নিজস্ব প্রতিবেদন : ২০২০র-শেষ। পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছর (২০২১) কে স্বাগত জানাতে তৈরি গোটা বিশ্ব। ফের একবার নতুন করে সবকিছু শুরু করার পালা। শুধুই খারাপ বললে হয়তবা একটু ভুল হয়ে যায়, বলা ভালো, ২০২০ প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। তবে হ্যাঁ, এই অভিজ্ঞতার বেশিরভাগটাই খারাপ। অনেকেই তাই কটাক্ষ করে বলেছেন 'এই বছরটা যেন বিশে বিষ'। এই বছরে বহু ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। ২০২০, করোনা আর লকডাউন এক ধাক্কায় বদলে দিয়েছে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চেহারা। এবছর বাংলা বিনোদন দুনিয়া বহু অভিজ্ঞতার সাক্ষী। ২০২১এ পা রাখার মুহূর্তে কেউই হয়তবা ঘৃণ্য এই বছর ২০২০র দিকে ফিরে তাকাতেও চায় না। তবুও পুরনো থেকেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেই পথ চলতে হয় বৈকি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সিনেমা হল


ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, সিনেমার কথা বললে, প্রথমেই চোখে ভেসে ওঠে বড় পর্দার কথা। আর ২০২০-র আমাদের কাছে সেই পর্দাকেই কেড়ে নিয়েছে। বছর শুরুর পর ২-৩ মাস কাটতে না কাটতেই হঠাৎ করেই লকডাউন। ওমনি ঝপ করে বন্ধ সিনেমা হলের দরজা। সিনেমা হলকে ভুলে মানুষ চোখ রেখেছে OTT-র ছোট পর্দাতেই। লকডাউনেই হয়ত মানুষ সবথেকে বেশি সিনেমা দেখেছে, তবে এই লকডাউনই সঙ্কটে ফেলেছে বড় পর্দার ভবিষ্যতকে। লকডাউনে পরবর্তীতে ক্ষতি সামাল দিতে না পেরে বন্ধ হয়েছে বহু সিঙ্গল স্ক্রিন। মাল্টিপ্লেক্স খুললেও সেগুলি ধুঁকছে।



সিনেমা


২০২০-তে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল বহু বাংলা ছবির। লকডাউন সেই সব পরিকল্পনাই ভেস্তে দিয়েছে। লকডাউনে শুরুর দিকে উইনডোজ প্রোডাকশনের অন্যতম আলোচিত ছবি 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি' মুক্তি পেয়েও লকডাউনের কারণে তা বেশিদিন হলে চালানো সম্ভব হয়নি। মুক্তি পিছিয়ে যায়, সুরিন্দর ফিল্মসের 'রক্ত রহস্য', 'সুইজারল্যান্ড', 'ড্রাকুলা স্যার' সহ একাধিক ছবির। পরবর্তীকালে ছবিগুলি মুক্তি পেলেও ক্ষতি হয়েছে ছবির ব্যবসায়। যদিও এক্ষেত্রে 'ড্রাকুলা স্যার' অবশ্য তুলনামূলকভাবে কিছুটা ভালো ব্যবসা করে। অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রেখে বহু বিগ বাজেটের ছবির মুক্তি এখনও আটকে রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম 'হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী'। তবে বছর শুরুর দিকে কিছু ভালো ছবিও আমাদের উপহার দিয়েছিল এই বছরটি। যেগুলির কথা ভুলে গেলে অবশ্য অন্যায় হয়। যার মধ্যে রয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত অনীক দত্তের 'বরুণবাবুর বন্ধু', সৃজিত মুখোপাধ্যায় অভিনীত 'দ্বিতীয় পুরুষ', প্রথমবার টিভি পর্দায় মুক্তি পাওয়া কোনও বংলা ছবি হিসাবে মন কাড়ে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীর 'নিরন্তর'।



OTT


লকডাউনে দর্শকদের বিনোদনের অন্যতম ভরসা ছিল ওয়েব দুনিয়া। দর্শকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আসে বেশকিছু ওয়েব ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজ। যার মধ্যে দর্শকদের মন কাড়তে সফল হয় স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অভিনীত ওয়েব ফিল্ম 'তাসের ঘর'। যেটি মুক্তি পেয়েছিল OTT প্লার্টফর্ম 'হইচই'তে। এছাড়া বেশকিছু বাংলা ওয়েব সিরিজ দর্শকদের প্রশংসা কুড়োয়। যার মধ্যে 'তানসেনের তানপুরা', 'ফেলুদা ফেরত', 'চরিত্রহীন-৩' উল্লেখযোগ্য।



স্বজনপোষণ বিতর্ক


লকডাউন চলাকালীন সুশান্ত মৃত্যুর প্রসঙ্গ ধরে বলিউডে মাথাচাড়া দিয়েছিল স্বজনপোষণ বিতর্ক। যে আঁচ লাগে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও। শ্রীলেখা মিত্রের তোলা অভিযোগের ভিত্তিতে সরগরম হয় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। শ্রীলেখার কথার প্রসঙ্গ ধরে Zee ২৪ ঘণ্টায় নিজেদের মতামত জানান শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, সুদীপা চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি Zee ২৪ ঘণ্টার পর্দায় প্রথমবার মুখ খোলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর মত তারকারাও। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মত প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল স্বস্তিকাকেও।



মৃত্যু


২০২০-আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে একাধিক কিংবন্তীকে। বাংলার মানুষ হারিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মত অভিনেতাকে। আমরা হারিয়েছি মনু মুখোপাধ্যায়, সন্তু মুখোপাধ্যায়, তাপস পালের মত অভিনেতাকেও। সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে পরিচালক দেবীদাস ভট্টাচার্য। ২০২০-র ২৪ জুলাই আমরা হারিয়ে ফেলি খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী অমলা শঙ্করকেও।




খারাপ অভিজ্ঞতা আর অল্প কিছু ভালোর স্মৃতি, একই সঙ্গে অনেককিছু শিখিয়ে আমাদের থেকে বিদায় নিতে চলেছে ২০২০। পুরনো কথা মনে রেখেই ২০২১এ ফের নতুন করে পথ চলার পথে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।