন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন ছবিতে অর্পিতার অভিনয় খুবই প্রশংসিত হয়েছে। বিদেশের বেশকিছু ফেস্টিভালে পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়েছে তাঁর নাম । আশ্চর্যজনকভাবে এখানে কিন্তু অজ্ঞাত কোনও কারণে তিনি যেন কাব্যে উপেক্ষিতা। ফলে অর্পিতার ক্ষেত্রে নেপোটিজম না কাউন্টার নেপোটিজম, কোনটা ঘটেছে সেটা বলা বেশ মুশকিল।
অর্পিতা অবশ্য এবিষয়ে মুখ খোলেননি। এমনকি স্বজনপোষণ বিতর্কে Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কমের তরফে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ''আমার সঙ্গে ওনার সম্পর্কটা তো অভিনেতা-অভিনেত্রী হিসাবে নয়, এটা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। এখানে ছেলে পরিবার সবকিছুই রয়েছে। আমার এবিষয়ে কথা বলা ঠিক হবে না, আমি বলতেও চাই না।''