`বালা`, `উড়জা চমন` নাকি `টেকো` কার পাশে থাকবে বাংলার দর্শকরা? প্রশ্ন ছুঁড়লেন অভিমন্যু
রণিতা গোস্বামী
রণিতা গোস্বামী
একই সঙ্গে বাংলা ও হিন্দি সিনেমার মুক্তি পাওয়া ও হল পাওয়া নিয়ে লড়াইটা তো বরাবরই ছিলই। এই লড়াইয়ে যেন অনেকটাই অভ্যস্ত্য হয়ে গিয়েছিল টলিউড। তবে, একই সঙ্গে রিলিজ হওয়া বাংলা ও হিন্দি সিনেমার কনসেপ্ট যদি এক হয়, তাহলে? বাঙালি কাকে বেছে নেবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বাংলা সিনেমা 'টেকো'র পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। রবিবার, Zee ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তাঁর ছবি 'টেকো' নিয়ে অনেক কথাই জানালেন পরিচালক।
প্রথমে সমস্যা ছিল হিন্দি ছবি 'বালা' ও 'উড়জা চমন'-এর মধ্যে। একই কনসেপ্ট নিয়ে এই দুই হিন্দি ছবি লড়াই আদালত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। তারই মাঝে প্রকাশ্যে এসেছে অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের ছবি 'টেকো'র পোস্টার। তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে 'বালা' ও 'উড়জা চমন'-এর কনসেপ্টের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বাংলা ছবি 'টেকো'র কনসেপ্ট। তার উপর 'বালা' ও 'উড়জা চমন'-এর সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে নভেম্বরেই মুক্তি পাচ্ছে 'টেকো'। খুব স্বাভাবিকভাবেই সমালোচকরা অনুকরণের প্রশ্ন তুলেছেন। আর এই বিষয় নিয়েই Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের তরফে 'টেকো'র পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
অভিমন্যু মুখোপাধ্যায় জানান, ''প্রায় দেড় বছর আগেই শ্যুট হয়ে গিয়েছিল টেকোর। আর এনিয়ে কোনও সন্দেহ হওয়ার জায়গা নেই। কারণ, যখন শ্যুট করছিলাম সেসময় টুইটও করা হয়েছিল। অন্য পরিচালকরাও রিটুইট করেছিলেন কনসেপ্ট নিয়ে। তরপর যখন 'বালা'র কথা ঘোষণা হল তখনও অনেকেই রিটুইট করেছিল যে একই কনসেপ্ট নিয়ে হিন্দিতেও একটি ছবি আসছে। তবে দেখো বালা ও টেকোর ট্রেলার দেখলেই বুঝতে পারবে কনসেপ্ট এক হলেও গল্পটা সম্পূ্র্ণ আলাদা। একটা ভাবনার মিল রয়ে গেছে। আজকে বাগবান ও বয়স্কদের লাভস্টোরি আবার বেলাশেষেও বয়স্কদের লাভস্টোরি। তার মানে তো বাগবান ও বেলাশেষের গল্প তো আর এক নয়। শুধু ভাবনাটা একটা। একই কনসেপ্ট ওদের স্টোরি রাইটারের মাথায় এসেছে, আবার আমার মাথায় এসেছে। তবে সেই কনসেপ্ট নিয়ে কে কবে কাজ করছে সেটা তো আর বোঝা যায় না। তবে আমরা শ্যুটিং অনেক আগেই করেছি। তবে ওই দুটো হিন্দি ছবি যতগুলো শহরে মুক্তি পাবে, সেটা তো বাংলা ছবি টেকোর ক্ষেত্রে হবে না? তবে শুধু এটাই দেখার বাঙালিরা কার পাশে থাকেন, বাংলা নাকি হিন্দি?''
তবে শ্যুটিং আগে হয়ে যাওয়ার পরও কেন মুক্তি পেল না 'টেকো'? এই প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায় বলেন, '' আসলে আমাদের কিছু হল নিয়ে সমস্যা ছিল। আর এই ছবিটা যাঁরা প্রযোজক সুরিন্দর ফিল্মস ওরা আগের বছর অনেক ছবিই বানিয়েছিল। প্রত্যেকটা হাউসই তো নিজেদের মত করে পরপর ছবি মুক্তির দিন ঠিক করে। সেটা যদি দেখো প্রতি মাসেই ওদের একটা ছবি মুক্তি পায়। সেই পাইপ লাইন মেনেই পরপর ছবি মুক্তি পায়। আর সেটা মেনে দুমাস আগেই 'টেকো' মুক্তির কথা ছিল। তবে আরও কিছু সমস্যার জন্য এটার মুক্তি আরও দুমাস পিছিয়ে যায়। আর ঘটনাচক্রে বালা উজড়া চমনের সঙ্গেই একই মাসে টেকোর মুক্তির দিন নির্ধারিত হয়েছে। ''
তবে হিন্দির সঙ্গে একই সময়ে টেকো মুক্তি পেতে চলায় যে একটা বাড়তি চাপ রয়েছে, তা এক কথায় স্বীকার করে নিলেন অভিমন্যু। তিনি বললেন, "দুটো হিন্দি সিনেমার মধ্যেই যদি এত লড়াই হয়, আর তার মাঝে একটা বাংলা ছবি ঢুকে পড়েছে, তাই সমস্যা তো হবেই। তবে সবটাই নির্ভর করছে বাংলার দর্শকরা কার পাশে থাকে?"
এমন ব্যাতিক্রমী ভাবনা তোমার মাথায় কোথা থেকে এল? অভিমন্যু জানালেন, ''টাকের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা চুল গজানোর চেষ্টায় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন থেকে প্রতারিত হন। এই সিনেমার গল্পটায় মূলত এই দিকটাই তুলে ধরা হবে।'' তবে সব শেষে তিনি এও জানান ''যে মাথায় টাক পড়াটা কোনও ছোটখাটো সমস্যা নয়। এই টাকের সমস্যার ফলে আমার নিজের বন্ধুরই বিয়ে ভেঙে যেতে পর্যন্ত দেখেছি। সেই ভাবনা থেকেই এই সিনেমাটা বানানোর অনুপ্রেরণা পেয়েছি।"