নিজস্ব প্রতিবেদন: সঙ্গীত জগতে আবার নক্ষত্রপতন। প্রয়াত প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি (Bappi Lahiri)। বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার সকালে ৬৯ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার। গত বছর তিনি কোভিড আক্রান্ত হন। যদিও সেই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। আগামিদিনে বেশ কিছু প্রজেক্ট হাতে থাকলেও শেষ করা হলনা কোনওটাই।   


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হাসপাতালের ডিরেক্টর ডাঃ দীপক নামজোশি (Dr Deepak Namjoshi) জানিয়েছেন, বাপ্পি লাহিড়ি গত এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সোমবার তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবার তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তাঁর পরিবারের তরফে ডাক্তারকে তাদের বাড়িতে দেখার জন্য ডাকা হয়। এরপরেই তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। একাধিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা ছিল তাঁর। মধ্যরাতের কিছু আগে ওএসএ (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া) এর কারণে তিনি মারা যান।” 


বাপ্পি লাহিড়ির মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পরেন সঙ্গীত শিল্পী ঊষা উত্থুপ। তিনি জানিয়েছেন যে তার জীবনের অন্যতম জনপ্রিয় গানগুলি বাপ্পি লাহিড়ির সুরে। কোভিডের আগেই শেষবার কথা হয় তার সঙ্গে। ঊষা উত্থুপ জানিয়েছেন যে ভারতীয় সঙ্গীতের জগতে ডিস্কো কিং ছিলেন তিনি। তার প্রয়াণের কথা মেনে নিতেই খুব কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 


ডিস্কোর পাশাপাশি বিভিন্ন অসাধারণ গানে সুর দিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি। এর মধ্যে রয়েছে "শরাবি", "চলতে চলতে মেরে ইয়ে গীত ইয়াদ রাখ না, কভি অলবিদা না কেহনা"। এছাড়াও বাংলা সিনেমা জগতের বিভিন্ন গান যেগুলি ইতিহাস তৈরি করেছে যেমন "অমর সঙ্গী", "চিরদিনই তুমি যে আমার", "গুরুদক্ষিনা" এই সব গানের সুরেও ছিল বাপ্পি লাহিড়ির ছোঁয়া। সাতের দশকের শেষ থেকে আটের দশকের পুরোটা এবং তার পরেও বলিউড এবং টলিউড দুই জায়গাতেই সমানতালে চলেছে বাপ্পি লাহিড়ির যুগ।     


 



বাপ্পি লাহিড়ির জন্ম ১৯৫২ সালে কলকাতায়। বাবা মা দুজনেই ছিলেন সঙ্গীত জগতের মানুষ। কোভিড পরবর্তী সময়ে তাঁর গলা আর আগের মত না থাকায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। মাত্র ৬৯ বছর বয়েসে বাপ্পি লাহিড়ির মত একজন মানুষের মৃত্যু কার্যত কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর মৃত্যুতে গায়ক রাঘব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে এই ঘটনায় কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। গত সন্ধ্যায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর এবং আজ সকালে বাপ্পি লাহিড়ির এই খবরে তিনি শোকাহত। বাপ্পি লাহিড়ির সঙ্গে তাঁর গানের অ্যালবামে একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও তিনি বলেন যে ভারতের সঙ্গীত জগতে পশ্চিমী মিউজিককে অন্যরকম ভাবে কাজ লাগিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। তাঁর মৃত্যু এক অকল্পনীয় ক্ষতি বলে জানিয়েছেন তিনি। 


আরও পড়ুন: Mirza Ghalib: মৃত্যুর বাসনা নিয়ে বেঁচে থাকাই লেখা এ কবির ভাগ্যে!


সুরকার শান্তনু মৈত্র বাপ্পি লাহিড়ির ব্যক্তিগত জীবনের কথা তুলে ধরে বলেন যে তিনি একজন খুবই আন্তরিক মানুষ ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে গান সম্পর্কে আলাপ আলোচনা তাদের যুগের বহু গায়ক এবং সুরকারকে সমৃদ্ধ করেছে বলে জানান তিনি। শুধু ডিস্কো নয়, তাঁর গানে মেলোডিরও ছোঁয়া ছিল বলে জানিয়েছেন শান্তনু।    


 



তাঁর মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করে টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি লিখেছেন, "কিংবদন্তি গায়ক এবং সুরকার বাপ্পি লাহিড়ি জি-র মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরে আমি বেদনাহত। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। বাপ্পিদা তাঁর বহুমুখী গান এবং প্রাণবন্ত প্রকৃতির জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর পরিবার ও ভক্তদের প্রতি আমার সমবেদনা। ওম শান্তি।"


সুরকার জিৎ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, "সঙ্গীত জগতে পর পর নক্ষত্র পতন। কালকে সন্ধ্যাদি আজ বাপ্পিদা। বলার মতন কোনও ভাষা নেই। পরিবারের সদস্যকে হারালে যেরকম অনুভুতি হয় সেরকমই মনে হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন যে বাপ্পি লাহিড়ির গানের ভাষায় বলতে গেলে তাঁকে কখনও 'অলবিদা' বলতে পারবেন না তিনি।    


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)