Aryan Khan Drug Case: ২৬ দিন পর জামিন শাহরুখ পুত্র আরিয়ানের
আরিয়ানের জামিন মঞ্জুর করল বম্বে হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার ও বুধবার পরপর দুদিন আরিয়ান খানের (Aryan Khan) জামিনের শুনানি স্থগিত রাখেন বিচারপতি নিতিন সাম্বর। বুধবারই কোর্টের কাছে ১ ঘণ্টা সময় চেয়েছিলেন এনসিবির আইনজীবী অনিল সিং। বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০ মিনিটে শুরু হয় আরিয়ানের শুনানি। বুধবার আরিয়ান খান(Aryan Khan), আরবাজ মার্চেন্ট(Arbaaz Marchant) ও মুনমুন ধামেচার (Moonmoon Dhamecha) আইনজীবীর পক্ষের কথা শোনার পরই তিন অভিযুক্তের জামিনের শুনানি ফের স্থগিত রাখেন বিচারক। বৃহস্পতিবার ফের শুরু হয় শুনানি। দু পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে অবশেষে জামিন পেলেন শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান। তবে শুধু আরিয়ানই নন, এদিন জামিন পান মুনমুন ও আরবাজও।
বৃহস্পতিবার এনসিবি তাঁদের বক্তব্য পেশ করে বম্বে হাইকোর্টে। অনিল সিং আদালতে জানান, আরিয়ানের কাছে থেকে মাদক পাওয়া না গেলেও আরবাজের কাছে থেকে পাওয়া গেছে এবং আরিয়ানই তাঁদের বলেছে যে মাদক পার্টিতে আরবাজের কাছ থেকে যে মাদক পাওয়া গেছে, পার্টিতে সেই মাদক সেবনের পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। এমনকি আরিয়ানের চ্যাট থেকে কমারশিয়াল কোয়ান্টিটি মাদক কেনার সূত্র পাওয়া যায় বলে দাবি করেন তিনি। এনসিবির দাবি আরিয়ানের বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে।
আরও পড়ুন: Srabanti Chatterjee: হাতির সঙ্গে ছবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় বডি শেমিংয়ের শিকার শ্রাবন্তী
অন্যদিকে মুকুল রোহাতগি এদিন আদালতে বলেন, আরিয়ানের সঙ্গে আটক হওয়া যে পাঁচজনের থেকে মাদক পাওয়া গেছে তার দায় আরিয়ানের উপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানতেনই না, তাঁর সঙ্গে যাঁরা ঐ পার্টিতে আছেন তাঁদের কাছে মাদক আছে। পাশাপাশি তিনি বলেন অচিতের থেকে মাত্র ২.৪ গ্রাম মাদক পাওয়া গেছে। একজন মাদকপাচারকারীর কাছে মাত্র ২.৪ গ্রাম মাদক থাকা কি যুক্তিযুক্ত, প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মঙ্গলবার আরিয়ানের জামিনের বিরোধিতা করে এনসিবির আইনজীবী বম্বে হাইকোর্টে জানিয়েছিলেন যে, আরিয়ান খানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। সে শুধুমাত্র মাদকদ্রব্য সেবনই করে না, তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য কেনা বেচারও অভিযোগ এনেছে এনসিবি। আরিয়ান জামিন পেলে সে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে। রবিবারই মাদক মামলার সাক্ষী তাঁর বয়ান পরিবর্তন করেছে। এনসিবির তরফ থেকে দাবি করা হয় যে আরিয়ান তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। তথ্য লোপাটেরও আশংকা প্রকাশ করেছে এনসিবি। এমনকি শাহরুখ খানের ম্যানেজার পূজা দাদলানির বিরুদ্ধেও সাক্ষীকে প্রভাবিত করার অভিযোগ এনেছে এনসিবি।
মঙ্গলবার আদালতে আরিয়ানের আইনজীবী প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি আরিয়ানের সপক্ষে বলেন, ' ২ অক্টোবর প্রতীকের অনুরোধে ঐ পার্টিতে যান আরিয়ান ও আরবাজ। পার্টি শুরু করার আগেই আটক করা হয় তাঁদের। সেদিন আরিয়ানের কাছ থেকে কোনও রকমের মাদক পায়নি এনসিবি। তাই আরিয়ানকে গ্রেফতার করার কোনও কারণই ছিল না এনসিবির কাছে। তাসত্ত্বেও এরপর ৩ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় আরিয়ানকে। রেকর্ড করা হয় ওঁর স্টেটমেন্ট। তারপর আরিয়ান খানের কোনওরকম মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়নি। মেডিক্যাল টেস্ট ছাড়া কীভাবে মাদক মামলা ফাইল করা সম্ভব!আরবাজের জুতো থেকে ছয় গ্রাম মাদক পাওয়া গেছে তার জন্য আরিয়ানকে দায়ী করা সঠিক নয়। কারণ আরবাজ আরিয়ানের চাকর নয় যে সে কী করবে তা আরিয়ান নিয়নত্রণ করবে। পাশাপাশি এফআইআর শিটে মোবাইল বাজেয়াপ্ত করার কোনও উল্লেখই নেই অথচ আটক করার পরই মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আরিয়ানের। মাদক নয়, শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে আরিয়ানকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি।'
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে কোথাও মাদকপার্টির উল্লেখ নেই, এমনকি মোবাইল চ্যাটের সঙ্গে মাদক পার্টির কোনও সম্পর্কও নেই। যে যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা বলা হচ্ছে তা ২০১৮ এবং ২০১৯-এর। এনসিবিরি দাবি অনুযায়ী অচিত ও আরবাজের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও মাদক পার্টিতে অচিত উপস্থিতই ছিল না। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাড়ি থেকে। অচিত ও আরিয়ান চ্যাটে শুধুমাত্র অনলাইন গেম নিয়ে আলোচনা করেছিল। এর থেকে বেশি কোনও বিষয়ে কথা বলেননি তাঁরা।'
আরও পড়ুন: Ranu Mondal Biopic: লুক টেস্টেই নজর কাড়লেন পর্দার রানু মন্ডল ঈশিকা
বুধবার রিমান্ডে হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট নিয়ে সঠিক তথ্য না থাকার অভিযোগ আনেন আরিয়ানের আইনজীবী মুকুল রোহাতগি। পাশাপাশি জানান অ্যারেস্ট মেমোতে আরিয়ানকে গ্রেফতার করার সত্য ও সঠিক কারণ উল্লেখ করা নেই। রিমান্ডে সেকশন ২৮ ও ২৯ এর উল্লেখ নেই বলেও প্রশ্ন তোলেন আরিয়ানের আইনজীবী। তাঁদের সেই দাবি নস্যাৎ করে এদিন অনিল সিং বলেন, প্রথম রিমান্ডে সেকশন ২৮-এর উল্লেখ ছিল।
গত ২ অক্টোবর মাদকপার্টি থেকে আটক করা হয়েছিল আরিয়ানকে। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর পরদিন এনসিবি গ্রেফতার করে তাঁকে। দুদফায় জামিন খারিজের পর এনসিবি হেফাজত থেকে গত ৮ অক্টোবর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। তারপর থেকেই আর্থার রোড জেলে বন্দি আরিয়ান খান। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের পর মুম্বই সেশন কোর্টও খারিজ করে দেয় আরিয়ান খানের জামিনের আর্জি। এরপরই বম্বে হাইকোর্টে আরিয়ানের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী অমিত দেশাই। বম্বে হাইকোর্টে সতীশ মানশিন্ডে বা অমিত দেশাই নয়, আরিয়ানের হয়ে সাওয়াল জবাব করলেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি। অন্যদিকে এনসিবির হয়ে সওয়াল জবাব করলেন এএসজি অনিল সিং। বিচারপতি নিতিন সাম্বরের সিঙ্গেল বেঞ্চের কাছে দুই পক্ষই নিজেদের সমর্থনে বক্তব্য পেশ করেছেন ।